নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদেররা নিজেরাই প্রমাণ করেছেন তারা গণতন্ত্রের শত্রু।
রোববার (৭ মে) রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, গোটা দেশটাই কারাগার, লাল দেয়ালের কারাগার; সরকারের বিশেষ টর্চার সেল। মামলা ও হাজিরার বৃত্তে বিএনপির নেতাকর্মীদের বন্দি করা সরকারের উৎপীড়নের কৌশলমাত্র।
সারা দেশে এখনও পুলিশি তল্লাশির নামে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে জানিয়ে রিজভী বলেন, শনিবার (৬ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর কোনো কারণ ছাড়াই ছাত্রলীগ হামলা করেছে।
তিনি বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন এক তরফা করতেই মাঠ ফাঁকা করার কৌশল হিসেবে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাসায় তল্লাশি ও গ্রেফতার করে হয়রানি করা হচ্ছে। আবারও গায়েবি মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অভিযানে নেমেছে পুলিশ–সরকারের ইনটেনশন কী সেটার আলামত এসব অভিযান।
রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি ভবিষ্যতেও হবে না। ভোটের অধিকার আদায়ে সারাদেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। এবার আর সরকার রক্ষা পাবে না। অচিরেই সরকারের পতন হবে।
নির্বাচন কমিশন স্বাধীন, তাদের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদেরকে বলব আয়নায় নিজের চেহারা দেখুন। ২০১৪ সালে, ২০১৮ সালে কীভাবে দিনের ভোট রাতে দেওয়া হয়েছে তা বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসী দেখেছে। আপনাদের অধীনে আজ পর্যন্ত কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে সব নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে। জনগণ তাদের নিজের ভোট দিতে পারেনি।
রিজভী বলেন, এবার আর জনগণ আপনাদের বিশ্বাস করে না। আপনারা জনগণের সঙ্গে বার বার যে প্রতারণা করেছেন তারা সে জবাব এবার দিবে।
দেশব্যাপী আবারও গ্রেফতার নির্যাতন চলছে উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই ৭ ডিসেম্বর পুলিশ নয়াপল্টনে হামলা করেছিল। ৪৭০জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছিল। সে হামলা ছিল পরিকল্পিত। কারাগারে গিয়ে দেখি গোটা কারাগার বিএনপি নেতা-কর্মী দ্বারা পরিপূর্ণ। কারও পায়ে সেন্ডেল,কেউ কেউ লুঙ্গি পরা। এরা অতিসাধারণ বিএনপি নেতা-কর্মী। তারা বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছিল। তিনি বলেন গোটা দেশটাই আজ কারাগার। আমরা ছোট কারাগার থেকে বৃহৎ কারাগারে প্রবেশ করেছি মাত্র। আটক করে, নিপীড়ন করে জনগণকে আর দাবিয়ে রাখা যাবে না। গ্রেফতার করে নির্যাতন করে গণজোয়ার ঠেকাতে পারবে না সরকার। এবার জনগণের বিজয় হবেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীনদের স্বাগত জানাতে গিয়ে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন বর্তমানে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিণত হয়েছে।
বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিকের ওপর হামলার ঘটনায় যুবদলের নেতাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ করে রিজভী বলেন, বিএনপি বা যুবদলের কোনো নেতা-কর্মী তার ওপর হামলা করেনি। এ ঘটনা সাজানো ও মিথ্যা। বিএনপির তরুণ নেতৃত্বকে ধ্বংস করতে সাজানো মামলা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের মানুষ জানে বিচারপতি মানিক একজন নিপীড়ক বিচারপতি ছিলেন। এখনও তিনি তদবির করছেন মিথ্যা সাজানো মামলায় যাতে কেউ জামিন না পান। তিনি বিচারপতিদের প্রতি আহবান জানান তারা যেন ন্যায় বিচার করেন এবং আটক নেতা-কর্মীদের জামিন দেন। তিনি সাইফুল আলম নিরব, গোলাম মওলা শাহীন, এসএম জাহাঙ্গীর, রফিক হাওলাদারসহ আটক সকল নেতা-কর্মীর মুক্তি দাবি করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এ্যাবের সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাছিন আহমেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান চুন্নু, সহ-সভাপতি প্রকৌশলী মো. মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম প্রমুখ।