নিজস্ব প্রতিবেদক :
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আর্থিক সাশ্রয়ের জন্য এবার কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা খাল খননের কাজ করবে সেনাবাহিনী। একবছর মেয়াদি এ খাল খনন প্রকল্প শুরু হবে চলতি বছরের জুনে। এতে ব্যয় হবে ৩১৭ কোটি টাকা।
সোমবার (১২ মে) সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা খাল পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অনেক জায়গায় খালের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গিয়েছে, বর্জ্যের স্তুপ তৈরি হয়েছে। ফলে খালকে পুনরুদ্ধার করা একটি বড় চ্যালেঞ্জের কাজ।
খাল পুনরুদ্ধার এবং পরিষ্কারে এলাকাবাসীকেও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এসময় ঢাকার জলাবদ্ধতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, বর্ষার মৌসুমে ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতা নিরসনে এরইমধ্যে ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে কাজ শুরু করেছে দুই সিটি করপোরেশন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা বলেন, আর কিছু পারি না পারি, আসুন খালগুলো গভীর করে দেই। ড্রেনগুলো পরিষ্কার করি। আশাকরি তাহলে জলাবদ্ধতা এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় কম হবে।
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি সব খাল বিল ভরাট করে বাড়িঘর বানিয়ে ফেলবেন। ড্রেন পরিষ্কার করবেন না, তাহলে তো জলাবদ্ধতা হবেই। আগামী অর্থবছরের মধ্যেই একনেকে পাস হওয়া ঐতিহ্যবাহী শুভাঢ্যা খাল খননকাজ সম্পন্ন হবে। কাজ সম্পাদন করবে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। প্রায় ৩১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বুড়িগঙ্গা থেকে ধলেশ্বরী পর্যন্ত আনুমানিক ১৩ কিলোমিটার খাল খনন করবে সরকার। পরিবেশের ভারসাম্যর জন্যে খাল রক্ষায় এলাকাবাসীকেও এগিয়ে আসতে হবে। বিভিন্ন নির্মাণ বর্জ্য খালে বালু, ইট, সিমেন্ট পাথর যত্রতত্র না ফেলার জন্য এলাকাবাসীকে অনুরোধ করেন। খাল খনন করা হলে এই এলাকার মানুষ খালের সুফল ফিরে পাবেন।
তিনি আরো বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই শুভাঢ্যা খালের পানি প্রবাহের মুখগুলো ময়লা আবর্জনা আর দখলের কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
সৈয়দ রিজওয়ানা হাসান বলেন, জনগণের টাকায় এই খাল খনন করা হবে। যাতে জনগণের অর্থ অপচয় না হয় এবং অর্থ যেন সাশ্রয় হয় সেই বিষয়ে সরকার দেখভাল করার জন্যই এই পরিদর্শনে আসা হয়েছে। এই খালের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গার্মেন্টস জোটসহ অন্যান্য সমস্ত ময়লা-আবর্জনা খালে না ফেলার জন্য এলাকাবাসীকে সজাগ থেকে কাজ করার জন্য অনুরোধ করেছেন। আগামী বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা দূর করণের জন্য সিটি কর্পোরেশনগুলোতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার কার্যক্রম শুরু হয়েছে । যাতে করে আগামী বর্ষা মৌসুমে সিটি কর্পোরেশন গুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয়। এ ব্যাপারে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পরিবেশ রক্ষায় খাল খননের পর দুই পাশে সবুজায়নের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, খালের দুই পাশে প্রাকৃতিক নিয়মে পরিবেশ রক্ষায় বনায়ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে। ঢাকা জেলা প্রশাসনের কাছে খালের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে আলোচনা করেছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপদেষ্টার একান্ত সচিব আবু নঈম, তথ্য কর্মকর্তা দীপঙ্কর বর, সহকারী একান্ত সচিব আশিকুর রহমান সমীসহ ঢাকা জেলা ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ।