বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
ন্যূনতম সুষ্ঠু ভোট হলে বিএনপি টু থার্ড মেজোরোটি নিয়ে সংসদে যাবে : রুমিন ফারহানা রেকর্ড গড়ে ৭ বছর পর জিম্বাবুয়ের কাছে টেস্ট হারল বাংলাদেশ একদিনের ব্যবধানে কমলো সোনার দাম কাশ্মীর ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদিকে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার মেয়ের জন্য দুবাইয়ে বাড়ি কিনলেন অভিষেক-ঐশ্বরিয়া! গণতন্ত্রের লড়াকুরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে : রিজভী টেস্ট চলাকালে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে বিসিবি কর্মকর্তার মৃত্যু সৎ মায়ের মামলায় মেহের আফরোজ শাওনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা সচিবলায় বসে সুবিধা নিচ্ছে ফ্যাসিবাদের দোসররা : মির্জা আব্বাস

‘ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা ভুলে আমাকে ইয়েমেন হামলার পরিকল্পনা জানায়’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আপডেট : মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫
‘ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা ভুলে আমাকে ইয়েমেন হামলার পরিকল্পনা জানায়’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ভুল করে একটি ম্যাসেজিং গ্রুপে ইয়েমেনের যুদ্ধ পরিকল্পনা প্রকাশ করে দিয়েছেন। ওই গ্রুপটিতে একজন সাংবাদিকও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

ওয়াশিংটন ডিসি ভিত্তিক আটলান্টিক সাময়িকীতে এ নিয়ে একটি বর্ণনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর হোয়াইট হাউজ ঘটনা স্বীকার করে।

সোমবার (২৪ মার্চ) হোয়াইট হাউজ জানায়, ইয়েমেনের হুতিদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণ শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ঘটনাটি ঘটে।

এক প্রতিবেদনে আটলান্টিকের প্রধান সম্পাদক জেফরি গোল্ডবার্গ বলেন, ১৩ মার্চ অপ্রত্যাশিতভাবে ম্যাসেজিং অ্যাপ সিগনালে তিনি ইনক্রিপ্ট করা ‘হুতি পিসি স্মল গ্রুপ’ নামের একটি চ্যাট গ্রুপে আমন্ত্রণ পান। এই গ্রুপে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ তার ডেপুটি অ্যালেক্স ওয়াংকে হুতিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণ সমন্বয় করতে ‘টাইগার টিম’ তৈরি করার কাজ দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র ব্রায়ান হিউজ জানান, চ্যাট গ্রুপটি আসল বলে মনে হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ১৫ মার্চ থেকে হুতিদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আক্রমণ শুরু করেছেন যা এখনও চলমান। হুতিদের প্রধান সমর্থক ইরানকে অবিলম্বে গোষ্ঠীটিকে সমর্থন দেওয়া বন্ধ করার জন্য সতর্ক করেছেন তিনি।

এই আক্রমণ শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ হামলা পরিকল্পনার বিস্তারিত ওই ম্যাসেজিং অ্যাপে পোস্ট করেন।

গোল্ডবার্গ লিখেছেন, এতে লক্ষ্যস্থল, আক্রমণের ক্রম ও যুক্তরাষ্ট্র যেসব অস্ত্র মোতায়েন করবে সে বিষয়ে তথ্য ছিল।

রয়টার্স জানিয়েছে, গোল্ডবার্গের প্রতিবেদনে ওই পোস্টের বিস্তারিত তথ্য বাদ দেওয়া হয়েছে কিন্তু তিনি সিগন্যাল চ্যাটে এসব তথ্য শেয়ার করার ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত আপত্তিকর রকম বেপরোয়া’ বলে উল্লেখ করেছেন।

