Dhaka বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চার বছরেও শেষ হয়নি সেতু নির্মাণ কাজ, ভোগান্তিতে দুই উপজেলার সহস্রাধিক মানুষ

পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি  : 

পিরোজপুর ও বরগুনা জেলার সিমান্তবর্তী উপজেলা মঠবাড়িয়া ও পাথরঘাটা। নকশা জটিলতায় এই দুই উপজেলার পাশে বয়ে যাওয়া হলতা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ চার বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে দুই উপজেলার সহস্রাধিক মানুষ।

জানা যায়, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া ও পার্শ্ববর্তী বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হলতা সেতু। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে জয়েন্ট ভেঞ্চারে আবির এন্ড সরদার নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুই কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে কাজটি পায়। কিন্তু কাজ না করায় ২০২১ সালে পুনরায় রিটেন্ডারে তহিদুল বাশার কবির নামক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়।

সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হলেও ৪ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে কাজ। নদীর দুই তীরে কেবল দুটি অ্যাবাটমেন্ট ছাড়া করা হয়নি কোনো কাজ। নির্মাণাধীন সেতুর পাশে সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে দুই উপজেলার ৮-১০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। সেতুটির উভয় পাশে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সেতু দিয়ে পারাপার হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা।

মঠবাড়িয়া উপজেলার নলী জয়নগর এলাকার বাসিন্দা শরীফ হাওলাদার বলেন, ৬-৭ বছর ধরে আমরা ঝুঁকি নিয়ে কাঠের পোল দিয়ে চলাফেরা করছি। কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করতে না পারায় হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি এখন চরমে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত চলাফেরা করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন। বিশেষ করে বর্ষার সময় এ ভোগান্তি কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

পার্শ্ববর্তী বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া এলাকার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম বলেন, সেতুটি থাকলে দুই উপজেলার মানুষের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে যোগাযোগ করতে সময় লাগতো ৫ থেকে ১০ মিনিট। কিন্তু ব্রিজটি না থাকার কারণে যানবাহন নিয়ে যেতে হলে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে। যার ফলে এই এলাকার হাজার হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে চরম কষ্টের মধ্যে জীবনযাপন করছেন। আমরা চাচ্ছি দ্রুত ব্রিজের কাজ শেষ করে দুই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করা হোক।

তবে মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. জিয়ারুল ইসলাম জানান, নকশা জটিলতা ও দরপত্রের নির্ধারিত মূল্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে অনিহা প্রকাশ করলে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পুনরায় দরপত্র আহবান করে নতুন ঠিকাদারকে কাজ দেয়া হলেও তারা কাজটি বন্ধ রেখেছে। ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুনরায় কাজ শুরুর করার চেষ্টা চলছে।

৩৯ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুটি ২০২১ সালে রিটেন্ডারে তিন কোটি ১৯ লাখ ৫৩ হাজার টাকায় তহিদুল বাশার কবির নামক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চার বছরেও শেষ হয়নি সেতু নির্মাণ কাজ, ভোগান্তিতে দুই উপজেলার সহস্রাধিক মানুষ

প্রকাশের সময় : ০৩:২৪:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫

পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি  : 

পিরোজপুর ও বরগুনা জেলার সিমান্তবর্তী উপজেলা মঠবাড়িয়া ও পাথরঘাটা। নকশা জটিলতায় এই দুই উপজেলার পাশে বয়ে যাওয়া হলতা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ চার বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে দুই উপজেলার সহস্রাধিক মানুষ।

জানা যায়, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া ও পার্শ্ববর্তী বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হলতা সেতু। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে জয়েন্ট ভেঞ্চারে আবির এন্ড সরদার নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুই কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে কাজটি পায়। কিন্তু কাজ না করায় ২০২১ সালে পুনরায় রিটেন্ডারে তহিদুল বাশার কবির নামক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়।

সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হলেও ৪ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে কাজ। নদীর দুই তীরে কেবল দুটি অ্যাবাটমেন্ট ছাড়া করা হয়নি কোনো কাজ। নির্মাণাধীন সেতুর পাশে সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে দুই উপজেলার ৮-১০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। সেতুটির উভয় পাশে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সেতু দিয়ে পারাপার হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা।

মঠবাড়িয়া উপজেলার নলী জয়নগর এলাকার বাসিন্দা শরীফ হাওলাদার বলেন, ৬-৭ বছর ধরে আমরা ঝুঁকি নিয়ে কাঠের পোল দিয়ে চলাফেরা করছি। কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করতে না পারায় হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি এখন চরমে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত চলাফেরা করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন। বিশেষ করে বর্ষার সময় এ ভোগান্তি কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

পার্শ্ববর্তী বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া এলাকার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম বলেন, সেতুটি থাকলে দুই উপজেলার মানুষের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে যোগাযোগ করতে সময় লাগতো ৫ থেকে ১০ মিনিট। কিন্তু ব্রিজটি না থাকার কারণে যানবাহন নিয়ে যেতে হলে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে। যার ফলে এই এলাকার হাজার হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে চরম কষ্টের মধ্যে জীবনযাপন করছেন। আমরা চাচ্ছি দ্রুত ব্রিজের কাজ শেষ করে দুই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করা হোক।

তবে মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. জিয়ারুল ইসলাম জানান, নকশা জটিলতা ও দরপত্রের নির্ধারিত মূল্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে অনিহা প্রকাশ করলে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পুনরায় দরপত্র আহবান করে নতুন ঠিকাদারকে কাজ দেয়া হলেও তারা কাজটি বন্ধ রেখেছে। ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুনরায় কাজ শুরুর করার চেষ্টা চলছে।

৩৯ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুটি ২০২১ সালে রিটেন্ডারে তিন কোটি ১৯ লাখ ৫৩ হাজার টাকায় তহিদুল বাশার কবির নামক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়।