Dhaka মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গত ১৬-১৭ বছর শেখ হাসিনা দেশে ফেরাউনের রাজত্ব কায়েম করেছিল : রিজভী

মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

হাসিনা সরকারে আমলে কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত ১৬-১৭ বছর শেখ হাসিনা দেশে ফেরাউনের রাজত্ব কায়েম করেছিল। মিছিল বের করলে পুলিশ শটগান দিয়ে গুলি করতো। ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিলে পুলিশ বাড়ি থেকে মানুষকে ধরে নিয়ে জেলে পাঠাতো। প্রতিবাদ করলেই মামলা, নিপীড়ন আর গুম হতে হতো।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাত ৭টার দিকে শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী ও জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের এক যুগপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের ১৭ বছরের দুঃসময়ে সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে। শিক্ষা তো মানুষকে নৈতিকভাবে উন্নতি করে। মানুষের চরিত্রকে শক্তিশালী করে। কিন্তু শেখ হাসিনার আমলে শুধু প্রশ্ন ফাঁস যেন একটা সংস্কৃতি বা কালচারে পরিণত হয়েছিল। কারণ উনি চাননি দেশের মানুষ উন্নত হোক। নৈতিকভাবে গড়ে উঠুক। যার ফলশ্রুতি হয়েছে ভয়াবহ।

শেখ হাসিনার শাসনামলে শিক্ষাব্যবস্থায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা দেশকে করেছিল জ্ঞানশূন্য। সর্বত্রই প্রশ্নপত্র ফাঁসের সংস্কৃতি চালু করেছিল। না লিখলেও পাস করিয়ে দেওয়া হতো। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে ফেলেছে। এর থেকে উন্নতি ঘটাতে হলে দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশে কোনো শিক্ষা ব্যবস্থা ভালো ছিল না। যখন রাষ্ট্র এবং সমাজে নৈতিকতার ধ্বস নামে তখন সর্বত্র সেটা প্রসারিত হয়, পুরোটাই ছেয়ে যায়। আমরা সেটাই দেখেছি শেখ হাসিনার আমলে। শুধু বাপজান আর ভাই বোনের নাম ছাড়া যেন কোনো ইতিহাস নেই, শিক্ষা নেই। এভাবে জোর করে এক ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের রাষ্ট্র কায়েম করেছিল।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ কামালের নামে তো ব্যাংক ডাকাতির অভিযোগ আছে। আপনি তো সে বিষয়ে জনগণের কাছে পরিস্কার করেননি। আপনার পরিবারের মধ্যে তো সৎ মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। ইংল্যান্ডে যে আপনার ভাগ্নি এমপি হয়েছে, সেখানে প্রতি পদে পদে সততা এবং জবাবদিহিতা রয়েছে। আপনি তাকেও এবং তার ছোট বোন রুপন্তিকেও আপনার ব্যবসায়ীদের দ্বারা ফ্লাট কিনে দিয়েছেন। এইতো হচ্ছে আপনার বৈশিষ্ট্য। আপনার আমলে কোথায় পাঠাগার হবে, কোথায় গন্থাগার হবে, কোথায় ভালো স্কুল হবে। আপনার আমলে তো শুধু মেগা প্রজেক্ট দেখিয়ে টাকা মারার ধান্দা ছিল। দেশের হাসপাতাল আর শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। গোটা জাতিকে জ্ঞানশূন্য অন্ধকারে ফেলে দিয়েছেন।

বর্তমান সরকার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, সংস্কার করুন ভালো কথা। সবজি ছাড়া অন্য সব কিছুর দাম নাগালের বাইরে। শুধুমাত্র চালের দাম নিয়ন্ত্রণ না করতে পারায় শেখ মুজিবের পতন হয়েছিল। প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করুন। পুলিশ প্রশাসনের বেশি সংস্কার প্রয়োজন। এখনও দেশে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা ঘাপটি মেরে আছে। কাজেই সংস্কারে বিলম্ব হলে তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় মানিকগঞ্জ জিয়া স্মৃতি পাঠাগার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খানম রিতা, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপ’র সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর গোলাম হাফিজ কেনেডি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বক্তব্য রাখেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

