বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও চলচ্চিত্র প্রযোজক-চিত্রনায়ক জায়েদ খানকে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে চলচ্চিত্রের প্রযোজক-পরিচালকসহ ১৮ টি সংগঠন। চলচ্চিত্রের স্বার্থ বিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে এই বয়কটের ঘোষণাকে ভালোভাবে গ্রহণ করেনি সিনিয়র শিল্পীরা।
বিষয়টি নিয়ে এবার মুখ খুললেন কিংবদন্তি অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক মাসুম পারভেজ সোহেল রানা।
বরেণ্য এই অভিনেতা বলেন, করোনার এই সময়ে এই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ হয়নি বলে আমি মনে করি। কারণ করোনাকালে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বর্তমান কমিটির সদস্যরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি অনেকে জায়েদকে প্রশংসা করেছেন। যেখানে চিকিৎসকরা পর্যন্ত সেবা দিতে ভয় পাচ্ছেন। সেখানে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির তাদের চেহারা দেখিয়ে ফান্ড কালেকশন করে নয় বার সাহায্য করেছে। এটা যদি প্রশংসা না করে সমালোচনা করেন। তাহলে কাজ করতে পারবেন যে কেউ এসে। একটা ডিসিশন নেয়ার আগে যাকে নিষিদ্ধ হওয়া হয় বা তার বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশন দিতে হয় তাহলে অবশ্যই তাকে আত্মসমর্পণ করার সুযোগ দেয়া দরকার। একটা লোককে ফাঁসি দিতে হলেও তো জিজ্ঞাসা করা হয় যে তুমি খুন করেছো কি-না। শিল্পী সমিতির যারা সিনিয়র সদস্য আছেন তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেও কাজটা করতে পারতেন।
সোহেল রানা আরও বলেন, কারও বিরুদ্ধে একটা ডিসিশন নিতে হলে তাকে তো কথার বলার সুযোগ দেয়া উচিৎ। যে কোনো তিনি এই কাজগুলো করেছেন। কিন্তু হুট করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়মতান্ত্রিক হয়েছে বলে মনে করি না। যটুকু শুনলাম তাতে মনে হচ্ছে একতরফা সিদ্ধান্ত হয়েছে মনে হচ্ছে। চার থেকে পাঁচটা প্রধান সমিতি বাকি যেগুলো আছে সেগুলো সহযোগী সংগঠন। আমি জেনেছি, কম বেশি সব সংগঠনকে শিল্পী সমিতির করোনার সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের অনেক অবদান রেখেছেন সদ্য প্রায়ত কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। তার শেষকৃত্যে অনুষ্ঠানে রাজশাহীতে চলচ্চিত্রের কয়টা সংগঠনের নেতারা গিয়েছেন? জায়েদ এই করোনা উপেক্ষা করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির পক্ষে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে গিয়েছে ঢাকা থেকে রাজশাহীতে। এটা যদি আপনার সুদৃষ্টিতে না দেখেন তাহলে হবে না। একজন মানুষ একটি দায়িত্বে থাকলে ভুলভান্তি হতে পারে সে তো একজন মানুষ। সেই জন্য তাকে সতর্ক না করে একবারে নিষিদ্ধ করা সিদ্ধান্তটা সঠিক বলে মনে করি না আমি।
তিনি আরও বলেন, একজন প্রযোজক অর্থ ব্যয় করেন চলচ্চিত্র নির্মাণ করার জন্য এবং পরিচালক একজন গল্পকে উপস্থাপন করে দর্শকের সামনে। কিন্তু একজন শিল্পীর চরিত্র বিক্রি করে কিন্তু সিনেমাটা চলে। তাই কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে শিল্পী সমিতির অন্য যারা সিনিয়র সদস্যরা আছে তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করা উচিত ছিল। বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের বর্তমান যে অবস্থা সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এমন সিদ্ধান্ত কাম্য নয়।