নিজস্ব প্রতিবেদক :
শুধু ছাত্র উপদেষ্টা নয়, উপদেষ্টা পরিষদের যারা আগামীতে রাজনীতি করতে চান তাদের পদত্যাগ করা উচিত বলে মনে করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সচিবালয়ে কেবিনেট মিটিং শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচনের আগে পদত্যাগ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আসিফ মহামুদ বলেন, সবাই শুধু পরিচিতি বেশি হওয়ার কারণে আমার বা মাহফুজ ভাই বা ছাত্র উপদেষ্টাদের কথা বলে থাকেন; কিন্তু এই সরকারে তো আরও অনেকে আছেন, যাদের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক পরিচয় আছে। এখনো হয়তো আছে এবং সামনেও রাজনীতি করবেন, কিংবা নির্বাচনও করবেন। সরকারের বিভিন্ন জায়গায় হয়তো আরও অনেক হয়তো আছেন। আমি মনে করি, সবারই তফসিলের আগে পদত্যাগ করা উচিত।
তিনি বলেন, আমি নিজে পদত্যাগ করবো। কারণ আমি রাজনীতি করবো। তবে নির্বাচন করবো কিনা এখনো ঠিক হয়নি। পদত্যাগ করে এনসিপিতে যোগ দেবো কি না তা ঠিক হয়নি এখনো।
নির্বাচনকালীন সরকার বলতে আপনি কি বোঝাচ্ছেন? এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকালীন বলতে আমি বুঝিয়েছি যে, তফসিল ঘোষণার পরবর্তী সময়টাকে। নির্বাচনকালীন সরকার বলতে অন্য কোনো সরকারের কথা বুঝাইনি।’
আসিফ মহামুদ বলেন, এই সরকার নিরপেক্ষতার সঙ্গে…আমি মনে করি, যারাই রাজনীতি করতে চায়, শুধু ছাত্র উপদেষ্টারা নয়, যারা চাইবে তাদেরই উচিত, নির্বাচনের সময়টাতে না থাকা। যাতে কোনো ক্রমেই নির্বাচনটা প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলেছেন, আমরা ইতিহাসের একটা শ্রেষ্ঠ নির্বাচন উপহার দিতে চাই। সেটা আমরাও চাই, যেহেতু আমরা এই সরকারের অংশ। ঐতিহাসিক দায়িত্ব আমাদের ওপরও থাকবে যদি নির্বাচনটা সুষ্ঠু না হয়।
আপনারা চলে গেলে পদ শূন্য হবে, সেগুলো আবার পূরণ করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারের বক্তব্য কি? দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘সেটা তো সরকারের সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে আমি টকশোতে বলেছি। এ বিষয়ে সরকারের ভেতরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকারের ভেতরে আমরা আলোচনা করব চূড়ান্ত একটা সিদ্ধান্ত নিতে।’
তফসিল ঘোষণার আগে আপনি পদত্যাগ করবেন বিষয়টাতো এটা- বিষয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘হ্যাঁ, মোটামুটি এটা বলা যায়। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটা সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে আসতে হবে।’
রাজধানীর গুলশানে সাবেক একজন এমপির বাসা থেকে চাঁদা আদায়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুর সঙ্গে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরে কখনো দেখা হয়নি বলে জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, বিষয়টা এখনও যেহেতু তদন্তাধীন আছে, অনুসন্ধান চলছে, তাই মন্তব্য করা উচিত না। তারপরেও যেহেতু আমার নাম স্পেসিফিকলি সেখানে এসেছে এবং আমার নামটা আসার পর আমি অবাকই হই।
তিনি বলেন, জানে আলম অপুকে আমি চিনতাম যখন আমি ছাত্র অধিকার পরিষদে ছিলাম। ২০২২ সালে যখন আমরা ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। তখন সেও ছাত্র অধিকার পরিষদ করত, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতে সম্ভবত সে ছিল। তখন চিনতাম। কিন্তু গত ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরে তার সঙ্গে আমার কখনও কথা বা দেখা হয়নি।
আসিফ মাহমুদ বলেন, এই ধরণের একটা অভিযোগ আসার পরে আমরা আবার আরেক জায়গা থেকে জানতে পারলাম আজকে কিছুক্ষণ আগেও আমি ক্যাবিনেট থেকে বেড় হয়ে দেখলাম যে একজন সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার স্ত্রী পরিচয়ে। আমি খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করছি যে আসলে কী এই ঘটনা। এবং তিনি দাবি করেছেন যে অপুকে গুম করে নিয়ে এই স্টেটমেন্ট আদায় করা হয়েছে জোরপূর্বক। যদি এরকম কিছু হয়ে থাকে এটা আসলেই অত্যন্ত শঙ্কাজনক।