Dhaka মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগ রক্ষাকবচের ভূমিকা পালন করবে : প্রধান বিচারপ্রতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দেশের সকল অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগ রক্ষাকবচের ভূমিকা পালন করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধান বিচারপ্রতি সৈয়দ রেফাত আহম্মেদ।

রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর শেরে বাংলানগরে বিআইসিসির হল রুমে সিটিজেন প্ল্যাটফর্ম ফর এসডিজি আয়োজিত ‘সুশাসনের জন্য জন্য জনসম্পৃক্ত সংস্কার: অসুবিধাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর আকাঙ্খা’ নিয়ে দু’দিনের নাগরিক সম্মেলনের প্রথমদিনের সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই রক্ষাকবচকে কার্যকর, দক্ষ ও বিকল্প বিচার ব্যবস্থায় আইন সহায়তাকে স্থানীয় পর্যায়ে কিভাবে গণমানুষের সঙ্গে শক্তিশালী করা যায় সেই বিষয়ে কাজ করবে।

সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, বিচার ব্যবস্থায় এখনও কিছু অসুবিধা এবং দুর্নীতি থাকতে পারে। তবে এগুলো মোকাবিলা করার চেষ্টা করছি। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে ভগ্নদশা থেকে বিচার বিভাগও মুক্ত নয়। তবে এই পর্যায়ে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, এই অবস্থা থেকে উত্তরণে বিচার বিভাগ কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিয়ে এক নতুন যাত্রা শুরু করেছে। নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এক সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে। এর সদ্ব্যবহারে আমাদের সর্বদা খেয়াল রাখতে হবে।

নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে তিনি বলেন, নাগরিক অধিকার যদি রক্ষিত না হয় তাহলে পিছিয়ে পড়া, অসুবিধাগ্রস্ত মানুষগুলোর যে প্রত্যাশা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিলো সেই স্বাধীনতার প্রত্যাশাও বৈপরীত্য হয়ে যাবে।

দেশের ক্রান্তিলগ্নের বর্তমান ভগ্নদশা থেকে বিচারবিভাগও মুক্ত নয় বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর আপনারা সারাদেশের হৃদয়ে ভগ্নদশা দেখেছেন, সেই অবস্থা আমাদের বিচারবিভাগেও আছে। আমরা যথাযথ সংস্কারের চেষ্টা করছি। এমনকি আপনাদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই যে, বিচারবিভাগের কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমেই আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা তাদের জীবন বাজি রেখে আমাদেরকে নতুন স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। ছাত্র-জনতার এই বিপ্লব আমাদেরকে নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অপার সুযোগ করে দিয়েছে। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার আমাদের করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, ন্যায়বিচার যাতে বিলম্বিত না হয়। একইসঙ্গে আমাদেরকে নাগরিক অধিকার রক্ষায় আরো উদ্যোগী হতে হবে। যদি নাগরিক অধিকার রক্ষিত না হয়, তাহলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষিত হবে না। আর তা না হলে স্বাধীনতার মূল আকাঙ্ক্ষা পূরণে আমরা ব্যর্থ হব।

সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের আগামী দিনে এগিয়ে নেওয়া না হলে ৫ আগস্টে যারা প্রাণ দিয়েছেন বা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তা কোনো কাজে আসবে না। যেই মানুষগুলো কষ্টে আছে তাদের কথা তুলে ধরলে এবং তাদের জীবন যাত্রার পরিবর্তন নিয়ে আসলেই আমাদের কাঙ্ক্ষিত সফলতা আসবে।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিপ্লবের দৃঢ় চেতনাকে স্মরণ করে প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, জুলাই বিপ্লব নিপীড়নকে উৎখাত, ন্যায়বিচার, সাম্য এবং মানবতা পুনরুদ্ধারের লড়াই। আমাদের ইতিহাসের এই সংজ্ঞায়িত মুহূর্তগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, ন্যায়বিচারের সন্ধান একটি ক্ষণস্থায়ী প্রচেষ্টা নয় বরং একটি আজীবন প্রতিশ্রুতি। যা আমাদের বিচারিক মিশনের ভিত্তি তৈরি করে।

এ সময় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ও শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের গণতন্ত্রকে সুসংহত ও শক্তিশালী করতে অন্তর্র্বতী সরকারের সংলাপ অব্যাহত রাখতে হবে। সবার জন্য সংলাপের দুয়ার খোলা রাখতে হবে। একইসঙ্গে সুশাসনের জন্য সংস্কার অব্যাহত রাখতে হবে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিতে হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার এসডিজিবিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী (সিনিয়র সচিব) লামিয়া মোর্শেদ, বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ডের দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স করিন হেনচোজ পিগনানি এবং ইউএনডিপি, বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংসদ নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি হলে ব্যবস্থা নেবে দুদক : দুদক চেয়ারম্যান

অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগ রক্ষাকবচের ভূমিকা পালন করবে : প্রধান বিচারপ্রতি

প্রকাশের সময় : ০১:৫৯:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দেশের সকল অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগ রক্ষাকবচের ভূমিকা পালন করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধান বিচারপ্রতি সৈয়দ রেফাত আহম্মেদ।

রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর শেরে বাংলানগরে বিআইসিসির হল রুমে সিটিজেন প্ল্যাটফর্ম ফর এসডিজি আয়োজিত ‘সুশাসনের জন্য জন্য জনসম্পৃক্ত সংস্কার: অসুবিধাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর আকাঙ্খা’ নিয়ে দু’দিনের নাগরিক সম্মেলনের প্রথমদিনের সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই রক্ষাকবচকে কার্যকর, দক্ষ ও বিকল্প বিচার ব্যবস্থায় আইন সহায়তাকে স্থানীয় পর্যায়ে কিভাবে গণমানুষের সঙ্গে শক্তিশালী করা যায় সেই বিষয়ে কাজ করবে।

সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, বিচার ব্যবস্থায় এখনও কিছু অসুবিধা এবং দুর্নীতি থাকতে পারে। তবে এগুলো মোকাবিলা করার চেষ্টা করছি। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে ভগ্নদশা থেকে বিচার বিভাগও মুক্ত নয়। তবে এই পর্যায়ে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, এই অবস্থা থেকে উত্তরণে বিচার বিভাগ কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিয়ে এক নতুন যাত্রা শুরু করেছে। নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এক সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে। এর সদ্ব্যবহারে আমাদের সর্বদা খেয়াল রাখতে হবে।

নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে তিনি বলেন, নাগরিক অধিকার যদি রক্ষিত না হয় তাহলে পিছিয়ে পড়া, অসুবিধাগ্রস্ত মানুষগুলোর যে প্রত্যাশা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিলো সেই স্বাধীনতার প্রত্যাশাও বৈপরীত্য হয়ে যাবে।

দেশের ক্রান্তিলগ্নের বর্তমান ভগ্নদশা থেকে বিচারবিভাগও মুক্ত নয় বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর আপনারা সারাদেশের হৃদয়ে ভগ্নদশা দেখেছেন, সেই অবস্থা আমাদের বিচারবিভাগেও আছে। আমরা যথাযথ সংস্কারের চেষ্টা করছি। এমনকি আপনাদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই যে, বিচারবিভাগের কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমেই আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা তাদের জীবন বাজি রেখে আমাদেরকে নতুন স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। ছাত্র-জনতার এই বিপ্লব আমাদেরকে নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অপার সুযোগ করে দিয়েছে। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার আমাদের করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, ন্যায়বিচার যাতে বিলম্বিত না হয়। একইসঙ্গে আমাদেরকে নাগরিক অধিকার রক্ষায় আরো উদ্যোগী হতে হবে। যদি নাগরিক অধিকার রক্ষিত না হয়, তাহলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষিত হবে না। আর তা না হলে স্বাধীনতার মূল আকাঙ্ক্ষা পূরণে আমরা ব্যর্থ হব।

সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের আগামী দিনে এগিয়ে নেওয়া না হলে ৫ আগস্টে যারা প্রাণ দিয়েছেন বা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তা কোনো কাজে আসবে না। যেই মানুষগুলো কষ্টে আছে তাদের কথা তুলে ধরলে এবং তাদের জীবন যাত্রার পরিবর্তন নিয়ে আসলেই আমাদের কাঙ্ক্ষিত সফলতা আসবে।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিপ্লবের দৃঢ় চেতনাকে স্মরণ করে প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, জুলাই বিপ্লব নিপীড়নকে উৎখাত, ন্যায়বিচার, সাম্য এবং মানবতা পুনরুদ্ধারের লড়াই। আমাদের ইতিহাসের এই সংজ্ঞায়িত মুহূর্তগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, ন্যায়বিচারের সন্ধান একটি ক্ষণস্থায়ী প্রচেষ্টা নয় বরং একটি আজীবন প্রতিশ্রুতি। যা আমাদের বিচারিক মিশনের ভিত্তি তৈরি করে।

এ সময় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ও শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের গণতন্ত্রকে সুসংহত ও শক্তিশালী করতে অন্তর্র্বতী সরকারের সংলাপ অব্যাহত রাখতে হবে। সবার জন্য সংলাপের দুয়ার খোলা রাখতে হবে। একইসঙ্গে সুশাসনের জন্য সংস্কার অব্যাহত রাখতে হবে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিতে হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার এসডিজিবিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী (সিনিয়র সচিব) লামিয়া মোর্শেদ, বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ডের দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স করিন হেনচোজ পিগনানি এবং ইউএনডিপি, বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।