Dhaka সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আরো ১০০ হাসপাতালে চালু হচ্ছে বৈকালিক সেবা : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর সক্ষমতার সঠিক ব্যবহার ও জনগণের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস (প্রাইভেট প্র্যাকটিস) কার্যক্রম চালু করেছে সরকার। সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট রোগী দেখার বিশেষ এই সেবার পরিধি বাড়াতে আগামী সপ্তাহে আরও ১০০ হাসপাতালে বৈকালিক সেবা চালু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক।

মঙ্গলবার (২ মে) সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে জাতীয় স্বাস্থ্য ও কল্যাণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।

জাহিদ মালেক বলেন, বৈকালিক ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসের সব ধরনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ থেকে সর্বোচ্চ ১০ দিনের মধ্যে আরও ১০০টি প্রতিষ্ঠানে বৈকালিক সেবা চালু করা যাবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য খাতে নিয়োজিত ডাক্তার, নার্স ও সংশ্লিষ্টদের নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো না। বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও সারাদেশে মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন পরিচালকসহ প্রায় ৭০০ কর্মকর্তা রয়েছে। তাদের নিয়ে প্রতিবছর কনফারেন্সের আয়োজন করা হবে। সেই কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, দেশে আজ শিশু মৃত্যুর হার কমেছে। করোনা মোকাবিলায় আমরা কীভাবে টিকা দিয়েছি, তা আপনারা দেখেছেন। বিশ্বজুড়ে তা প্রশংসিত হয়েছে। প্রাইভেট খাতেও ৮০ থেকে ৯০ হাজার শয্যা রয়েছে। শত শত প্রাইভেট হাসপাতাল হয়েছে, যা আগে ছিল না। ৭২টি মেডিকেল কলেজ শুধু প্রাইভেট খাতেই। আর সরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৩৭টি। গ্যাস্ট্রোলিভার, শেখ হাসিনা বার্ন ও প্ল্যাস্টিক ইনস্টিটিউটসহ দেশে মোট ১৫টি ইনস্টিটিউট রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, চলতি মাসের ১১ তারিখে বাংলাদেশের ইউনিভার্সিটি হেলথ কনফারেন্স নামে একটি ইউনিভার্সাল হেলথ কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে। এতে নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের দেশি-বিদেশি অনেক গুণীজন এ কনফারেন্সে অংশ নেবেন।

মন্ত্রী বলেন, ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ আরও গতিশীল করতে যাচ্ছি। সরকারিভাবে বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকে, সেটা বিনামূল্যে। ইউনির্ভার্সাল হেলথ কভারেজের ভিত্তি হলো জনগণকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। সরকারিভাবে বিনামূল্যে দিয়ে আসছি, এখন বেসরকারিভাবে কীভাবে রোগীদের খরচ কমিয়ে আনা যায়, তা নিয়ে কাজ করতে হবে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারলেই ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ আমরা অনেকাংশে বাস্তবায়ন করতে পারব।

স্বাস্থ্যখাতকে মনিটরিংয়ের আওতায় আনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আগে দেশের স্বাস্থ্য খাতে নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও সংশ্লিষ্টদের নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো না। তাদের প্রশিক্ষণকে একটি নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নিয়ে আসতে কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া প্রতিবছর একটি কনফারেন্সের আয়োজন করা হবে। যে পদ্ধতিতে ডিসি ও পুলিশ সুপারের কনফারেন্স করা হয়, সেই একইভাবে চিকিৎসকদের নিয়েও প্রতিবছর কনফারেন্সের আয়োজন করা হবে।

তিনি বলেন, করোনা প্রতিরোধে বায়োভ্যালেন্ট নামে ১১ লাখ নতুন টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে আনা হচ্ছে। এটিকে বুস্টার ডোজ হিসেবে দেওয়া হবে। ১২ বছরের বেশি বয়সের সবাইকে এ টিকা দেওয়া হবে। এর কার্যক্রম শিগগিরই শুরু করবো।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা প্রতিরোধে বায়োভ্যালেন্ট নামের নতুন একটি টিকার ১১ লাখ ডোজ আনা হয়েছে। আরও ২০ লাখের মতো এই টিকা অল্প সময়ের মধ্যে পেয়ে যাবো। এটিকে বলা হয় কম্বাইন্ড ভ্যাকসিন। ওমিক্রন ও ডেল্টা ধরনের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে এ টিকা।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মহাপরিচালক এবং বিভিন্ন হাসপাতালের পরিচালকরা।

উল্লেখ্য, গত ৩০ মার্চ দেশের সরকারি হাসপাতালে রোগীদের বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের অংশ হিসেবে প্রাথমিক অবস্থায় ঢাকা বিভাগের ১০ জেলা, চট্টগ্রাম বিভাগের আট জেলা, ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলা, খুলনা বিভাগের চার জেলা, রাজশাহী বিভাগের তিন জেলা, রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলা, বরিশাল বিভাগের তিন জেলা ছাড়াও সিলেট ও বরিশাল বিভাগের পাঁচ জেলায় ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস কার্যক্রম শুরু হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আরো ১০০ হাসপাতালে চালু হচ্ছে বৈকালিক সেবা : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৪:৫২:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর সক্ষমতার সঠিক ব্যবহার ও জনগণের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস (প্রাইভেট প্র্যাকটিস) কার্যক্রম চালু করেছে সরকার। সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট রোগী দেখার বিশেষ এই সেবার পরিধি বাড়াতে আগামী সপ্তাহে আরও ১০০ হাসপাতালে বৈকালিক সেবা চালু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক।

