Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন কাকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

পাকিস্তানের ৮ম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন দেশটির বেলুচিস্তান প্রদেশের সাবেক সিনেটর আনোয়ার-উল-হক কাকার। সোমবার (১৪ আগস্ট) ইসলামাবাদের আইওয়ান-ই-সদরে দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির কাছে শপথ গ্রহণ করেন তিনি।

শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেনাপ্রধান (সিওএএস) অসীম মুনির, জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল নাদিম রাজা, নৌপ্রধান অ্যাডমিরাল আমজাদ খান নিয়াজি, ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আঞ্জুম এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পরিষদের সাবেক স্পিকার রাজা পারভেজ আশরাফ, সিনেটের চেয়ারম্যান সাদিক সানজরানি, সিন্ধুর গভর্নর কামরান তেসোরি, পাঞ্জাবের গভর্নর বালিঘুর রহমান, খাইবার পাখতুনখোয়া গভর্নর হাজি গুলাম আলি, পিটিআই সিনেটর শাহজাদ ওয়াসিম এবং পিপিপি নেতা কারিম কুন্ডি।

শপথ নেওয়ার পর সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গেও দেখা করেন কাকার। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাকে দেওয়া হয় গার্ড অব অনারও।

অন্তর্র্বতীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাকারের প্রথম কাজ হবে নির্বাচনের সময়কালে দেশ পরিচালনার জন্য একটি মন্ত্রিসভা নির্বাচন করা।

রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতায় জর্জরিত পাকিস্তানে দায়িত্ব নেওয়ার পর কাকারের প্রথম কাজ হবে একটি অন্তর্র্বতীকালীন মন্ত্রিসভা তৈরি করা। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে গত সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও জাতীয় পরিষদের বিদায়ী বিরোধীদলীয় নেতা রাজা রিয়াজের মধ্যে সমঝতার ভিত্তিতে গত ১২ আগস্ট পাকিস্তানের অন্তর্র্বতীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশটির সংসদের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য আনোয়ারুল হক কাকারকে মনোনীত করা। তিনি ২০১৮ সালে বেলুচিস্তান থেকে একজন স্বতন্ত্র সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

রোববার এক বিবৃতিতে দেশটির আগামী নির্বাচন কাকার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করবেন বলে আশাপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, কাকারের প্রতি সব পক্ষের আস্থা তাদের প্রধানমন্ত্রী বাছাই করার কাজ যে সঠিক ছিল, সেটি প্রমাণ করেছে। কারণ দেশের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী একজন শিক্ষিত এবং দেশপ্রেমিক নাগরিক।

এর আগে, মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার তিন দিন আগে (৯ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের পরামর্শে পাকিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ (এনএ) ভেঙে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার তিন দিনের মধ্যে দেশটির অন্তর্র্বতীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ার-উল-হক কাকারের নাম ঘোষণা করা হয়। তার নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশটির আগামী সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করবে।

পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের সাবেক একজন কর্মকর্তার মতে, ২৪ কোটি ১০ লাখ মানুষের দেশটির শত শত ফেডারেল ও প্রাদেশিক নির্বাচনী আসনে নতুন সীমানা নির্ধারণে ছয় মাস বা তারও বেশি সময় লাগতে পারে।

তবে কাকারে সামনে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক হাসান আসকারি রিজভী সপ্তাহান্তে এএফপি’কে বলেছেন, কাকারের একটি সীমিত রাজনৈতিক ক্যারিয়ার রয়েছে এবং পাকিস্তানের রাজনীতিতে খুব বেশি প্রভাব নেই তার। তবে এটি একটি সুবিধা হতে পারে। কারণ, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তার কোন দৃঢ় সম্পর্ক নেই।

রিজভী আরও বলেন, কাকারের অসুবিধা হল প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ না হওয়ার কারণে, তিনি সামরিক সংস্থার সক্রিয় সমর্থন ছাড়া যে সমস্যার মুখোমুখি হতে চলেছেন তা মোকাবেলা করা তার জন্য কঠিন হতে পারে।

সহকর্মী বিশ্লেষক আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, কাকার ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটিতে কোর্স করেছেন- যা পূর্বে সামরিক ওয়ার কলেজ ছিল।

এর আগে পাকিস্তানের জনশুমারি-২০২৩ অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে দেরি হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল ডন। বিদায়ী সরকার বলেছে, নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্বিন্যাসের জন্য সময় প্রয়োজন। এছাড়াও নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের সম্মুখীন একটি দেশকে স্থিতিশীল করার জন্য প্রচেষ্টা চলছে। এ কারণেও নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়া

বদলির চিঠি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলায় ৮ কর কর্মকর্তা বরখাস্ত

তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন কাকার

প্রকাশের সময় : ০৯:৩৭:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

পাকিস্তানের ৮ম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন দেশটির বেলুচিস্তান প্রদেশের সাবেক সিনেটর আনোয়ার-উল-হক কাকার। সোমবার (১৪ আগস্ট) ইসলামাবাদের আইওয়ান-ই-সদরে দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির কাছে শপথ গ্রহণ করেন তিনি।

শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেনাপ্রধান (সিওএএস) অসীম মুনির, জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল নাদিম রাজা, নৌপ্রধান অ্যাডমিরাল আমজাদ খান নিয়াজি, ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আঞ্জুম এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পরিষদের সাবেক স্পিকার রাজা পারভেজ আশরাফ, সিনেটের চেয়ারম্যান সাদিক সানজরানি, সিন্ধুর গভর্নর কামরান তেসোরি, পাঞ্জাবের গভর্নর বালিঘুর রহমান, খাইবার পাখতুনখোয়া গভর্নর হাজি গুলাম আলি, পিটিআই সিনেটর শাহজাদ ওয়াসিম এবং পিপিপি নেতা কারিম কুন্ডি।

শপথ নেওয়ার পর সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গেও দেখা করেন কাকার। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাকে দেওয়া হয় গার্ড অব অনারও।

অন্তর্র্বতীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাকারের প্রথম কাজ হবে নির্বাচনের সময়কালে দেশ পরিচালনার জন্য একটি মন্ত্রিসভা নির্বাচন করা।

রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতায় জর্জরিত পাকিস্তানে দায়িত্ব নেওয়ার পর কাকারের প্রথম কাজ হবে একটি অন্তর্র্বতীকালীন মন্ত্রিসভা তৈরি করা। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে গত সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও জাতীয় পরিষদের বিদায়ী বিরোধীদলীয় নেতা রাজা রিয়াজের মধ্যে সমঝতার ভিত্তিতে গত ১২ আগস্ট পাকিস্তানের অন্তর্র্বতীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশটির সংসদের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য আনোয়ারুল হক কাকারকে মনোনীত করা। তিনি ২০১৮ সালে বেলুচিস্তান থেকে একজন স্বতন্ত্র সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

রোববার এক বিবৃতিতে দেশটির আগামী নির্বাচন কাকার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করবেন বলে আশাপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, কাকারের প্রতি সব পক্ষের আস্থা তাদের প্রধানমন্ত্রী বাছাই করার কাজ যে সঠিক ছিল, সেটি প্রমাণ করেছে। কারণ দেশের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী একজন শিক্ষিত এবং দেশপ্রেমিক নাগরিক।

এর আগে, মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার তিন দিন আগে (৯ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের পরামর্শে পাকিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ (এনএ) ভেঙে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার তিন দিনের মধ্যে দেশটির অন্তর্র্বতীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ার-উল-হক কাকারের নাম ঘোষণা করা হয়। তার নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশটির আগামী সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করবে।

পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের সাবেক একজন কর্মকর্তার মতে, ২৪ কোটি ১০ লাখ মানুষের দেশটির শত শত ফেডারেল ও প্রাদেশিক নির্বাচনী আসনে নতুন সীমানা নির্ধারণে ছয় মাস বা তারও বেশি সময় লাগতে পারে।

তবে কাকারে সামনে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক হাসান আসকারি রিজভী সপ্তাহান্তে এএফপি’কে বলেছেন, কাকারের একটি সীমিত রাজনৈতিক ক্যারিয়ার রয়েছে এবং পাকিস্তানের রাজনীতিতে খুব বেশি প্রভাব নেই তার। তবে এটি একটি সুবিধা হতে পারে। কারণ, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তার কোন দৃঢ় সম্পর্ক নেই।

রিজভী আরও বলেন, কাকারের অসুবিধা হল প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ না হওয়ার কারণে, তিনি সামরিক সংস্থার সক্রিয় সমর্থন ছাড়া যে সমস্যার মুখোমুখি হতে চলেছেন তা মোকাবেলা করা তার জন্য কঠিন হতে পারে।

সহকর্মী বিশ্লেষক আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, কাকার ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটিতে কোর্স করেছেন- যা পূর্বে সামরিক ওয়ার কলেজ ছিল।

এর আগে পাকিস্তানের জনশুমারি-২০২৩ অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে দেরি হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল ডন। বিদায়ী সরকার বলেছে, নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্বিন্যাসের জন্য সময় প্রয়োজন। এছাড়াও নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের সম্মুখীন একটি দেশকে স্থিতিশীল করার জন্য প্রচেষ্টা চলছে। এ কারণেও নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।