আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সাত বছর পর সৌদি আরবে পুনরায় নিজেদের দূতাবাস চালু করেছে ইরান। মঙ্গলবার (৬ জুন) ইরানের পক্ষে উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি রেজা বিগদেলি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
গত ১০ মার্চ ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃ:প্রতিষ্ঠার বিষয়ে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে দুই পক্ষ একটি চুক্তিতে সই করে। এরপর ইরান এই দূতাবাস খোলার পদক্ষেপ নিয়েছে।
ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আবার দূতাবাস চালু করেছে। সৌদি মালিকানাধীন আল আরাবিয়া টিভি জানিয়েছে, রিয়াদে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে ইরান ও সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
দূতাবাস চালুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি রেজা বিগদেলি বলেন, আমরা মনে করি আজকের দিনটা ইরান ও সৌদি আরবের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। দুই দেশের মধ্যকার সহযোগিতা নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করছে।
তিনি আরো বলেন, ইরান ও সৌদির মধ্যে সহযোগিতা যে ‘নতুন যুগে প্রবেশ করছে’ এই পদক্ষেপ সেটিই প্রকাশ করেছে। মূলত চীনের মধ্যস্থতায় উপসাগরীয় দেশগুলো ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সম্মত হওয়ার তিন মাস পর দূতাবাস চালু করা হলো।
ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরবে ইরানি দূতাবাস চালু করার ফলে তেহরান এবং রিয়াদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়বে। দুই দেশের জনগণ ইরান ও সৌদি আরব সফরে যাবে, দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে এবং বিমানের সরাসরি ফ্লাইট চালু হবে।
যদিও এখন পর্যন্ত সৌদি আরব তেহরানে দূতাবাস চালু করেনি, তবে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার কারণে আসন্ন হজে ইরানের নাগরিকরা সহজেই সৌদি ভিসা পাবেন। সৌদি আরবের রাজধানীতে দূতাবাস খোলার পাশাপাশি দেশটির বন্দরনগরী জেদ্দায় ইরান চলতি সপ্তাহে একটি কনস্যুলেট অফিস চালু করবে।
এর আগে গত শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান। ওই বৈঠকে উভয় দেশের ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভালো অগ্রগতি’ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গত ১০ মার্চ চীনের মধ্যস্থতায় কয়েক দিনের নিবিড় আলোচনা শেষে সৌদি আরব ও ইরান নিজেদের মধ্যে কূটনীতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন এবং পরস্পরের দেশে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে প্রখ্যাত সৌদি শিয়া আলেম শেখ নিমর আল-নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনার জের ধরে তেহরান ও রিয়াদের মধ্যে কূটনীতিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছিল। সূত্র : প্রেস টিভি, রয়টার্স।