Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রেনের ৫০০ টিকিটসহ ১২ কালোবাজারি আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঈদের সময় অনলাইন থেকে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে টিকিট কেটে রাখে একটি চক্র। এর পর সেই টিকিট সাধারণ যাত্রীদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করে তাঁরা। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব-৩ এমন দুটি চক্রের ১২ জনকে আটক করেছে। এর মধ্যে, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের বেসরকারি ট্রেনের বিক্রিয় প্রতিনিধিও আছেন। এসব কালোবাজারিরা আগামী ১০ দিনের প্রায় ৫০০ টিকিট কেটে রেখেছিল।

শুক্রবার (১৪ জুন) রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ের স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর সিও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর।

তিনি বলেন, সোহেল ও আরিফুলের দুটি চক্র ঠাকুরগাঁও ও ঢাকা থেকে কালোবাজারি পরিচালনা করত। তিনি জানান, গতকাল রাতে তারা অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা থেকে ১০ জনকে এবং ঠাকুরগাঁও থেকে ২ জনকে আটক করেন।

ফিরোজ কবীর বলেন, আমরা গত রাতে অভিযান শুরু করি। এটি চলমান অভিযান ছিল। এটা দুই থেকে তিন ধাপে পরিচালনা করা হয়। ঢাকার কমলাপুর ও আশপাশের এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এখানে দুই ধরনের চক্র। এক ধরনের চক্র অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হলে তা ভুয়া (অন্যের) জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বর দিয়ে কেটে রাখত। পরে ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দিয়ে চড়া দামে বিক্রি করত। সফট কপি পাঠিয়ে দিয়ে বিকাশ, নগদ দিয়ে টাকা বুঝে নেয়।

তিনি বলেন, এমন চক্রের দুজনকে মৌচাক মোড়ের আশপাশের এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করি। এদের একজনের নাম—মানিক ও আরেকজন বকুল। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, মানিক মূলত সোহেল নামে একজন ও ঠাকুরগাঁওয়ে অবস্থানকারী আবু, রায়হান ও আনিস নামে আরও একজনের সঙ্গে কালোবাজারিতে আসে। তাদের কাছ থেকে আগামী ১০ দিনের টিকিট পাওয়া গেছে। এগুলোর হার্ড কপি ও সফট কপি আছে। এর মধ্যে দিনাজপুরের একতা এক্সপ্রেসের টিকিটের দাম ৩ হাজার টাকা করে বিক্রি করছে তাঁরা।

ফিরোজ কবীর বলেন, মানিক ও বকুলের দেওয়া তথ্য অনুসারে আনিস ও রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়। রায়হান একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করে। সেখানে ভুয়া সিম ও অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে অনেকগুলো টিকিট একসঙ্গে কেটে নেওয়ার দায়িত্ব সে পালন করে। এদের বড় একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। সেখানে চাহিদা ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করা হয়। আর ঢাকাতে যারা অবস্থান করছে তারাও একই কাজ করে আসছিল।

তিনি আরও বলেন, রায়হান ও আনিস টিকিট পাঠাত সোহেল ও মানিকের কাছে। আর মানিক ও বকুল ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করত। আমরা যে টিকিটগুলো পেয়েছি এখানে, সেগুলো আগামী ১০ দিনের অরিজিনাল টিকিট।

একটি বেসরকারি ট্রেনের বুকিং সহকারী এতে জড়িত উল্লেখ করে ফিরোজ কবীর বলেন, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে বেসরকারি ট্রেনের বুকিং সহকারী হিসেবে কাজ করেন আরিফুল ইসলাম। তিনিও একটি চক্র চালান। বেসরকারি ট্রেনের বুকিং সহকারী হলেও তার কাছ থেকে সরকারি ট্রেনের টিকিট পাওয়া গেছে। তিনি অনেক দিন ধরেই এগুলো করে আসছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ট্রেনের ৫০০ টিকিটসহ ১২ কালোবাজারি আটক