গত ১৬-১৭ বছর শেখ হাসিনা দেশে ফেরাউনের রাজত্ব কায়েম করেছিল : রিজভী

প্রকাশের সময় : ০২:৪৯:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

হাসিনা সরকারে আমলে কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত ১৬-১৭ বছর শেখ হাসিনা দেশে ফেরাউনের রাজত্ব কায়েম করেছিল। মিছিল বের করলে পুলিশ শটগান দিয়ে গুলি করতো। ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিলে পুলিশ বাড়ি থেকে মানুষকে ধরে নিয়ে জেলে পাঠাতো। প্রতিবাদ করলেই মামলা, নিপীড়ন আর গুম হতে হতো।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাত ৭টার দিকে শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী ও জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের এক যুগপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের ১৭ বছরের দুঃসময়ে সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে। শিক্ষা তো মানুষকে নৈতিকভাবে উন্নতি করে। মানুষের চরিত্রকে শক্তিশালী করে। কিন্তু শেখ হাসিনার আমলে শুধু প্রশ্ন ফাঁস যেন একটা সংস্কৃতি বা কালচারে পরিণত হয়েছিল। কারণ উনি চাননি দেশের মানুষ উন্নত হোক। নৈতিকভাবে গড়ে উঠুক। যার ফলশ্রুতি হয়েছে ভয়াবহ।

শেখ হাসিনার শাসনামলে শিক্ষাব্যবস্থায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা দেশকে করেছিল জ্ঞানশূন্য। সর্বত্রই প্রশ্নপত্র ফাঁসের সংস্কৃতি চালু করেছিল। না লিখলেও পাস করিয়ে দেওয়া হতো। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে ফেলেছে। এর থেকে উন্নতি ঘটাতে হলে দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশে কোনো শিক্ষা ব্যবস্থা ভালো ছিল না। যখন রাষ্ট্র এবং সমাজে নৈতিকতার ধ্বস নামে তখন সর্বত্র সেটা প্রসারিত হয়, পুরোটাই ছেয়ে যায়। আমরা সেটাই দেখেছি শেখ হাসিনার আমলে। শুধু বাপজান আর ভাই বোনের নাম ছাড়া যেন কোনো ইতিহাস নেই, শিক্ষা নেই। এভাবে জোর করে এক ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের রাষ্ট্র কায়েম করেছিল।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ কামালের নামে তো ব্যাংক ডাকাতির অভিযোগ আছে। আপনি তো সে বিষয়ে জনগণের কাছে পরিস্কার করেননি। আপনার পরিবারের মধ্যে তো সৎ মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। ইংল্যান্ডে যে আপনার ভাগ্নি এমপি হয়েছে, সেখানে প্রতি পদে পদে সততা এবং জবাবদিহিতা রয়েছে। আপনি তাকেও এবং তার ছোট বোন রুপন্তিকেও আপনার ব্যবসায়ীদের দ্বারা ফ্লাট কিনে দিয়েছেন। এইতো হচ্ছে আপনার বৈশিষ্ট্য। আপনার আমলে কোথায় পাঠাগার হবে, কোথায় গন্থাগার হবে, কোথায় ভালো স্কুল হবে। আপনার আমলে তো শুধু মেগা প্রজেক্ট দেখিয়ে টাকা মারার ধান্দা ছিল। দেশের হাসপাতাল আর শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। গোটা জাতিকে জ্ঞানশূন্য অন্ধকারে ফেলে দিয়েছেন।

বর্তমান সরকার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, সংস্কার করুন ভালো কথা। সবজি ছাড়া অন্য সব কিছুর দাম নাগালের বাইরে। শুধুমাত্র চালের দাম নিয়ন্ত্রণ না করতে পারায় শেখ মুজিবের পতন হয়েছিল। প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করুন। পুলিশ প্রশাসনের বেশি সংস্কার প্রয়োজন। এখনও দেশে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা ঘাপটি মেরে আছে। কাজেই সংস্কারে বিলম্ব হলে তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় মানিকগঞ্জ জিয়া স্মৃতি পাঠাগার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খানম রিতা, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপ’র সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর গোলাম হাফিজ কেনেডি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বক্তব্য রাখেন।