Dhaka মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ওয়াগনার প্রধান এখন রাশিয়ায়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

সম্প্রতি রুশ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বসে বেসরকারি আধা-সামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ। যদিও বেলারুশের মধ্যস্ততায় একদিনের মধ্যে বিদ্রোহ বন্ধ করে তারা। এরপরই জানা যায় বেলারুশে আশ্রয় নেবেন ওয়াগনার প্রধান ইয়েভিনি প্রিগোশিন। এর কিছুদিন পর বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো জানান যে, এরই মধ্যে বেলারুশে পৌঁছেছেন প্রিগোশিন। তবে এতদিন পর এসে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন ভিন্ন কথা।

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো।

বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো জানিয়েছেন, গত মাসে তার অসফল অভ্যুত্থানের পর ক্রেমলিনের সঙ্গে একটি চুক্তিতে তার বেলারুশে স্থানান্তরিত করার শর্ত থাকা সত্ত্বেও ওয়াগনার গ্রুপের নেতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বেলারুশের পরিবর্তে রাশিয়াতেই রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লুকাশেঙ্কো বলেন, প্রিগোশিন বর্তমানে সেন্ট পিটার্সবার্গে রয়েছেন। তিনি বেলারুশে আসেননি।

লুকাশেঙ্কো আরও বলেছেন, আমি যত দূর জারি ওয়াগনার যোদ্ধারা এখনও তাদের ঘাঁটিতে অবস্থান করছে। বেলারুশে কিছু ওয়াগনার যোদ্ধা রয়েছে। সোভিয়েত আমলের একাধিক সামরিক স্থাপনা ব্যবহারের জন্য তাদের দেওয়া হয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং শীর্ষ সামরিক কর্তাদের বিরুদ্ধে হঠাৎ করে বিদ্রোহ শুরুর পর ওয়াগনার বাহিনীকে থামাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন লুকাশেঙ্কো। তিনি ওয়াগনার সৈন্যদের নিরাপত্তার আশ্বাসের বিনিময়ে সশস্ত্র বিদ্রোহের অবসান ঘটান। এই চুক্তিটি প্রিগোশিন এবং তার বাহিনীকে বেলারুশে স্থানান্তরের অনুমতি দেয়।

লুকাশেঙ্কোর আজকের বিবৃতিটি তার আগের দাবির সম্পূর্ণ বিপরীত। কারণ, তিনি গত সপ্তাহে ঘোষণা করেছিলেন যে প্রিগোশিন বেলারুশে পৌঁছেছেন।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর পাশাপাশি যুদ্ধে ছিল লিপ্ত ভাড়াটে যোদ্ধাদের সংগঠন ওয়াগনার গ্রুপ। এ সংগঠনের নেতা ৬২ বছর বয়সী ইয়েভগেনি প্রিগোশিন বিভিন্ন সময় যুদ্ধের কৌশল নিয়ে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর নেতৃ্ত্েবর সমালোচনা করে আসছিলেন।

গত ২৩ জুন রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঘোষণা দেন প্রিগোজিন। সেই ঘোষণা অনুযায়ী, নিজের সেনাদের রাজধানী মস্কোর দিকে পাঠান তিনি। তবে ওই দিন রাতে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় বিদ্রোহ থামিয়ে দেন এই ওয়ার লর্ড।

ওই সময় রাশিয়ার সরকার ও প্রিগোজিনের মধ্যে কয়েকটি বিষয়ে চুক্তি হয়। এই চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল— তাকে রাশিয়া ছেড়ে বেলারুশে চলে যেতে হবে। চুক্তি অনুযায়ী, দেশটিতে গিয়েছিলেনও তিনি। তবে প্রিগোজিন ঠিক কোথায় ছিলেন সে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বর্তমানে ওয়াগনার প্রধান রাশিয়ায় আছে এমনটি জানিয়ে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী প্রিগোজিন ২৭ জুন এসেছিলেন। এখন তিনি সেন্ট পিটার্সবার্গে (রাশিয়ার শহর) আছেন, তিনি বেলারুশে নেই।’

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। ওই সময় রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে এ হামলায় যোগ দেয় ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপও। এই বাহিনীর সেনারা দীর্ঘ ৮ মাস লড়াই করে জুনের প্রথম দিকে ইউক্রেনের বাখমুত শহর দখল করে। তবে এই বাখমুতের যুুদ্ধের সময় প্রিগোজিন অভিযোগ করেন, তার সেনাদের পর্যাপ্ত অস্ত্র দিচ্ছেন না রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু ও অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তারা।

এরপর গত ২২ জুন তিনি অভিযোগ করেন তার সেনাদের ওপর রকেট হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সেনারা। ওই হামলার প্রতিশোধ নিতে প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তাদের ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা চালিয়েছিলেন তিনি। সূত্র: বিবিসি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আপস করলে খালেদা জিয়া অনেক আগেই ক্ষমতায় বসতে পারতেন : সেলিমা রহমান

ওয়াগনার প্রধান এখন রাশিয়ায়

প্রকাশের সময় : ০৫:০২:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

সম্প্রতি রুশ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বসে বেসরকারি আধা-সামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ। যদিও বেলারুশের মধ্যস্ততায় একদিনের মধ্যে বিদ্রোহ বন্ধ করে তারা। এরপরই জানা যায় বেলারুশে আশ্রয় নেবেন ওয়াগনার প্রধান ইয়েভিনি প্রিগোশিন। এর কিছুদিন পর বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো জানান যে, এরই মধ্যে বেলারুশে পৌঁছেছেন প্রিগোশিন। তবে এতদিন পর এসে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন ভিন্ন কথা।

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো।

বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো জানিয়েছেন, গত মাসে তার অসফল অভ্যুত্থানের পর ক্রেমলিনের সঙ্গে একটি চুক্তিতে তার বেলারুশে স্থানান্তরিত করার শর্ত থাকা সত্ত্বেও ওয়াগনার গ্রুপের নেতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বেলারুশের পরিবর্তে রাশিয়াতেই রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লুকাশেঙ্কো বলেন, প্রিগোশিন বর্তমানে সেন্ট পিটার্সবার্গে রয়েছেন। তিনি বেলারুশে আসেননি।

লুকাশেঙ্কো আরও বলেছেন, আমি যত দূর জারি ওয়াগনার যোদ্ধারা এখনও তাদের ঘাঁটিতে অবস্থান করছে। বেলারুশে কিছু ওয়াগনার যোদ্ধা রয়েছে। সোভিয়েত আমলের একাধিক সামরিক স্থাপনা ব্যবহারের জন্য তাদের দেওয়া হয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং শীর্ষ সামরিক কর্তাদের বিরুদ্ধে হঠাৎ করে বিদ্রোহ শুরুর পর ওয়াগনার বাহিনীকে থামাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন লুকাশেঙ্কো। তিনি ওয়াগনার সৈন্যদের নিরাপত্তার আশ্বাসের বিনিময়ে সশস্ত্র বিদ্রোহের অবসান ঘটান। এই চুক্তিটি প্রিগোশিন এবং তার বাহিনীকে বেলারুশে স্থানান্তরের অনুমতি দেয়।

লুকাশেঙ্কোর আজকের বিবৃতিটি তার আগের দাবির সম্পূর্ণ বিপরীত। কারণ, তিনি গত সপ্তাহে ঘোষণা করেছিলেন যে প্রিগোশিন বেলারুশে পৌঁছেছেন।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর পাশাপাশি যুদ্ধে ছিল লিপ্ত ভাড়াটে যোদ্ধাদের সংগঠন ওয়াগনার গ্রুপ। এ সংগঠনের নেতা ৬২ বছর বয়সী ইয়েভগেনি প্রিগোশিন বিভিন্ন সময় যুদ্ধের কৌশল নিয়ে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর নেতৃ্ত্েবর সমালোচনা করে আসছিলেন।

গত ২৩ জুন রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঘোষণা দেন প্রিগোজিন। সেই ঘোষণা অনুযায়ী, নিজের সেনাদের রাজধানী মস্কোর দিকে পাঠান তিনি। তবে ওই দিন রাতে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় বিদ্রোহ থামিয়ে দেন এই ওয়ার লর্ড।

ওই সময় রাশিয়ার সরকার ও প্রিগোজিনের মধ্যে কয়েকটি বিষয়ে চুক্তি হয়। এই চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল— তাকে রাশিয়া ছেড়ে বেলারুশে চলে যেতে হবে। চুক্তি অনুযায়ী, দেশটিতে গিয়েছিলেনও তিনি। তবে প্রিগোজিন ঠিক কোথায় ছিলেন সে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বর্তমানে ওয়াগনার প্রধান রাশিয়ায় আছে এমনটি জানিয়ে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী প্রিগোজিন ২৭ জুন এসেছিলেন। এখন তিনি সেন্ট পিটার্সবার্গে (রাশিয়ার শহর) আছেন, তিনি বেলারুশে নেই।’

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। ওই সময় রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে এ হামলায় যোগ দেয় ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপও। এই বাহিনীর সেনারা দীর্ঘ ৮ মাস লড়াই করে জুনের প্রথম দিকে ইউক্রেনের বাখমুত শহর দখল করে। তবে এই বাখমুতের যুুদ্ধের সময় প্রিগোজিন অভিযোগ করেন, তার সেনাদের পর্যাপ্ত অস্ত্র দিচ্ছেন না রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু ও অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তারা।

এরপর গত ২২ জুন তিনি অভিযোগ করেন তার সেনাদের ওপর রকেট হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সেনারা। ওই হামলার প্রতিশোধ নিতে প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তাদের ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা চালিয়েছিলেন তিনি। সূত্র: বিবিসি।