Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কমলাপুরে যাত্রীর চাপ, ট্রেনে নেই শিডিউল বিপর্যয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ট্রেনে ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে সোমবার (১৭ এপ্রিল)। প্রথম দুদিন (সোম ও মঙ্গলবার) যাত্রীদের তেমন ভিড় দেখা না গেলেও বুধবার (১৯ এপ্রিল)। যাত্রীর চাপ বেড়েছে। ভোর থেকেই যাত্রীর চাপ কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। টিকিট দেখিয়ে স্টেশনে প্রবেশ করতে দেখা যায় যাত্রীদের। সময়মতো ট্রেন ছাড়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ঘরেফেরা যাত্রীরা। এখন পর্যন্ত শিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেনি।

আর স্টেশনে চলছে টিকিটবিহীন যাত্রী ঠেকাতে ৩ স্তরের কড়া চেকিং। এবারই প্রথম ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। গত ৭ এপ্রিল থেকে অনলাইনে শুরু হয় নিজের এনআইডির (জাতীয় পরিচয়পত্র) মাধ্যমে ভ্রমণেচ্ছুদের টিকিট প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় টিকিটের সঙ্গে এনআইডি মিলিয়ে তারপরেই প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। সেখানে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ নিশ্চিত করার জন্য স্টেশনের একেবারে বাইরে থেকেই যাত্রীদের এনআইডি এবং টিকিটের সঙ্গে মিলিয়ে তারপর প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছিল। আগে যেখানে প্ল্যাটফর্মে টিকিট চেক করা হতো, সেখানে এখন যাত্রীদের প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের আগেই টিকিট নিশ্চিত করতে হচ্ছে।

প্রত্যেক যাত্রী তাদের টিকিট দেখিয়ে প্রবেশ করছেন। টিকিট থাকা সাপেক্ষে স্টেশনে প্রবেশের অনুমতি মিলছে। আর যারা অনলাইন মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করতে পারেননি তারা ট্রেন ছাড়ার আগমুহূর্তে কাউন্টার থেকে স্ট্যান্ডিং টিকিট সংগ্রহ করছেন। যদিও স্ট্যান্ডিং টিকিট নির্দিষ্ট হওয়ায় অনেকেই সংগ্রহ করতে পারছেন না।

অনলাইন মাধ্যমে টিকিট কাটতে পারেননি তাদের জন্য যাত্রার দুই ঘণ্টা আগে দাঁড়ানো (স্ট্যান্ডিং টিকিট) টিকিটের ব্যবস্থা রেখেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। স্ট্যান্ডিং টিকিট পেতে ভোর থেকেই বিভিন্ন ট্রেনের যাত্রীরা কাউন্টারগুলোর সামনে ভিড় জমান। তবে ২৫ শতাংশ টিকিটের বেশি বিক্রি করা হচ্ছে না। এতে অনেকেই টিকিট কাটতে না পেরে স্টেশন ত্যাগ করছেন।

তাসনিন তানিশা নামে সোনারগাঁ এক্সপ্রেসের এক যাত্রী জাগো নিউজকে বলেন, এবার স্টেশন এলাকায় শৃঙ্খলা রয়েছে। যাত্রী ছাড়া কেউ স্টেশনে প্রবেশ করতে পারছেন না। আবার ট্রেনও যথা সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে এটা ভালো দিক, প্রশংসাযোগ্য।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, আজ যাত্রীর চাপ রয়েছে, আগামীকাল আরও চাপ বাড়তে পারে। যাত্রীর চাপ থাকলে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে সবাই স্টেশনে প্রবেশ করেছেন। এখন পর্যন্ত আমাদের সবগুলো ট্রেন সময়মতো ছেড়েছে।

স্ট্যান্ডিং টিকিটপ্রাপ্তি নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের আসন নির্দিষ্ট। আর নির্দিষ্ট আসনের ২৫ শতাংশ টিকিট স্ট্যান্ডিং হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এ টিকিটের চাহিদার চেয়ে যাত্রী বেশি হওয়ায় অনেকে নাও পেতে পারেন।

মূলত বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে বলা হয়েছে, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের সুবিধার্থে ঈদ অগ্রিম ও ফেরত যাত্রায় আন্তঃনগর ট্রেনের সব আসন বিক্রি শেষে যাত্রী সাধারণের সুবিধার্থে ট্রেনে বরাদ্দ করা শোভন শ্রেণির (নন এসি) মোট আসনের ২৫ শতাংশ আসনবিহীন টিকিট যাত্রার দিন কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হবে।

