Dhaka বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ খুনি হতে পারে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ খুনি নয় দেশপ্রেমিক : জামায়াত আমির

কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ খুনি হতে পারে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ খুনি নয় দেশপ্রেমিক। আওয়ামী লীগ ১৮ কোটি মানুষের ওপর জুলুম করেছে। মানুষ খুন করে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিল। ফ্যাসিস্টরা যেন পুনরায় ফিরে না আসে এবং আমরা যেন তাদের আশ্রয়-প্রশয় না দেই। যত মানুষকে খুন করা হয়েছে তার প্রত্যকটির বিচার চাই।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াতে ইসলামী কুড়িগ্রাম জেলা শাখার আয়োজনে এই কর্মী সম্মেলন করা হয়।

তিনি বলেন, সব হত্যার বিচার চাই। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন কাজ করা হবে। সত্যের পথে দেশ গড়ার জন্য জামায়াতের পাশে থাকবেন।

মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, যারা দেশকে ভালোবাসে, তারা মৃত্যুকে চায়ের পেয়ালার মতো মনে করে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ফ্যাসিস্টরা যেন পুনরায় ফিরে না আসে এবং আমরা যেন তাদের আশ্রয়-প্রশয় না দেই। বাংলাদেশে অন্যায়ভাবে যত মানুষকে খুন করা হয়েছে, তার প্রত্যকটির বিচার চাই।

তিনি বলেন, এমন কোনো কর্মকাণ্ড করবেন না যাতে আমাদের জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হয়। চাঁদাবাজি ও দখল বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। অটুট থেকে মানবিক বাংলাদেশ গড়তে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের নামে ২৬ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। সেই ফ্যাসিস্টদের আশ্রয় আর বাংলার মাটিতে হবে না। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের সংঘটিত সব হত্যার বিচার চাই। মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই যুদ্ধ চলবে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মজলুমদের দল। আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। তবুও আমাদের সংগ্রাম থামেনি। আমরা এই দেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য বৈষম্যহীন ও মানবিক বাংলাদেশ গড়া। দেশ বাঁচলে আমরা সবাই বাঁচব।’

জামায়াত আমির আরো বলেন, ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ। যারা শহীদ হয়েছেন, তারা আমাদের জাতীর আইকন। তাদের শহীদ হওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে সাহসী মানুষ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হতে পারে না। আমরা শহীদদের কাছে ঋণী এবং তাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। এ ঋণ আমাদের আজীবন শোধ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ফেলানী খাতুনের করুণ মৃত্যু এখনো সবার মনে অমলিন দাগ কেটে রেখেছে। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ১৫ বছরের নিরপরাধ কিশোরী ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে। তার লাশ দীর্ঘ সময় কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে থাকার সেই হৃদয়বিদারক দৃশ্য আজও মানবতার প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দেয়।’

কুড়িগ্রামের বড়াইবাড়ী যুদ্ধের প্রতিশোধ নিতে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সমাজে অনাচার ও চাঁদাবাজি যারা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা মুখ বন্ধ করে থাকবো না। এই জন্য আমরা রাজনৈতিক করি। সব দল ও ধর্মের লোকজন মিলে ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। ক্ষমতায় গেলে সমতার ভিত্তিতে সব জেলার উন্নয়ন করা হবে বলে জানান তিনি।

জেলা শাখার আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিশে সুরা সদস্য মাওলানা আব্দুল মতিন ফারুকীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কার্য পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, জামায়ােত ইসলামী বাংলাদেশের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ব্যারিস্টার সালেহীন, অধ্যাপক আজিজুর রহমান স্বপন প্রমুখ।

দীর্ঘ ২১ বছর পর কুড়িগ্রামে জামায়াতের এই কর্মী সম্মেলন ঘিরে কুড়িগ্রাম নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ছিল। গণঅভ্যুত্থানের পর এ বছরের ৫ জুলাই প্রকাশ্যে কর্মসূচি দেয় জামায়াত। তারই ধারাবাহিকতায় এই কর্মী সম্মেলন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

