Dhaka শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুকুরের মাংস বিক্রি বন্ধে দক্ষিণ কোরিয়ায় আইন পাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টে মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) কুকুরের মাংসের ব্যবসা নিষিদ্ধ করে একটি বিল পাস হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মাংসের জন্য দেশটিতে কুকুরের প্রজনন, জবাই এবং বিক্রয় নিষিদ্ধ। কুকুরের মাংস খাওয়া দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ঐতিহ্যবাহী অভ্যাস, যেটিকে দেশটির জন্য বিব্রতকর বলে অভিহিত করেছেন অ্যাক্টিভিস্টরা।

গ্রীষ্মকালের আদ্র আবহাওয়ায় কুকুরের মাংস খেলে শরীরের বল বাড়ে- দীর্ঘদিন ধরে কোরিয়ায় এমন ধারণা প্রচলিত ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই চর্চা নেই বললেই চলে। বয়স্করা ছাড়া আর তেমন কেউ কুকুরের মাংস খান না।

অধিকারকর্মীদের দাবি, মাংসের জন্য কুকুরদের ইলেকট্রিক শক অথবা ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়। কিন্তু কুকুরপালক ও ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, কুকুর জবাই করার প্রক্রিয়াটিকে আরও মানবিক করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।

সোমবার দ্বিপাক্ষিক কৃষি কমিটিতে বিলটি পাস হওয়ার পর আজ এটি এক কক্ষের কোরিয়া পার্লামেন্টে ২০৮-০ ভোটে পাস হয়। শুধু দুই সদস্য অনুপস্থিত থাকায় ভোট দিতে পারেননি। ক্ষমতাসীন দল এই বিলটি উত্থাপন করেছিল।

এই আইন মেনে চলতে তিন বছরের ‘গ্রেস পিরিয়ড’ পাবেন এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। এই আইন অমান্য করলে ঊর্ধ্বে তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা ৩ কোটি ওন (২২ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলার) জরিমানা গুনতে হবে।

দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ কোরিয়ার রন্ধনপ্রণালির একটি অংশ ছিল কুকুরের মাংস। অ্যাক্টিভিস্টদের মতে, দেশটিতে বাণিজ্যের জন্য প্রতি বছর ১০ লাখ কুকুর হত্যা করা হয়। তবে সম্প্রতি কোরিয়ানরা পোষাপ্রাণীর মালিকানা গ্রহণ করায় এর ভক্ষণ তীব্রভাবে হ্রাস পেয়েছে।

বিলটির প্রস্তাবকারী ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টির আইনপ্রণেতা থাই ইয়ং-হো বলেন, এখন ‘কুকুর খাওয়ার দেশ’ হিসেবে সমালোচিত হওয়ার আর কোনও যৌক্তিকতা নেই।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল এবং সরকারকে এখন পশু অধিকার রক্ষায় নেতৃত্ব দিতে হবে।

সোমবার সিউলভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাওয়ারনেস, রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি ১০ জনের মধ্যে নয়জনই ভবিষ্যতে কুকুরের মাংস খাবেন না বলে জানিয়েছেন।

অ্যানিমেল লিবারেশন ওয়েভ অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ বলেছে, মঙ্গলবারের ভোট বিশ্বব্যাপী একটি অগ্রণী সিদ্ধান্ত ছিল। এটি অন্যান্য প্রাণীর অধিকার রক্ষার পথ প্রশস্ত করবে।

এদিকে, কুকুরের মাংস নিষিদ্ধ করার পূর্ববর্তী প্রচেষ্টাগুলো খাওয়ার জন্য কুকুর প্রজননকারী কৃষকদের কাছ থেকে তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়েছে। তবে নতুন আইনের অধীনে তাদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, প্রায় এক হাজার ১০০টি কুকুরের খামার প্রতি বছর কয়েক হাজার কুকুরের প্রজনন করে। সেগুলোর মাংস সারা দেশের রেস্তোরাঁয় পরিবেশন করা হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জোর করে চাপিয়ে দেয়া শিক্ষা সম্ভাবনা নষ্ট করে দেয় : হাসনাত আব্দুল্লাহ

