চবি প্রতিনিধি :
আয়তনে বৃহত্তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) যাতায়াতে ভোগান্তি কমাতে এবং আধুনিক যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে চালু হয়েছে পরিবেশ বান্ধব ই-কার বা ইলেকট্রনিক গলফ কার। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা স্থানীয় সিএনজি অটোরিকশা চালকদের সিন্ডিকেট দূর হবে বলে প্রত্যাশা শিক্ষার্থীদের।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকাল দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরোপয়েন্টে ই- কারের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড ইয়াহ্ইয়া আখতার।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চবি উপ উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দীন খান, উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রমতে, মা এন্টার প্রাইজ ও গ্রীন ফিউচার বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে নো প্রফিট নো লস চুক্তিতে ৬টি ই-কারের মাধ্যমে চালু হয়েছে এই প্রকল্প। শিক্ষার্থীদের সেবার কার্যকারিতা অনুযায়ী ভবিষ্যতে গাড়ির সংখ্যা ধাপে ধাপে ৪০টিরও বেশি হবে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।
চবি উপাচার্য অধ্যাপক ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, আজকে আমরা ই-কারের উদ্বোধন ঘোষণা করছি। আমি বিনীতভাবে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করছি তারা যেন ই-কার ব্যবহার করে ক্লাসে ঠিক সময়মতো আসে। আমি আরেকটা অনুরোধ করতে চাই যারা এই ই-কার চালাবেন, তারা আমাদের সম্মানিত ড্রাইভার। তারা লোকাল হোক আর যেই হোক তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা যেন সদয় আচরণ করে এবং ড্রাইভার সাহেবরাও যেন শিক্ষার্থীদের নিজের সন্তান, ছোট ভাই-বোনের মতন মনে করে। সবাই যেন সুবিধা নিতে পারে সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।
পরিচালিত রুট:
ই-কার পরীক্ষামূলকভাবে ৩টি রুটে চলবে। প্রথম রুটটি জিরো পয়েন্ট থেকে বায়োলোজিকাল ফ্যাকাল্টি, দ্বিতীয় রুট ল ফ্যাকাল্টি থেকে ২ং গেট হয়ে শহীদ মিনার ও শহীদ ফরহাদ হল থেকে শহীদ মিনার হয়ে জিরো পয়েন্ট রুটে চলাচল করবে তৃতীয়টি।
ভাড়া ও সুবিধা:
শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বনিম্ন ৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৫ টাকা। গাড়ির চালক এবং ভাড়া সংগ্রাহক থাকবেন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিয়োজিত। এবং শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী পরবর্তীতে ভাড়া কম বেশি হতে পারে।
শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া:
ইসলামের ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ইউনুছ মিয়া অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এবং আয়োতনে বড় হওয়ায় যানবাহনের সংকট ছিল। এখানে সিএনজি অটোরিকশা ওয়ালাদের একটা সিন্ডিকেট কাজ করত। ক্যাম্পাসে নতুন কেউ এলে তাদের কাছে উচ্চ ভাড়া নেওয়া হত। এখন এই সিন্ডিকেট থেকে মুক্তি পাবেন শিক্ষার্থীরা। তাছাড়া ই-কার পরিবেশের ক্ষতি করে না, আবার সহজেই ক্যাম্পাসে চলাচল করা যায়। তবে আমাদের প্রত্যাশা, সংখ্যা আরও বাড়ানো হয়, যেন সব শিক্ষার্থী এ সুবিধা পায়।’
সমাজতত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রহিম বলেন, আমরা আগে ক্যাম্পাসের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে সিএনজি বা অটোরিকশার ওপর নির্ভর করতাম। অনেক সময় বাড়তি ভাড়া দিতে হতো। সিএনজি অটোরিকশা ওয়ালারা সুযোগ নিত। ই-কার চালু হওয়ায় এখন কম খরচে ও পরিবেশবান্ধবভাবে যাতায়াত করা যাচ্ছে। এতে আমাদের ভোগান্তি অনেকটাই কমবে।’