Dhaka শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অল্পে বেঁচে যাই, হয়তো আমিও লাশ হয়ে যেতাম : মাইলস্টোনের অধ্যক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনার ক্ষত এখনো দগদগে মানুষের মনে। তারই মাঝে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন (অব.) জাহাঙ্গীর খান শোনালেন সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে অল্পে বেঁচে যাওয়ার গল্প। জানালেন, প্রধান শিক্ষিকা ডেকে না নিয়ে গেলে হয়তো তিনি পুড়ে অঙ্গার হতেন।

শনিবার (২ আগস্ট) সকালে উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত ও আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য লাভের কামনায় শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ। সেখানে নিজের পরিস্থিতি বর্ণনা করেন ক্যাপ্টেন (অব.) জাহাঙ্গীর আলম।

অধ্যক্ষ তার বক্তব্যে বলেন, পৌনে দুই বছর ধরে আমি এই কলেজের দায়িত্বে আছি। কোনো দিন একটার সময়, ছুটির সময় বাইরে যাই না। বারান্দায় দাঁড়াই, হাঁটাহাঁটি করি, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালন দেখি, স্টুডেন্টদের দেখি।

তিনি বলেন, মাত্র ৯ মিনিটের ব্যবধানের জন্য সেদিনের বিমান দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, স্কুল ছুটির সময় আমি মূলত বারান্দায় দাঁড়াই, হাঁটাহাঁটি করি, শিক্ষকদের, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালন দেখি, স্টুডেন্টদের দেখি। ওই দিন প্রধান শিক্ষিকা ডেকে নিয়ে গেলেন, দুপুর ১টার সময় দুজন নতুন শিক্ষকের সাক্ষাৎকার নেবেন। দুপুর ১টা ৪ মিনিটের দিকে বের হয়ে সেখানে গেলাম। আর ১টা ১২ থেকে ১৩ মিনিটের মাঝামাঝি সময়ে বিমান দুর্ঘটনা ঘটল। না হলে হয়তো আমিও লাশ হতে যেতাম।

তিনি আরো বলেন, যারা আমাদের ছেড়ে গেছে, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। এই দুর্ঘটনা যদি ১টা ৪-৫ মিনিটের দিকেও হতো, তাহলে আমরা যে কত কিছু হারাতাম, আরও কতজন মা-বাবা যে সন্তানহারা হতেন; কারণ, স্কুল ছুটির পর প্রায় ১০ মিনিট লাগে বাচ্চাদের বের হতে।

অধ্যক্ষ উদ্ধারকাজে শিক্ষক-কর্মচারীদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, আপনাদের কষ্ট, আপনাদের বেদনা সবকিছুর প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই। যদি কারো মনে এতটুকুও মনে হয় অবহেলাজনিত কারণে, এর দায় একমাত্র আমার— আর কারও নয়। আপনারা যেকোনো বিচার করতে পারেন।

অনুষ্ঠানে মাইলস্টোন স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থী জারিফ হাসানের বাবাকে কিছু বলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। জারিফের বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, সেদিন নাকি ও স্কুলে আসতে চায়নি। ওর মা বলল। ছেলেটা আমার খুব চটপটে ছিল। সে খুব ফ্রেন্ডলি ছিল।

শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানের শুরুতে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা আক্তার। শেষে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দোয়া করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কলেজের ইংরেজি শিক্ষক নুসরাত আলম।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কারের ভবিষ্যৎ পরবর্তী সংসদের হাতে ছেড়ে দেব না : নাহিদ ইসলাম

অল্পে বেঁচে যাই, হয়তো আমিও লাশ হয়ে যেতাম : মাইলস্টোনের অধ্যক্ষ

প্রকাশের সময় : ০৬:৩১:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনার ক্ষত এখনো দগদগে মানুষের মনে। তারই মাঝে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন (অব.) জাহাঙ্গীর খান শোনালেন সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে অল্পে বেঁচে যাওয়ার গল্প। জানালেন, প্রধান শিক্ষিকা ডেকে না নিয়ে গেলে হয়তো তিনি পুড়ে অঙ্গার হতেন।

শনিবার (২ আগস্ট) সকালে উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত ও আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য লাভের কামনায় শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ। সেখানে নিজের পরিস্থিতি বর্ণনা করেন ক্যাপ্টেন (অব.) জাহাঙ্গীর আলম।

অধ্যক্ষ তার বক্তব্যে বলেন, পৌনে দুই বছর ধরে আমি এই কলেজের দায়িত্বে আছি। কোনো দিন একটার সময়, ছুটির সময় বাইরে যাই না। বারান্দায় দাঁড়াই, হাঁটাহাঁটি করি, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালন দেখি, স্টুডেন্টদের দেখি।

তিনি বলেন, মাত্র ৯ মিনিটের ব্যবধানের জন্য সেদিনের বিমান দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, স্কুল ছুটির সময় আমি মূলত বারান্দায় দাঁড়াই, হাঁটাহাঁটি করি, শিক্ষকদের, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালন দেখি, স্টুডেন্টদের দেখি। ওই দিন প্রধান শিক্ষিকা ডেকে নিয়ে গেলেন, দুপুর ১টার সময় দুজন নতুন শিক্ষকের সাক্ষাৎকার নেবেন। দুপুর ১টা ৪ মিনিটের দিকে বের হয়ে সেখানে গেলাম। আর ১টা ১২ থেকে ১৩ মিনিটের মাঝামাঝি সময়ে বিমান দুর্ঘটনা ঘটল। না হলে হয়তো আমিও লাশ হতে যেতাম।

তিনি আরো বলেন, যারা আমাদের ছেড়ে গেছে, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। এই দুর্ঘটনা যদি ১টা ৪-৫ মিনিটের দিকেও হতো, তাহলে আমরা যে কত কিছু হারাতাম, আরও কতজন মা-বাবা যে সন্তানহারা হতেন; কারণ, স্কুল ছুটির পর প্রায় ১০ মিনিট লাগে বাচ্চাদের বের হতে।

অধ্যক্ষ উদ্ধারকাজে শিক্ষক-কর্মচারীদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, আপনাদের কষ্ট, আপনাদের বেদনা সবকিছুর প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই। যদি কারো মনে এতটুকুও মনে হয় অবহেলাজনিত কারণে, এর দায় একমাত্র আমার— আর কারও নয়। আপনারা যেকোনো বিচার করতে পারেন।

অনুষ্ঠানে মাইলস্টোন স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থী জারিফ হাসানের বাবাকে কিছু বলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। জারিফের বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, সেদিন নাকি ও স্কুলে আসতে চায়নি। ওর মা বলল। ছেলেটা আমার খুব চটপটে ছিল। সে খুব ফ্রেন্ডলি ছিল।

শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানের শুরুতে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা আক্তার। শেষে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দোয়া করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কলেজের ইংরেজি শিক্ষক নুসরাত আলম।