Dhaka শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আবারো রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাজেটের ঋণ সহায়তা হিসেবে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ৫০৭ মিলিয়ন পেয়েছে বাংলাদেশ। এ অর্থ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে যোগ হয়েছে। ফলে রিজার্ভ বেড়ে আবারো ৩০ বিলিয়ন ডলারের উপরে উঠেছে।

বুধবার (১০ মে) দিনের শুরুতে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩০ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। এর আগে, আকুতে ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর সোমবার (৮ মে) রিজার্ভ ২৯ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলারে নেমে যায়, যা ছিল গত ৭ বছরের মধ্যে সর্বনিন্ম। এর আগে গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রিজার্ভ ৩০ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার ছিল।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, আমাদের অনেকগুলো বিষয় পাইপলাইনে আছে। যেসব ঋণদাতা সংস্থার কাছ থেকে ঋণ চাওয়া হয়েছে তার সবগুলো প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। এগুলো যখন আসবে তখন রিজার্ভ বাড়বে। এর মধ্যে মঙ্গলবার বাজেট সহায়তা হিসেবে বিশ্বব্যাংক থেকে ৫০৭ মিলিয়ন ডলার পেয়েছি। এটা রিজার্ভে যোগ হয়েছে। যার ফলে রিজার্ভ বেড়ে ৩০ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক আশাবাদী সংস্থাগুলো থেকে ঋণ সহায়তা পেলে জুন শেষে দেশের রিজার্ভের পরিমাণ থাকবে ৩২ বিলিয়ন ডলার ওপরে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। দাতা সংস্থা আইএমএফের শর্তের আলোকে জুন ভিত্তিক দেশের নিট রিজার্ভ পরিপূর্ণ থাকবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা বিশ্বের যে সংস্থাগুলো থেকে ঋণসহায়তা চেয়েছি, ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তা পেয়েছি। এখনও যেসব সংস্থা থেকে আমরা ঋণসহায়তা পাইনি, আশাবাদী খুব শিগগিরই তাদের থেকেও ঋণসহায়তা পাবো।

দেশের ইতিহাসে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২১ সালের আগস্টে। করোনা পর বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধি এবং রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসছে, খরচ হচ্ছে সে তুলনায় বেশি। বাড়তি চাহিদা মেটাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৩০ এপ্রিল দেশের রিজার্ভ ছিল ৪৪ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে কমে গত বছর ডিসেম্বর শেষে ৩৩ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারে নামে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৬ সালের এপ্রিলে প্রথমবারের মতো ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে রিজার্ভ। ওই অর্থবছরের শেষে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ৭ বছর পর আবারও ২৯ বিলিয়নের ঘরে নেমে আসে রিজার্ভ। ২০১৭ সালের ২২ জুন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে।

প্রসঙ্গত, আইএমএফ গত মার্চে ২২ দশমিক ৯৪৭ বিলিয়ন ডলার নিট রিজার্ভ রাখার ফ্লোর নির্ধারণ করেছিল, যা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। আগামী জুনে এই ফ্লোর বাড়িয়ে ২৪ দশমিক ৪৬২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার শর্ত রয়েছে সংস্থাটির। আগামী সেপ্টেম্বরে নিট রিজার্ভের পরিমাণ বাড়িয়ে ২৫ দশমিক ৩১৬ বিলিয়ন ডলার এবং ডিসেম্বরে ২৬ দশমিক ৪১১ বিলিয়ন ডলারের ফ্লোর করে দিয়েছে আইএমএফ।

জানা গেছে, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের কাছে ৪০০ মিলিয়ন ডলার, জাইকার কাছে ৩২০ কোটি ডলার এবং কোরিয়ার কাছে ১০০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা চেয়েছে সরকার, যা আগামী জুনের মধ্যেই পাওয়ার চেষ্টা করছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। এসব ঋণ পাওয়া গেলে জুনের মধ্যে রিজার্ভে বাড়তি ১ বিলিয়ন ডলার যোগ হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান সিইসির