অন্যদিকে ঢাকা থেকে ৮টি কমিউটার (বেসরকারি ট্রেন) নিয়মিত ৬টি গন্তব্যে চলাচল করে। ট্রেনগুলো হচ্ছে- বলাকা কমিউটার (ঝরিয়া), দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার (দেওয়ানগঞ্জ), মহুয়া কমিউটার (মোহনগঞ্জ), কর্ণফুলি কমিউটার (চট্টগ্রাম), রাজশাহী কমিউটার (চাঁপাইনবাবগঞ্জ), জামালপুর কমিউটার (দেওয়ানগঞ্জ) এবং ২টি তিতাস কমিউটার (আখাউড়া)।

এসব কমিউটার ট্রেনের টিকিটও অগ্রিম বিক্রি করা হয় না। প্রতিটি ট্রেন ছাড়ার আগে এসব টিকিট বিক্রি করা হয়। যার ফলে এই কাউন্টারের সামনেও দীর্ঘ সময় ধরে মানুষের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।

মহুয়া কমিউটার ট্রেনের যাত্রী শাহরিয়ার আবেদিন জয় বলেন, অনেক কষ্টে একটি টিকিট পেয়েছি মোহনগঞ্জের। এখানে অনেক মানুষের ভিড়। অনেকে টিকিটও পায়নি।

স্ট্যান্ডিং টিকিট প্রসঙ্গে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ার বলেন, আমরা একটি ট্রেনের ২৫ শতাংশ টিকিট দিতে পারি। ধরেন একটি ট্রেনে ৬০০ আসন আছে। তার বিপরীতে আমরা ১৫০টি টিকিট দিতে পারবো। আমি দেখলাম কাউন্টারের সামনে ২ হাজার মানুষের ভিড় আছে। আমরা তো সবাইকে টিকিট দিতে পারবো না।

এদিন সকালে দিনাজপুর অভিমুখী নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেন ৬টা ৪০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ছাড়ে সকাল ৭টায়, উত্তরবঙ্গগামী তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল সাড়ে ৭টায়, সেটি ৭টা ৪০ মিনিটে স্টেশন ত্যাগ করে। চট্টগ্রাম অভিমুখী মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেস ট্রেন ৭টা ৪৫ মিনিটে স্টেশন ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ৭টা ৫৫ মিনিটে, একই গন্ত্যব্যে সকাল ৮টায় সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন এবং সকাল ৮:১৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ৮টা ৩০ মিনিটে সেটি প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যায়। এছাড়া ঈদযাত্রায় সর্বমোট ৫৫টি ট্রেন ছেড়ে যাবার কথা রয়েছে। যাতে অন্তত ৫০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করবেন।

যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের ঈদযাত্রা এখন পর্যন্ত নির্বিঘ্নেই করতে পেরেছেন তারা, তাদের প্রত্যাশা যাবার পথের মতো ফিরতি যাত্রাতেও নির্বিঘ্নে ফিরতে পারবেন তারা। এছাড়া, টিকিট ছাড়া ভ্রমণ না করতে পারার বিষয়ে তদারকি সব সময়ের জন্য চেয়েছেন যাত্রীরা।

এদিকে রোববার (১৬ এপ্রিল) দুর্ঘটনার কারণে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের সাতটি কোচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় সোমবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের যাত্রা বাতিল করা হয়। ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের অসুবিধার কথা বিবেচনায় নতুন রেক প্রস্তুত করা হয়।

বাতিল হওয়া ট্রেনটি বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৮টায় ঢাকা স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। দুদিন পর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের দুই নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় ট্রেনটির ঈদযাত্রা শুরু হলো। যাত্রীদের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখেই এ ট্রেন চালু করা হয়।

ঈদযাত্রায় উত্তরাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা ৭টি ট্রেন রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশনে থামছে না। ট্রেনগুলো সরাসরি কমলাপুর স্টেশনে চলে যাবে। ঈদযাত্রায় ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঠেকাতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। রেলপথ মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঈদযাত্রা শুরুর দিন অর্থাৎ ১৭ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ঢাকাগামী একতা এক্সপ্রেস, দ্রুতযান, পঞ্চগড়, নীলসাগর, কুড়িগ্রাম, লালমনি ও রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে না।

স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আন্তঃদেশীয় মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন ১৮ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এবং মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন ২০ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে আন্তঃদেশীয় বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন যথারীতি চলাচল করবে। এবার ঈদযাত্রায় আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয় গত ৭ এপ্রিল। ওইদিন বিক্রি হয় ১৭ এপ্রিলের টিকিট। এরপর ৮ এপ্রিল ১৮ এপ্রিলের, ৯ এপ্রিল ১৯ এপ্রিলের, ১০ এপ্রিল ২০ এপ্রিলের এবং ১১ এপ্রিল বিক্রি হয় ২১ এপ্রিলের টিকিট।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

