স্নেহের ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই ছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পরম স্নেহের। ছোটবেলা থেকেই তাকে স্নেহ করতেন রাষ্ট্রপতি।
কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার নিভৃত হাওর জনপদ কামালপুর গ্রামে জন্ম নেন মো. আবদুল হাই। বাবা মরহুম হাজী তৈয়ব আলীর ৫ ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে আবদুল হাই ছিলেন চতুর্থ। বড় ভাই আব্দুল গনি ও আব্দুর রাজ্জাক মারা গেছেন। রাষ্ট্রপতির একমাত্র ছোট বোন আছিয়া আলম বর্তমানে মিঠামইন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। এরপরই ছিলেন আবদুল হাই।
স্থানীয় একটি মাদরাসায় কিছুদিন লেখাপড়া করার পর স্কুলে ভর্তি হন আবদুল হাই। এরপর গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৭১ সালে বড় ভাই রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। পরে মিঠামইনে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক নূরু ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন তিনি।
ব্যক্তিগত জীবনে আবদুল হাই বিবাহিত। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। দুই মেয়ে চিকিৎসক ও ছেলে প্রকৌশলী।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জাতীয় সংসদের ডিপুটি স্পিকার হলে আবদুল হাই তার সহকারী একান্ত সচিব হিসেবে যোগ দেন। আবদুল হামিদ জাতীয় সংসদের স্পিকার হলে তাকে আবারও সহকারী একান্ত সচিব করা হয়।
পরে মো. আবদুল হামিদ রাষ্ট্রপতি হলে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইকে জাতীয় সংসদের উপ-পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। সেখান থেকে অবসরে যাওয়ার পর নিজের ভাইকে আবারও কাছে টেনে নেন রাষ্ট্রপতি। তাকে রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ দেন। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির আগ পর্যন্ত বাবার স্নেহে আগলে রাখা বড় ভাই মো. আবদুল হামিদের কাছেই ছিলেন আবদুল হাই।
একজন সৎ, বিনয়ী, সংস্কৃতিমনা সাদা মনের মানুষ হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.আবদুল হাই। তার সরলতা ও সহজিয়া চরিত্রের জন্য আত্মীয়-স্বজন ও বড় ভাইয়ের কাছে তিনি ছিলেন কাছের মানুষ।
শুক্রবার (১৭ জুলাই) রাত একটার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ছোট ভাই ও সহকারী একান্ত সচিব মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।