শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৫ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশকে নিষিদ্ধ তালিকায় রাখার দুই যুক্তি ইতালির

রিপোর্টারের নাম
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০২০

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশ থেকে যাত্রীদের ইতালিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে দুটি যুক্তি দেখিয়েছে ইতালি সরকার। এগুলো হলো, জনসংখ্যার অনুপাতে এই দেশগুলোর করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) সংক্রমণ হার অনেক বেশি। দ্বিতীয়ত, ওই দেশগুলোতে করোনা মোকাবেলা উদ্যোগ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা খুবই সীমিত।
পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই ওই দেশগুলোর সঙ্গে ইতালির ফ্লাইট যোগাযোগ বন্ধ করা হয়েছে। ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বুধবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্তো স্পেরাঞ্জার এসংক্রান্ত একটি বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে।

জানা গেছে, এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে ইতালির পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কভিড-১৯ মোকাবেলায় ইতালির নেওয়া ব্যবস্থাগুলো তুলে ধরেন। বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশ থেকে ইতালিতে আসা-যাওয়া নিষিদ্ধ করার মেয়াদ আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
নিষিদ্ধ তালিকায় বাংলাদেশ ছাড়াও আছে আর্মেনিয়া, বাহরাইন, ব্রাজিল, বসনিয়া হার্জেগোভিনা, চিলি, কুয়েত, উত্তর মেসিডোনিয়া, মালদোভা, ওমান, পানামা, পেরু ও ডমিনিক প্রজাতন্ত্র। এই দেশগুলোর যাত্রীরাই শুধু নয়, গত ১৪ দিনে ট্রানজিট হিসেবে যাত্রাবিরতি করা ব্যক্তিরাও আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত ইতালিতে ঢুকতে পারবেন না। ইতালি সরকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিনেটকে জানিয়েছেন, ইতালি সঠিক পথেই আছে। তবে সুরক্ষার উদ্যোগ কোনোভাবেই কমানো ঠিক হবে না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও শেনজেন এলাকার বাইরে থেকে ইতালিতে ঢোকা ব্যক্তিদের সতর্কতা হিসেবে অবশ্যই ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন ছাড়া কভিড-১৯-এর ঝুঁকি পুরোপুরি কখনো দূর হবে না। ভাইরাসের সঙ্গে সহনশীল মাত্রায় বসবাসের জন্য অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্তো স্পেরাঞ্জা বলেন, আমরা সবচেয়ে জটিল অধ্যায়ের বাইরে বেরিয়ে এলেও এখনো নিরাপদ নই। উপসর্গ নেই এমন ব্যক্তিদের মাধ্যমে সীমিত মাত্রায় হলেও ভাইরাস সংক্রমিত হচ্ছে। বিদেশ থেকে ফেরত আসা ইতালীয় নাগরিক এবং অন্যান্য দেশ থেকে আসা বা ট্রানজিটের জন্য ইতালিতে যাত্রাবিরতি করা ব্যক্তিদের মাধ্যমে দেশে আবার কভিড-১৯ প্রবেশের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে ফেরা ইতালির পাসপোর্টধারী ও রেসিডেন্ট পারমিটধারীদের অনেকেই কোয়ারেন্টিন মানছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে তাদের কয়েকজনের কভিড-১৯ শনাক্ত হওয়ার পর বিষয়টি ইতালিতে বেশ আলোচিত হয়। এরই মধ্যে বাংলাদেশে কভিড-১৯ পরীক্ষার ভুয়া সনদের বিষয়টিও বিশ্বব্যাপী প্রচার হয়। ইতালি কর্তৃপক্ষ ঢাকা থেকে রোমে ফেরা একটি ফ্লাইটের যাত্রীদের কভিড-১৯ পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়ার পর প্রায় ২০ শতাংশ যাত্রীর ‘পজিটিভ’ ধরা পড়ে। এর পরই নড়েচড়ে বসে ইতালি সরকার। বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে যাত্রী যাওয়া প্রথমে সাত দিনের বন্ধ করা হয়। এমনকি ইতালি থেকে শতাধিক যাত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া