কমলাপুরে যাত্রীর চাপ, ট্রেনে নেই শিডিউল বিপর্যয়

প্রকাশের সময় : ০১:৩২:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ট্রেনে ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে সোমবার (১৭ এপ্রিল)। প্রথম দুদিন (সোম ও মঙ্গলবার) যাত্রীদের তেমন ভিড় দেখা না গেলেও বুধবার (১৯ এপ্রিল)। যাত্রীর চাপ বেড়েছে। ভোর থেকেই যাত্রীর চাপ কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। টিকিট দেখিয়ে স্টেশনে প্রবেশ করতে দেখা যায় যাত্রীদের। সময়মতো ট্রেন ছাড়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ঘরেফেরা যাত্রীরা। এখন পর্যন্ত শিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেনি।

আর স্টেশনে চলছে টিকিটবিহীন যাত্রী ঠেকাতে ৩ স্তরের কড়া চেকিং। এবারই প্রথম ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। গত ৭ এপ্রিল থেকে অনলাইনে শুরু হয় নিজের এনআইডির (জাতীয় পরিচয়পত্র) মাধ্যমে ভ্রমণেচ্ছুদের টিকিট প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় টিকিটের সঙ্গে এনআইডি মিলিয়ে তারপরেই প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। সেখানে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ নিশ্চিত করার জন্য স্টেশনের একেবারে বাইরে থেকেই যাত্রীদের এনআইডি এবং টিকিটের সঙ্গে মিলিয়ে তারপর প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছিল। আগে যেখানে প্ল্যাটফর্মে টিকিট চেক করা হতো, সেখানে এখন যাত্রীদের প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের আগেই টিকিট নিশ্চিত করতে হচ্ছে।

প্রত্যেক যাত্রী তাদের টিকিট দেখিয়ে প্রবেশ করছেন। টিকিট থাকা সাপেক্ষে স্টেশনে প্রবেশের অনুমতি মিলছে। আর যারা অনলাইন মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করতে পারেননি তারা ট্রেন ছাড়ার আগমুহূর্তে কাউন্টার থেকে স্ট্যান্ডিং টিকিট সংগ্রহ করছেন। যদিও স্ট্যান্ডিং টিকিট নির্দিষ্ট হওয়ায় অনেকেই সংগ্রহ করতে পারছেন না।

অনলাইন মাধ্যমে টিকিট কাটতে পারেননি তাদের জন্য যাত্রার দুই ঘণ্টা আগে দাঁড়ানো (স্ট্যান্ডিং টিকিট) টিকিটের ব্যবস্থা রেখেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। স্ট্যান্ডিং টিকিট পেতে ভোর থেকেই বিভিন্ন ট্রেনের যাত্রীরা কাউন্টারগুলোর সামনে ভিড় জমান। তবে ২৫ শতাংশ টিকিটের বেশি বিক্রি করা হচ্ছে না। এতে অনেকেই টিকিট কাটতে না পেরে স্টেশন ত্যাগ করছেন।

তাসনিন তানিশা নামে সোনারগাঁ এক্সপ্রেসের এক যাত্রী জাগো নিউজকে বলেন, এবার স্টেশন এলাকায় শৃঙ্খলা রয়েছে। যাত্রী ছাড়া কেউ স্টেশনে প্রবেশ করতে পারছেন না। আবার ট্রেনও যথা সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে এটা ভালো দিক, প্রশংসাযোগ্য।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, আজ যাত্রীর চাপ রয়েছে, আগামীকাল আরও চাপ বাড়তে পারে। যাত্রীর চাপ থাকলে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে সবাই স্টেশনে প্রবেশ করেছেন। এখন পর্যন্ত আমাদের সবগুলো ট্রেন সময়মতো ছেড়েছে।

স্ট্যান্ডিং টিকিটপ্রাপ্তি নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের আসন নির্দিষ্ট। আর নির্দিষ্ট আসনের ২৫ শতাংশ টিকিট স্ট্যান্ডিং হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এ টিকিটের চাহিদার চেয়ে যাত্রী বেশি হওয়ায় অনেকে নাও পেতে পারেন।

মূলত বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে বলা হয়েছে, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের সুবিধার্থে ঈদ অগ্রিম ও ফেরত যাত্রায় আন্তঃনগর ট্রেনের সব আসন বিক্রি শেষে যাত্রী সাধারণের সুবিধার্থে ট্রেনে বরাদ্দ করা শোভন শ্রেণির (নন এসি) মোট আসনের ২৫ শতাংশ আসনবিহীন টিকিট যাত্রার দিন কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হবে।

