Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অতি দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন : খন্দকার মোশাররফ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসেই জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা জনগণের অধিকার বলতে ভোটের অধিকারকে বুঝি। আপনারা দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। তাহলে জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া ও স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা সরকারকে বলতে চাই, আর টালবাহান নয়- অতি দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দেন। তাহলে আপনারাও সম্মানের সাথে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারবেন। জনগণও এ দেশে ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা পাবে।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, গত ১৬ বছর মানুষ ভোটের অধিকার পায়নি, সেটা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ফিরিয়ে দেবে। আজকে নির্বাচন নানা পদ্ধতিতে বিলম্বিত করার চেষ্টা হচ্ছে। যারা স্বৈরাচারী ছিল তারা তো পালিয়ে গেছে। কিন্তু তারা এখনও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে এবং নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে।

তিনি বলেন, আমরা জনগণের অধিকার বলতে ভোটের অধিকারকে বুঝি। আপনারা অতি দ্রুত নির্বাচনের দিন তারিখ ঘোষণা করেন। তাহলে জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে। জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কোনও ষড়যন্ত্র দেশে বাস্তবায়িত হবে না। জনগণই সেই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে।

তিনি আরো বলেন, বিগত ১৬ বছরের শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে দেশের জনগণ যে আন্দোলন করছিল, সেটা চূড়ান্ত ফসল হচ্ছে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট। ওই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন ও তার সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। তাকে এই দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এটা গত ১৬ বছরের আন্দোলনের ফসল।

তিনি বলেন, নানা অছিলায় নির্বাচন বিলম্ব করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যারা প্রতিত স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকার তারাতো পালিয়ে গেছে, পদত্যাগ করেছে। তাদের অনেকে কিন্তু দেশেও বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে আছে এবং নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। সে জন্য এই সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে বলছি, অতি দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের দিন-তারিখ ঘোষণা করে আপনারা নির্বাচন ঘোষণা করেন। জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে। আর জনগণ নির্বাচনমুখী হলে এ দেশে কেউ ষড়যন্ত্র করে কিছু করতে পারবে না। জনগণই নির্বাচনমুখী হয়ে সেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, যখনই জনগণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে, তখনই তারা সরকার পতন ঘটিয়েছে। যেমন ১৯৯১ সালে ভোট দিয়ে তারা বিএনপিকে ক্ষমতায় এনেছে। ১৯৯৬ সালে সরকারের পরিবর্তন হয়েছে, ২০০১ সালেও নতুন সরকার এসেছে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে জনগণ সুযোগ পেলে ভোট দিয়ে সরকার পরিবর্তন করতে পারে। আবার যারা ভোট দেওয়ার কাজে বাধা দিতে চাই, এ দেশের ছাত্র-জনতা সংগ্রামের মাধ্যমে তাদের উৎখাত করেছে।

বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে স্মরণ করে তিনি বলেন, দেলোয়ার হোসেন সাহেব একজন ত্যাগী, জাতীয়তাবাদী, দেশপ্রেমিক নেতা ছিলেন। তিনি চারবারের মতো চিফ হুইপ ছিলেন। ২০০১ সালে আমরা অনেকেই প্রত্যাশা করেছিলাম দেলোয়ার হোসেন মন্ত্রী হবেন। কিন্তু তাকে মন্ত্রী করা হয়নি। এতে তিনি সামান্যতম মন খারাপ করেননি। আমরা অনেক ক্লোজলি কাজ করেছি। আমরা কিন্তু বিষয়টা নিয়ে ওনার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি। তখন উনি উল্টো আমাদের বুঝিয়েছেন, রাজনীতি করি দলের আদর্শের জন্য। রাজনীতি করি বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তিকে শক্তিশালী করার জন্য। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য। রাজনীতি কোনও পদ পদবির জন্য করি না। এই শিক্ষাটা উনি আমাদের দিয়ে গেছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দেলোয়ার হোসেন সাহেব দলের ক্রান্তিকালে অনেক সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। ওয়ান-ইলেভেনের পরে আমাদের দলকে স্তব্ধ করার জন্য ১১ বছরের যে মহাসচিব ছিলেন, তাকে সংস্কারপন্থি বানিয়ে ফেলা হলো। সেই সময় আমরা কারাগারে ছিলাম। এভাবে যদি দল দুই ভাগ হয়, তাহলে কীভাবে রক্ষা হবে। মরহুম খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন সাহেব অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে তখন মহাসচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের বড় ছেলে আকবর হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের অন্য সন্তানরাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

