জামালপুর জেলা প্রতিনিধি :
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে স্ত্রী তালাক দেয়ায় অভিমানে সানোয়ার হোসেন হায়দার (৩৫) নামে এক এলজিইডির কার্য-সহকারী ট্রেনের নিচে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে সরিষাবাড়ি রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ভূয়াপুর যাচ্ছিল।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় মরদেহটি উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ। সরিষাবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. আসাদুজ্জামান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
সানোয়ার হায়দার সরিষাবাড়ী উপজেলা এলজিইডির বন্যা প্রকল্পের কার্য সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার নয়াটোলা জমিলা লেন এলাকার আব্দুল হামিদের ছেলে।
তিনি সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের অধীনে আউট-সোর্সিং পদ্ধতিতে এডিবি’র জরুরী সহায়তায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্প (এলকেএসএস-এইচআরসি) এর আওতায় কার্য-সহকারী পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন।
নিহতের সহকর্মী ও স্থানীয়রা জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে স্ত্রীর সঙ্গে সানোয়ারের দাম্পত্য কলহ চলছিল। ৭-৮ দিন আগে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এ ঘটনার পর থেকেই তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। বৃহস্পতিবার সানোয়ার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রেললাইনের পাশ দিয়ে রাস্তায় হাটছিলেন। এসময় চট্টগ্রাম থেকে ভুয়াপুরগামী ৩৭ আপ মেইল ট্রেন আসলে হঠাৎ দৌঁড়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। ঘটনাস্থলেই কাটা পড়ে তার মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী রেলওয়ে নিরাপত্তা ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশিষ চন্দ্র দে বলেন, সকালে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে এলজিইডি অফিসের এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করে। পরে মরদেহ উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার পরিবারের লোকদের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
সরিষাবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, লোক মুখে শুনেছি লোকটি এক নম্বর রেললাইনের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো। যখন ৩৭ আপ ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস লোকাল ট্রেনটি স্টেশনে প্রবেশ করে কিছু দুরে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন। এতে তার শরীর দ্বি-খণ্ডিত হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে।
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, অফিসের কার্য সহকারী সানোয়ার হায়দার ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শুনেছি কয়েকদিন আগে দাম্পত্য কলহের কারণে তার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছে। তার পরিবারের কাছে সংবাদ দেওয়া হয়েছে। সানোয়ার গত দুই বছর থেকে উপজেলা বন্যা প্রকল্পের কার্যসহকারী হিসেবে এখানে কর্মরত ছিলেন।
জামালপুর রেলওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, ট্রেনে কাটা পড়ে সানোয়ার নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মরদেহের খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করে তার পরিবারকে জানানো হয়েছে। কোনো অভিযোগ না থাকলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।