অন্যদিকে ঢাকা থেকে ৮টি কমিউটার (বেসরকারি ট্রেন) নিয়মিত ৬টি গন্তব্যে চলাচল করে। ট্রেনগুলো হচ্ছে- বলাকা কমিউটার (ঝরিয়া), দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার (দেওয়ানগঞ্জ), মহুয়া কমিউটার (মোহনগঞ্জ), কর্ণফুলি কমিউটার (চট্টগ্রাম), রাজশাহী কমিউটার (চাঁপাইনবাবগঞ্জ), জামালপুর কমিউটার (দেওয়ানগঞ্জ) এবং ২টি তিতাস কমিউটার (আখাউড়া)।

এসব কমিউটার ট্রেনের টিকিটও অগ্রিম বিক্রি করা হয় না। প্রতিটি ট্রেন ছাড়ার আগে এসব টিকিট বিক্রি করা হয়। যার ফলে এই কাউন্টারের সামনেও দীর্ঘ সময় ধরে মানুষের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।

মহুয়া কমিউটার ট্রেনের যাত্রী শাহরিয়ার আবেদিন জয় বলেন, অনেক কষ্টে একটি টিকিট পেয়েছি মোহনগঞ্জের। এখানে অনেক মানুষের ভিড়। অনেকে টিকিটও পায়নি।

স্ট্যান্ডিং টিকিট প্রসঙ্গে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ার বলেন, আমরা একটি ট্রেনের ২৫ শতাংশ টিকিট দিতে পারি। ধরেন একটি ট্রেনে ৬০০ আসন আছে। তার বিপরীতে আমরা ১৫০টি টিকিট দিতে পারবো। আমি দেখলাম কাউন্টারের সামনে ২ হাজার মানুষের ভিড় আছে। আমরা তো সবাইকে টিকিট দিতে পারবো না।

এদিন সকালে দিনাজপুর অভিমুখী নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেন ৬টা ৪০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ছাড়ে সকাল ৭টায়, উত্তরবঙ্গগামী তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল সাড়ে ৭টায়, সেটি ৭টা ৪০ মিনিটে স্টেশন ত্যাগ করে। চট্টগ্রাম অভিমুখী মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেস ট্রেন ৭টা ৪৫ মিনিটে স্টেশন ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ৭টা ৫৫ মিনিটে, একই গন্ত্যব্যে সকাল ৮টায় সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন এবং সকাল ৮:১৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ৮টা ৩০ মিনিটে সেটি প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যায়। এছাড়া ঈদযাত্রায় সর্বমোট ৫৫টি ট্রেন ছেড়ে যাবার কথা রয়েছে। যাতে অন্তত ৫০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করবেন।

যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের ঈদযাত্রা এখন পর্যন্ত নির্বিঘ্নেই করতে পেরেছেন তারা, তাদের প্রত্যাশা যাবার পথের মতো ফিরতি যাত্রাতেও নির্বিঘ্নে ফিরতে পারবেন তারা। এছাড়া, টিকিট ছাড়া ভ্রমণ না করতে পারার বিষয়ে তদারকি সব সময়ের জন্য চেয়েছেন যাত্রীরা।

এদিকে রোববার (১৬ এপ্রিল) দুর্ঘটনার কারণে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের সাতটি কোচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় সোমবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের যাত্রা বাতিল করা হয়। ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের অসুবিধার কথা বিবেচনায় নতুন রেক প্রস্তুত করা হয়।

বাতিল হওয়া ট্রেনটি বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৮টায় ঢাকা স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। দুদিন পর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের দুই নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় ট্রেনটির ঈদযাত্রা শুরু হলো। যাত্রীদের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখেই এ ট্রেন চালু করা হয়।

ঈদযাত্রায় উত্তরাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা ৭টি ট্রেন রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশনে থামছে না। ট্রেনগুলো সরাসরি কমলাপুর স্টেশনে চলে যাবে। ঈদযাত্রায় ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঠেকাতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। রেলপথ মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঈদযাত্রা শুরুর দিন অর্থাৎ ১৭ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ঢাকাগামী একতা এক্সপ্রেস, দ্রুতযান, পঞ্চগড়, নীলসাগর, কুড়িগ্রাম, লালমনি ও রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে না।

স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আন্তঃদেশীয় মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন ১৮ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এবং মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন ২০ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে আন্তঃদেশীয় বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন যথারীতি চলাচল করবে। এবার ঈদযাত্রায় আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয় গত ৭ এপ্রিল। ওইদিন বিক্রি হয় ১৭ এপ্রিলের টিকিট। এরপর ৮ এপ্রিল ১৮ এপ্রিলের, ৯ এপ্রিল ১৯ এপ্রিলের, ১০ এপ্রিল ২০ এপ্রিলের এবং ১১ এপ্রিল বিক্রি হয় ২১ এপ্রিলের টিকিট।