অতি দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন : খন্দকার মোশাররফ

প্রকাশের সময় : ০৯:৫৩:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসেই জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা জনগণের অধিকার বলতে ভোটের অধিকারকে বুঝি। আপনারা দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। তাহলে জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া ও স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা সরকারকে বলতে চাই, আর টালবাহান নয়- অতি দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দেন। তাহলে আপনারাও সম্মানের সাথে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারবেন। জনগণও এ দেশে ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা পাবে।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, গত ১৬ বছর মানুষ ভোটের অধিকার পায়নি, সেটা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ফিরিয়ে দেবে। আজকে নির্বাচন নানা পদ্ধতিতে বিলম্বিত করার চেষ্টা হচ্ছে। যারা স্বৈরাচারী ছিল তারা তো পালিয়ে গেছে। কিন্তু তারা এখনও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে এবং নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে।

তিনি বলেন, আমরা জনগণের অধিকার বলতে ভোটের অধিকারকে বুঝি। আপনারা অতি দ্রুত নির্বাচনের দিন তারিখ ঘোষণা করেন। তাহলে জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে। জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কোনও ষড়যন্ত্র দেশে বাস্তবায়িত হবে না। জনগণই সেই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে।

তিনি আরো বলেন, বিগত ১৬ বছরের শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে দেশের জনগণ যে আন্দোলন করছিল, সেটা চূড়ান্ত ফসল হচ্ছে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট। ওই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন ও তার সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। তাকে এই দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এটা গত ১৬ বছরের আন্দোলনের ফসল।

তিনি বলেন, নানা অছিলায় নির্বাচন বিলম্ব করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যারা প্রতিত স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকার তারাতো পালিয়ে গেছে, পদত্যাগ করেছে। তাদের অনেকে কিন্তু দেশেও বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে আছে এবং নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। সে জন্য এই সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে বলছি, অতি দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের দিন-তারিখ ঘোষণা করে আপনারা নির্বাচন ঘোষণা করেন। জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে। আর জনগণ নির্বাচনমুখী হলে এ দেশে কেউ ষড়যন্ত্র করে কিছু করতে পারবে না। জনগণই নির্বাচনমুখী হয়ে সেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, যখনই জনগণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে, তখনই তারা সরকার পতন ঘটিয়েছে। যেমন ১৯৯১ সালে ভোট দিয়ে তারা বিএনপিকে ক্ষমতায় এনেছে। ১৯৯৬ সালে সরকারের পরিবর্তন হয়েছে, ২০০১ সালেও নতুন সরকার এসেছে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে জনগণ সুযোগ পেলে ভোট দিয়ে সরকার পরিবর্তন করতে পারে। আবার যারা ভোট দেওয়ার কাজে বাধা দিতে চাই, এ দেশের ছাত্র-জনতা সংগ্রামের মাধ্যমে তাদের উৎখাত করেছে।

বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে স্মরণ করে তিনি বলেন, দেলোয়ার হোসেন সাহেব একজন ত্যাগী, জাতীয়তাবাদী, দেশপ্রেমিক নেতা ছিলেন। তিনি চারবারের মতো চিফ হুইপ ছিলেন। ২০০১ সালে আমরা অনেকেই প্রত্যাশা করেছিলাম দেলোয়ার হোসেন মন্ত্রী হবেন। কিন্তু তাকে মন্ত্রী করা হয়নি। এতে তিনি সামান্যতম মন খারাপ করেননি। আমরা অনেক ক্লোজলি কাজ করেছি। আমরা কিন্তু বিষয়টা নিয়ে ওনার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি। তখন উনি উল্টো আমাদের বুঝিয়েছেন, রাজনীতি করি দলের আদর্শের জন্য। রাজনীতি করি বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তিকে শক্তিশালী করার জন্য। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য। রাজনীতি কোনও পদ পদবির জন্য করি না। এই শিক্ষাটা উনি আমাদের দিয়ে গেছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দেলোয়ার হোসেন সাহেব দলের ক্রান্তিকালে অনেক সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। ওয়ান-ইলেভেনের পরে আমাদের দলকে স্তব্ধ করার জন্য ১১ বছরের যে মহাসচিব ছিলেন, তাকে সংস্কারপন্থি বানিয়ে ফেলা হলো। সেই সময় আমরা কারাগারে ছিলাম। এভাবে যদি দল দুই ভাগ হয়, তাহলে কীভাবে রক্ষা হবে। মরহুম খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন সাহেব অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে তখন মহাসচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের বড় ছেলে আকবর হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের অন্য সন্তানরাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।