মঙ্গলবার (২ মে) সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে জাতীয় স্বাস্থ্য ও কল্যাণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।

জাহিদ মালেক বলেন, বৈকালিক ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসের সব ধরনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ থেকে সর্বোচ্চ ১০ দিনের মধ্যে আরও ১০০টি প্রতিষ্ঠানে বৈকালিক সেবা চালু করা যাবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য খাতে নিয়োজিত ডাক্তার, নার্স ও সংশ্লিষ্টদের নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো না। বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও সারাদেশে মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন পরিচালকসহ প্রায় ৭০০ কর্মকর্তা রয়েছে। তাদের নিয়ে প্রতিবছর কনফারেন্সের আয়োজন করা হবে। সেই কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, দেশে আজ শিশু মৃত্যুর হার কমেছে। করোনা মোকাবিলায় আমরা কীভাবে টিকা দিয়েছি, তা আপনারা দেখেছেন। বিশ্বজুড়ে তা প্রশংসিত হয়েছে। প্রাইভেট খাতেও ৮০ থেকে ৯০ হাজার শয্যা রয়েছে। শত শত প্রাইভেট হাসপাতাল হয়েছে, যা আগে ছিল না। ৭২টি মেডিকেল কলেজ শুধু প্রাইভেট খাতেই। আর সরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৩৭টি। গ্যাস্ট্রোলিভার, শেখ হাসিনা বার্ন ও প্ল্যাস্টিক ইনস্টিটিউটসহ দেশে মোট ১৫টি ইনস্টিটিউট রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, চলতি মাসের ১১ তারিখে বাংলাদেশের ইউনিভার্সিটি হেলথ কনফারেন্স নামে একটি ইউনিভার্সাল হেলথ কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে। এতে নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের দেশি-বিদেশি অনেক গুণীজন এ কনফারেন্সে অংশ নেবেন।

মন্ত্রী বলেন, ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ আরও গতিশীল করতে যাচ্ছি। সরকারিভাবে বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকে, সেটা বিনামূল্যে। ইউনির্ভার্সাল হেলথ কভারেজের ভিত্তি হলো জনগণকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। সরকারিভাবে বিনামূল্যে দিয়ে আসছি, এখন বেসরকারিভাবে কীভাবে রোগীদের খরচ কমিয়ে আনা যায়, তা নিয়ে কাজ করতে হবে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারলেই ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ আমরা অনেকাংশে বাস্তবায়ন করতে পারব।

স্বাস্থ্যখাতকে মনিটরিংয়ের আওতায় আনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আগে দেশের স্বাস্থ্য খাতে নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও সংশ্লিষ্টদের নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো না। তাদের প্রশিক্ষণকে একটি নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নিয়ে আসতে কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া প্রতিবছর একটি কনফারেন্সের আয়োজন করা হবে। যে পদ্ধতিতে ডিসি ও পুলিশ সুপারের কনফারেন্স করা হয়, সেই একইভাবে চিকিৎসকদের নিয়েও প্রতিবছর কনফারেন্সের আয়োজন করা হবে।

তিনি বলেন, করোনা প্রতিরোধে বায়োভ্যালেন্ট নামে ১১ লাখ নতুন টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে আনা হচ্ছে। এটিকে বুস্টার ডোজ হিসেবে দেওয়া হবে। ১২ বছরের বেশি বয়সের সবাইকে এ টিকা দেওয়া হবে। এর কার্যক্রম শিগগিরই শুরু করবো।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা প্রতিরোধে বায়োভ্যালেন্ট নামের নতুন একটি টিকার ১১ লাখ ডোজ আনা হয়েছে। আরও ২০ লাখের মতো এই টিকা অল্প সময়ের মধ্যে পেয়ে যাবো। এটিকে বলা হয় কম্বাইন্ড ভ্যাকসিন। ওমিক্রন ও ডেল্টা ধরনের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে এ টিকা।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মহাপরিচালক এবং বিভিন্ন হাসপাতালের পরিচালকরা।

উল্লেখ্য, গত ৩০ মার্চ দেশের সরকারি হাসপাতালে রোগীদের বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের অংশ হিসেবে প্রাথমিক অবস্থায় ঢাকা বিভাগের ১০ জেলা, চট্টগ্রাম বিভাগের আট জেলা, ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলা, খুলনা বিভাগের চার জেলা, রাজশাহী বিভাগের তিন জেলা, রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলা, বরিশাল বিভাগের তিন জেলা ছাড়াও সিলেট ও বরিশাল বিভাগের পাঁচ জেলায় ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস কার্যক্রম শুরু হয়।