আবারো রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

প্রকাশের সময় : ০২:১০:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাজেটের ঋণ সহায়তা হিসেবে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ৫০৭ মিলিয়ন পেয়েছে বাংলাদেশ। এ অর্থ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে যোগ হয়েছে। ফলে রিজার্ভ বেড়ে আবারো ৩০ বিলিয়ন ডলারের উপরে উঠেছে।

বুধবার (১০ মে) দিনের শুরুতে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩০ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। এর আগে, আকুতে ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর সোমবার (৮ মে) রিজার্ভ ২৯ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলারে নেমে যায়, যা ছিল গত ৭ বছরের মধ্যে সর্বনিন্ম। এর আগে গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রিজার্ভ ৩০ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার ছিল।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, আমাদের অনেকগুলো বিষয় পাইপলাইনে আছে। যেসব ঋণদাতা সংস্থার কাছ থেকে ঋণ চাওয়া হয়েছে তার সবগুলো প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। এগুলো যখন আসবে তখন রিজার্ভ বাড়বে। এর মধ্যে মঙ্গলবার বাজেট সহায়তা হিসেবে বিশ্বব্যাংক থেকে ৫০৭ মিলিয়ন ডলার পেয়েছি। এটা রিজার্ভে যোগ হয়েছে। যার ফলে রিজার্ভ বেড়ে ৩০ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক আশাবাদী সংস্থাগুলো থেকে ঋণ সহায়তা পেলে জুন শেষে দেশের রিজার্ভের পরিমাণ থাকবে ৩২ বিলিয়ন ডলার ওপরে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। দাতা সংস্থা আইএমএফের শর্তের আলোকে জুন ভিত্তিক দেশের নিট রিজার্ভ পরিপূর্ণ থাকবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা বিশ্বের যে সংস্থাগুলো থেকে ঋণসহায়তা চেয়েছি, ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তা পেয়েছি। এখনও যেসব সংস্থা থেকে আমরা ঋণসহায়তা পাইনি, আশাবাদী খুব শিগগিরই তাদের থেকেও ঋণসহায়তা পাবো।

দেশের ইতিহাসে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২১ সালের আগস্টে। করোনা পর বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধি এবং রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসছে, খরচ হচ্ছে সে তুলনায় বেশি। বাড়তি চাহিদা মেটাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৩০ এপ্রিল দেশের রিজার্ভ ছিল ৪৪ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে কমে গত বছর ডিসেম্বর শেষে ৩৩ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারে নামে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৬ সালের এপ্রিলে প্রথমবারের মতো ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে রিজার্ভ। ওই অর্থবছরের শেষে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ৭ বছর পর আবারও ২৯ বিলিয়নের ঘরে নেমে আসে রিজার্ভ। ২০১৭ সালের ২২ জুন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে।

প্রসঙ্গত, আইএমএফ গত মার্চে ২২ দশমিক ৯৪৭ বিলিয়ন ডলার নিট রিজার্ভ রাখার ফ্লোর নির্ধারণ করেছিল, যা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। আগামী জুনে এই ফ্লোর বাড়িয়ে ২৪ দশমিক ৪৬২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার শর্ত রয়েছে সংস্থাটির। আগামী সেপ্টেম্বরে নিট রিজার্ভের পরিমাণ বাড়িয়ে ২৫ দশমিক ৩১৬ বিলিয়ন ডলার এবং ডিসেম্বরে ২৬ দশমিক ৪১১ বিলিয়ন ডলারের ফ্লোর করে দিয়েছে আইএমএফ।

জানা গেছে, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের কাছে ৪০০ মিলিয়ন ডলার, জাইকার কাছে ৩২০ কোটি ডলার এবং কোরিয়ার কাছে ১০০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা চেয়েছে সরকার, যা আগামী জুনের মধ্যেই পাওয়ার চেষ্টা করছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। এসব ঋণ পাওয়া গেলে জুনের মধ্যে রিজার্ভে বাড়তি ১ বিলিয়ন ডলার যোগ হবে।