কুকুরের মাংস বিক্রি বন্ধে দক্ষিণ কোরিয়ায় আইন পাস

প্রকাশের সময় : ১০:৫৭:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টে মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) কুকুরের মাংসের ব্যবসা নিষিদ্ধ করে একটি বিল পাস হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মাংসের জন্য দেশটিতে কুকুরের প্রজনন, জবাই এবং বিক্রয় নিষিদ্ধ। কুকুরের মাংস খাওয়া দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ঐতিহ্যবাহী অভ্যাস, যেটিকে দেশটির জন্য বিব্রতকর বলে অভিহিত করেছেন অ্যাক্টিভিস্টরা।

গ্রীষ্মকালের আদ্র আবহাওয়ায় কুকুরের মাংস খেলে শরীরের বল বাড়ে- দীর্ঘদিন ধরে কোরিয়ায় এমন ধারণা প্রচলিত ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই চর্চা নেই বললেই চলে। বয়স্করা ছাড়া আর তেমন কেউ কুকুরের মাংস খান না।

অধিকারকর্মীদের দাবি, মাংসের জন্য কুকুরদের ইলেকট্রিক শক অথবা ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়। কিন্তু কুকুরপালক ও ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, কুকুর জবাই করার প্রক্রিয়াটিকে আরও মানবিক করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।

সোমবার দ্বিপাক্ষিক কৃষি কমিটিতে বিলটি পাস হওয়ার পর আজ এটি এক কক্ষের কোরিয়া পার্লামেন্টে ২০৮-০ ভোটে পাস হয়। শুধু দুই সদস্য অনুপস্থিত থাকায় ভোট দিতে পারেননি। ক্ষমতাসীন দল এই বিলটি উত্থাপন করেছিল।

এই আইন মেনে চলতে তিন বছরের ‘গ্রেস পিরিয়ড’ পাবেন এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। এই আইন অমান্য করলে ঊর্ধ্বে তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা ৩ কোটি ওন (২২ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলার) জরিমানা গুনতে হবে।

দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ কোরিয়ার রন্ধনপ্রণালির একটি অংশ ছিল কুকুরের মাংস। অ্যাক্টিভিস্টদের মতে, দেশটিতে বাণিজ্যের জন্য প্রতি বছর ১০ লাখ কুকুর হত্যা করা হয়। তবে সম্প্রতি কোরিয়ানরা পোষাপ্রাণীর মালিকানা গ্রহণ করায় এর ভক্ষণ তীব্রভাবে হ্রাস পেয়েছে।

বিলটির প্রস্তাবকারী ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টির আইনপ্রণেতা থাই ইয়ং-হো বলেন, এখন ‘কুকুর খাওয়ার দেশ’ হিসেবে সমালোচিত হওয়ার আর কোনও যৌক্তিকতা নেই।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল এবং সরকারকে এখন পশু অধিকার রক্ষায় নেতৃত্ব দিতে হবে।

সোমবার সিউলভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাওয়ারনেস, রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি ১০ জনের মধ্যে নয়জনই ভবিষ্যতে কুকুরের মাংস খাবেন না বলে জানিয়েছেন।

অ্যানিমেল লিবারেশন ওয়েভ অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ বলেছে, মঙ্গলবারের ভোট বিশ্বব্যাপী একটি অগ্রণী সিদ্ধান্ত ছিল। এটি অন্যান্য প্রাণীর অধিকার রক্ষার পথ প্রশস্ত করবে।

এদিকে, কুকুরের মাংস নিষিদ্ধ করার পূর্ববর্তী প্রচেষ্টাগুলো খাওয়ার জন্য কুকুর প্রজননকারী কৃষকদের কাছ থেকে তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়েছে। তবে নতুন আইনের অধীনে তাদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, প্রায় এক হাজার ১০০টি কুকুরের খামার প্রতি বছর কয়েক হাজার কুকুরের প্রজনন করে। সেগুলোর মাংস সারা দেশের রেস্তোরাঁয় পরিবেশন করা হয়।