এইচএসসির স্থগিত পরীক্ষার নতুন সময়সূচি প্রকাশ

আওয়ামী লীগ খুনি হতে পারে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ খুনি নয় দেশপ্রেমিক : জামায়াত আমির

প্রকাশের সময় : ০৩:০৪:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫

কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ খুনি হতে পারে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ খুনি নয় দেশপ্রেমিক। আওয়ামী লীগ ১৮ কোটি মানুষের ওপর জুলুম করেছে। মানুষ খুন করে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিল। ফ্যাসিস্টরা যেন পুনরায় ফিরে না আসে এবং আমরা যেন তাদের আশ্রয়-প্রশয় না দেই। যত মানুষকে খুন করা হয়েছে তার প্রত্যকটির বিচার চাই।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াতে ইসলামী কুড়িগ্রাম জেলা শাখার আয়োজনে এই কর্মী সম্মেলন করা হয়।

তিনি বলেন, সব হত্যার বিচার চাই। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন কাজ করা হবে। সত্যের পথে দেশ গড়ার জন্য জামায়াতের পাশে থাকবেন।

মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, যারা দেশকে ভালোবাসে, তারা মৃত্যুকে চায়ের পেয়ালার মতো মনে করে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ফ্যাসিস্টরা যেন পুনরায় ফিরে না আসে এবং আমরা যেন তাদের আশ্রয়-প্রশয় না দেই। বাংলাদেশে অন্যায়ভাবে যত মানুষকে খুন করা হয়েছে, তার প্রত্যকটির বিচার চাই।

তিনি বলেন, এমন কোনো কর্মকাণ্ড করবেন না যাতে আমাদের জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হয়। চাঁদাবাজি ও দখল বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। অটুট থেকে মানবিক বাংলাদেশ গড়তে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের নামে ২৬ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। সেই ফ্যাসিস্টদের আশ্রয় আর বাংলার মাটিতে হবে না। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের সংঘটিত সব হত্যার বিচার চাই। মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই যুদ্ধ চলবে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মজলুমদের দল। আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। তবুও আমাদের সংগ্রাম থামেনি। আমরা এই দেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য বৈষম্যহীন ও মানবিক বাংলাদেশ গড়া। দেশ বাঁচলে আমরা সবাই বাঁচব।’

জামায়াত আমির আরো বলেন, ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ। যারা শহীদ হয়েছেন, তারা আমাদের জাতীর আইকন। তাদের শহীদ হওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে সাহসী মানুষ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হতে পারে না। আমরা শহীদদের কাছে ঋণী এবং তাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। এ ঋণ আমাদের আজীবন শোধ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ফেলানী খাতুনের করুণ মৃত্যু এখনো সবার মনে অমলিন দাগ কেটে রেখেছে। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ১৫ বছরের নিরপরাধ কিশোরী ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে। তার লাশ দীর্ঘ সময় কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে থাকার সেই হৃদয়বিদারক দৃশ্য আজও মানবতার প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দেয়।’

কুড়িগ্রামের বড়াইবাড়ী যুদ্ধের প্রতিশোধ নিতে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সমাজে অনাচার ও চাঁদাবাজি যারা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা মুখ বন্ধ করে থাকবো না। এই জন্য আমরা রাজনৈতিক করি। সব দল ও ধর্মের লোকজন মিলে ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। ক্ষমতায় গেলে সমতার ভিত্তিতে সব জেলার উন্নয়ন করা হবে বলে জানান তিনি।

জেলা শাখার আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিশে সুরা সদস্য মাওলানা আব্দুল মতিন ফারুকীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কার্য পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, জামায়ােত ইসলামী বাংলাদেশের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ব্যারিস্টার সালেহীন, অধ্যাপক আজিজুর রহমান স্বপন প্রমুখ।

দীর্ঘ ২১ বছর পর কুড়িগ্রামে জামায়াতের এই কর্মী সম্মেলন ঘিরে কুড়িগ্রাম নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ছিল। গণঅভ্যুত্থানের পর এ বছরের ৫ জুলাই প্রকাশ্যে কর্মসূচি দেয় জামায়াত। তারই ধারাবাহিকতায় এই কর্মী সম্মেলন।