আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
চীনে একটি কয়লা খনিতে ভয়াবহ আগুন লেগে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা ১০ মিনিটে দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শানজিয়াওশুতে দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
এদিকে এই ঘটনায় পানঝৌ শহরের সমস্ত কয়লা খনি একদিনের জন্য উৎপাদন স্থগিত করেছে। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং এএফপি।
এএফপির খবরে বলা হয়েছে, খনিটি রাজধানী বেইজিং থেকে প্রায় তিন হাজার ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত।
পানঝৌ সিটি সরকার রোববার রাতে তাদের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কনভেয়ার বেল্টে আগুন লেগেছিল বলে প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে এবং আগুনের ফলে ১৬ জন পুরোপুরি দগ্ধ হয়েছেন। তাদেরকে শনাক্ত করার মতো কোনো অবস্থা ছিল না। কনভেয়ার বেল্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
সাংহাই-ভিত্তিক কমোডিটিস কনসালটেন্সি মিস্টিল অনুসারে, পানঝৌ শহরের সমস্ত কয়লা খনি একদিনের জন্য তাদের উৎপাদন কর্মকাণ্ড স্থগিত করেছে। অবশ্য গুইঝোয়ের খনি নিরাপত্তা প্রশাসন রয়টার্সকে বলেছে, তাদের কাছে পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনও তথ্য নেই।
খবরে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলটির প্রতি বছর প্রায় ৫২ দশমিক ৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে যার বেশিরভাগই কোকিং কয়লা।দুর্ঘটনার পর পাঞ্জিয়াং কয়লা নামেও পরিচিত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এই কোম্পানি তার সমস্ত খনিতে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছে এবং নিরাপদ উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে।
সাম্প্রতিক দশকগুলোতে চীনে খনির ক্ষেত্রে নিরাপত্তার উন্নতি হয়েছে। তবে দুর্ঘটনার খবরে এখনো প্রায়ই এ শিল্পের নাম উঠে আসে। আগে খনি দুর্ঘটনার অনেক খবরই দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হতো না।
ফেব্রুয়ারিতে উত্তরাঞ্চলীয় অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে একটি কয়লাখনি ধসে কয়েক ডজন মানুষ ও যানবাহন ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে। কর্তৃপক্ষ কয়েক মাস ধরে মৃত্যুর পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি। শুধু জুনে ৫৩ জন নিহত হয়েছে বলে প্রকাশ করেছে।
এর আগে গত ডিসেম্বরে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জিনজিয়াং প্রদেশের একটি সোনার খনিতে দুর্ঘটনা ঘটে। ওই সময় খনি ধসের ঘটনায় সেখানে কর্মরত অন্তত ৪০ জন চাপা পড়েন।
এছাড়া ২০২১ সালে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শানজি প্রদেশে একটি কয়লা খনিতে আকস্মিক বন্যায় দেড় ডজনের বেশি শ্রমিক আটকা পড়েন। তাদের মধ্যে অন্তত দু’জনের প্রাণহানি ঘটে এবং বাকিদের উদ্ধার করা হয়।