ওই চ্যাট গ্রুপে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, সিআইএ এর পরিচালক জন র‌্যাটক্লিফ, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড, অর্থমন্ত্রী স্কট ব্যাসেন্ট, হোয়াইট হাউজের চিফ অব স্টাফ সুজি ওয়াইলস এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের কর্মকর্তারা যুক্ত ছিলেন বলে গোল্ড বার্গ জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল কাউন্টারটেরোরিজম সেন্টারের পরিচালক হিসেবে ট্রাম্পের মনোনীত জো কেন্টও এই চ্যাট গ্রুপটিতে ছিলেন, যদিও তার নিয়োগ এখনও মার্কিন সেনেটের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

আলাপচারিতার যে স্ক্রিনশট আটলান্টিক তুলে ধরেছে তাতে দেখা যায়, ওই গ্রুপে কর্মকর্তারা ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের এই আঘাত হানা উচিত হবে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক করছেন আর এক পর্যায়ে সম্ভবত ভ্যান্স প্রশ্ন তুলেন, লোহিত সাগরে হুতিদের হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্রদের ঝুঁকি বেশি, তাদের মার্কিন সাহায্য প্রাপ্য কি না।

ভ্যান্স বলে শনাক্ত হওয়া এক ব্যক্তি লিখেছেন, পিটহেগসেথ আপনি যদি মনে করে এটি আমাদের করা উচিত তাহলে এগিয়ে যান। ইউরোপকে আবারও ছাড় দেওয়ার বিষয়টি ঘৃণা করি আমি। আমাদের বার্তা সেখানে কঠোরভাবে পৌঁছেছে আসুন এটি নিশ্চিত করি আমরা।

হেগসেথ বলে শনাক্ত হওয়া ব্যক্তি উত্তরে বলেন, ভিপি: ইউরোপের এই বিনা খরচে লাভের প্রতি তোমার ঘৃণা আমি পুরোপুরি সহভাগ (শেয়ার) করে নিচ্ছি। এটি শোচনীয়।

এ বিষয়ে ইয়েমেন, হুতিদের মিত্র ইরান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনৈতিক বিভাগ রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।

গোপনীয় তথ্য ফাঁস করা, এর ভুল ব্যবহার, অপব্যবহার যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী অপরাধ হতে পারে। তবে এই ঘটনায় এসব বিধানের কোনোটির লঙ্ঘন হয়েছে কি না, তা পরিষ্কার না। আটলান্টিকের প্রতিবেদনে ওয়াল্টজের সেট করা বলে কথিত বার্তাগুলো একটা সময় পরে সিগন্যাল অ্যাপ থেকে উধাও হয়ে গেছে; এই বিষয়টিও যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রেকর্ড রাখার যে আইন তা লঙ্ঘন করেছে কি না, এমন প্রশ্নও উঠেছে।

ডেমোক্র্যাট দলীয় আইনপ্রণেতারা দ্রুততার সঙ্গে এই ‘যুদ্ধ পরিকল্পনা প্রকাশের’ তীব্র নিন্দা জানান। এই ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার ও আইনের লঙ্ঘন অভিহিত করে এর তদন্ত মার্কিন কংগ্রেসের মাধ্যমে হতে হবে বলে দাবি করেন তারা।

হোয়াইট হাউজে ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, তিনি এই ঘটনার বিষয়ে কিছু জানেন না। ট্রাম্প বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমি আটলান্টিকের বড় কোনো ভক্ত না।”

পরে হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা জানান, এ ঘটনার বিষয়ে একটি তদন্ত শুরু করা হয়েছে এবং ট্রাম্পকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

হেগসেথ ওই গ্রুপ চ্যাটে যুদ্ধ পরিকল্পনা শেয়ার করার কথা অস্বীকার করেছেন।

সোমবার হাওয়াইতে এক দাপ্তরিক সফরে থাকা হেগসেথ সাংবাদিকদের বলেছেন, কেউ যুদ্ধ পরিকল্পনা টেক্সট করে না। এ বিষয়ে আমি শুধু এটাই বলতে পারি।

এদিকে সোমবার রাতে সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গোল্ডবার্গ হেগসেথের দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, না, এটি একটি মিথ্যা কথা। সে যুদ্ধ পরিকল্পনা টেক্সট করেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া