শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:৪৪ অপরাহ্ন

যথেষ্ট মজুত আছে, রোজায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে না : বাণিজ্য উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
যথেষ্ট মজুত আছে, রোজায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে না : বাণিজ্য উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আসন্ন রোজায় দ্রব্যমূল্য বাড়বে না বলে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, যথেষ্ট মজুত আছে। ইনশাআল্লাহ রমজানে কোনো সমস্যা হবে না। তেল, চিনি, ছোলা ও খেজুরের কোনো সংকট বাজারে নেই। দ্রব্যমূল্য বাড়বে না।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বণিক বার্তা আয়োজিত ‘খাদ্যপণ্যের যৌক্তিক দাম: বাজার তত্ত্বাবধানের কৌশল অনুসন্ধান’ শীর্ষক নীতি সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বশিরউদ্দীন বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন পণ্যের যে দাম দেখি দেশের বাজারে তাতে দাম কমার কথা। দাম বাড়ার কোনো কারণ দেখি না।

খাদ্য পণ্যের যৌক্তিক মূল্য কি হতে পারে তা নিয়ে আজ অনেক আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, এগুলো কীভাবে কর্মে পরিণত করা যায় তা নিয়ে স্বল্প মেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা হবে। ভোক্তাকে প্রকৃত সাহায্য করার জন্য নীতি প্রণয়ন দরকার বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন, বাজারের সঠিক প্র্যাকটিস নিশ্চিত করার জন্য প্রতিযোগিতা কমিশন আছে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আছে, আছে ব্যবসায়ী পরিসর বাড়নোর জন্য টিসিবি। সর্বোপরি, বাজারকে ভোক্তার জন্য সহনীয় করতে ট্যারিফ কমিশন এবং এনবিআর কাজ করছে। এ সময় তিনি স্থানীয় উৎপাদক, আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের বাজারকে প্রতিযোগিতাপূর্ণ করার আহ্বান জানান।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বছরে ৫-৬ লাখ টন রাইস ব্রান অয়েল ভারতে চলে যেত। রাইস ব্রান অয়েল স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো। আমরা এটার রপ্তানি কঠিন করে দিয়েছি। অলরেডি ২৫ শতাংশ রেগুলেটরি ট্যাক্স ইম্পোজ করা হয়েছে। এ তেল বাজারে এলে বর্তমানের চেয়ে তেলের বাজার আরও স্থিতিশীল হবে। বোতল তেল ও খোলা তেলের ভেতর কোনো পার্থক্য নেই, একমাত্র পার্থক্য দাম। বাজারে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিযোগিতা কমিশনকে স্বাধীন করার উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের নীতিগুলো ধনিক শ্রেণির সুবিধার জন্য তৈরি হয়েছে, সাধারণ মানুষের জন্য নয়। গত ১৫ বছরে দেশে বড় কোনো বিনিয়োগ হয়নি, ফলে কর্মসংস্থানও বাড়েনি। বিনিয়োগ না বাড়ে ট্যাক্স কালেকশন কীভাবে বাড়বে প্রশ্ন রাখেন উপদেষ্টা।

ব্যাংকগুলোকে অপরাধ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। ইসলামী ব্যাংক, টিসিবি ধ্বংস করা হয়েছে। টিসিবির তালিকায় ৪৩ লাখ ভুয়া উপকারভোগী পাওয়া গেছে, যা আরও যাচাই করা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আমাদের নীতিগুলো ধনিক শ্রেণিকে সুবিধা দেওয়ার জন্য হয়েছে উল্লেখ করে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ভোক্তা বা সাধারণ মানুষকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব নীতি গ্রহণ করা হয় না। বিগত ১৫ বছর দেশে উল্লেখযোগ্য কোনও বিনিয়োগ হয়নি— তাহলে কর্মসংস্থান কীভাবে হবে? আমরা কার কাছ থেকে কর আদায় করবো?

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ব্যাংকগুলোকে গত ১৫ বছরে ক্রিমিনাল ইনস্টিটিউট হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। ইসলামী ব্যাংককে ধ্বংস করা হয়েছে। এই ব্যাংক আইনে দুর্বৃত্তায়ন করা হয়েছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (টিসিবি) ধ্বংস করা হয়েছে ১৫ বছর ধরে। ১২ হাজার কোটি টাকার একটা অপারেশন করে মাত্র ১৪২ জন। উপকারভোগীদের সংখ্যা ১ কোটি। শুনতে ভালোই লাগছে। কিন্তু আমরা যখন প্রাথমিকভাবে যাচাই করেছি, দেখলাম ৪৩ লাখ ভুয়া। আমার ধারণা, এটি এক্সট্রা লেভেলে যাচাই করলে আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ ভুয়া পাওয়া যাবে।

অনুষ্ঠানে কি-নোট উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. আবদুর রহিম খান, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা।

তিনি বলেন, বিগত সময়ের নীতিমালাগুলো ধনী শ্রেণিকে সুবিধা দেওয়ার জন্য হয়েছে। ভোক্তা বা সাধারণ মানুষকে সুবিধা দেওয়ার জন্য নীতি গ্রহণ হয়নি। বিগত ১৫ বছর দেশে উল্লেখযোগ্য কোনো বিনিয়োগ হয়নি। বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান কীভাবে হবে? তাহলে কার কাছ থেকে কর আদায় করব?

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ব্যাংকগুলোকে গত ১৫ বছরে ক্রিমিনাল ইনস্টিটিউট হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। ইসলামী ব্যাংককে ধ্বংস করা হয়েছে। এই ব্যাংকে দুর্বৃত্তায়ন করা হয়েছে। এক ব্যাংকে এক পরিবার থেকে দু-তিনজন পরিচালক হয়েছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া