প্রকাশের সময় : ০৩:২৮:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঈদের সময় অনলাইন থেকে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে টিকিট কেটে রাখে একটি চক্র। এর পর সেই টিকিট সাধারণ যাত্রীদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করে তাঁরা। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব-৩ এমন দুটি চক্রের ১২ জনকে আটক করেছে। এর মধ্যে, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের বেসরকারি ট্রেনের বিক্রিয় প্রতিনিধিও আছেন। এসব কালোবাজারিরা আগামী ১০ দিনের প্রায় ৫০০ টিকিট কেটে রেখেছিল।

শুক্রবার (১৪ জুন) রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ের স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর সিও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর।

তিনি বলেন, সোহেল ও আরিফুলের দুটি চক্র ঠাকুরগাঁও ও ঢাকা থেকে কালোবাজারি পরিচালনা করত। তিনি জানান, গতকাল রাতে তারা অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা থেকে ১০ জনকে এবং ঠাকুরগাঁও থেকে ২ জনকে আটক করেন।

ফিরোজ কবীর বলেন, আমরা গত রাতে অভিযান শুরু করি। এটি চলমান অভিযান ছিল। এটা দুই থেকে তিন ধাপে পরিচালনা করা হয়। ঢাকার কমলাপুর ও আশপাশের এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এখানে দুই ধরনের চক্র। এক ধরনের চক্র অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হলে তা ভুয়া (অন্যের) জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বর দিয়ে কেটে রাখত। পরে ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দিয়ে চড়া দামে বিক্রি করত। সফট কপি পাঠিয়ে দিয়ে বিকাশ, নগদ দিয়ে টাকা বুঝে নেয়।

তিনি বলেন, এমন চক্রের দুজনকে মৌচাক মোড়ের আশপাশের এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করি। এদের একজনের নাম—মানিক ও আরেকজন বকুল। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, মানিক মূলত সোহেল নামে একজন ও ঠাকুরগাঁওয়ে অবস্থানকারী আবু, রায়হান ও আনিস নামে আরও একজনের সঙ্গে কালোবাজারিতে আসে। তাদের কাছ থেকে আগামী ১০ দিনের টিকিট পাওয়া গেছে। এগুলোর হার্ড কপি ও সফট কপি আছে। এর মধ্যে দিনাজপুরের একতা এক্সপ্রেসের টিকিটের দাম ৩ হাজার টাকা করে বিক্রি করছে তাঁরা।

ফিরোজ কবীর বলেন, মানিক ও বকুলের দেওয়া তথ্য অনুসারে আনিস ও রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়। রায়হান একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করে। সেখানে ভুয়া সিম ও অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে অনেকগুলো টিকিট একসঙ্গে কেটে নেওয়ার দায়িত্ব সে পালন করে। এদের বড় একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। সেখানে চাহিদা ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করা হয়। আর ঢাকাতে যারা অবস্থান করছে তারাও একই কাজ করে আসছিল।

তিনি আরও বলেন, রায়হান ও আনিস টিকিট পাঠাত সোহেল ও মানিকের কাছে। আর মানিক ও বকুল ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করত। আমরা যে টিকিটগুলো পেয়েছি এখানে, সেগুলো আগামী ১০ দিনের অরিজিনাল টিকিট।

একটি বেসরকারি ট্রেনের বুকিং সহকারী এতে জড়িত উল্লেখ করে ফিরোজ কবীর বলেন, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে বেসরকারি ট্রেনের বুকিং সহকারী হিসেবে কাজ করেন আরিফুল ইসলাম। তিনিও একটি চক্র চালান। বেসরকারি ট্রেনের বুকিং সহকারী হলেও তার কাছ থেকে সরকারি ট্রেনের টিকিট পাওয়া গেছে। তিনি অনেক দিন ধরেই এগুলো করে আসছিলেন।