Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খাশোগির স্ত্রীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিল যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

পাঁচ বছর আগে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে খুন হওয়া সাংবাদিক জামাল খাশুগজির স্ত্রীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রায় সাড়ে তিন বছরের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্যে যাওয়ার পর খাশুগজির স্ত্রী হানান এলাতরকে এই সুবিধা দিল যুক্তরাষ্ট্র।

২০১৮ সালের অক্টোবরে সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খুন হন। মার্কিন গোয়েন্দাদের ধারণা, তার মৃত্যুর পেছনে সৌদি আরবের হাত রয়েছে। স্বামী নিহত হওয়ার পর নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন জামালের স্ত্রী হান্নান ইলাতর। এমন পরিস্থিতিতে ২০২০ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন তিনি।

গত ২৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্র তাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে বিবিসি।

আশ্রয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর আবেগাপ্লুত হানান এলাতর বিবিসিকে বলেন, আমরা জয়ী হয়েছি। হ্যা তারা (খুনিরা) জামালের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এবং আমার জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে, কিন্তু আমরা জিতে গেছি।

তিন বছর আগে হান্নান যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন। তিনি জানান, মিসর বা সংযুক্ত আরব আমিরাত ফিরে গেলে তার জীবন হুমকির মুখে পড়বে। তিনি মিসরে জন্মগ্রহণ করলেও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৫ বছরের বেশি সময় বসবাস করেছেন।

চাকরি এবং নিজের স্বাভাবিক জীবন ছেড়ে কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডে সেই ভয় নিয়েই বসবাস করছিলেন এমিরেটসের সাবেক ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট এলাতার।

এরপর তিনি ২০২১ সালে সেখানে কাজের অনুমতি পান বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী র‌্যান্ডা ফাহমি। এলাতরের এখন একটি চাকরি এবং অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।

হান্নানের আইনজীবী রান্ডা ফাহমি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, হান্নান আমিরাতে সব কিছু ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে বসবাস করছেন। যদিও এখানে তিনি নিরাপত্তা নিয়ে ভীত ছিলেন। ২০২১ সালের অক্টোবরে তিনি মার্কিন ওয়ার্ক পারমিট লাভ করেন। এরপর এখানে নতুন জীবন শুরু করেন। বর্তমানে তার একটি চাকরি ও অ্যাপার্টমেন্ট ভবন থাকলেও জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহে হিমশিম খাচ্ছেন।

রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে অনেক সময় লাগলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক জামালের স্ত্রী। তিনি বলেন, ‘অবশেষে আমার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দরজা খুলেছে। এতদিন যে ভয়ের মধ্যে ছিলাম তা থেকে মুক্তি পেলাম।’ একই সঙ্গে এই আশ্রয় লাভের ফলে সাংবাদিক জামালকে ন্যায়বিচার দিতে দায়েরকৃত মামলা আরও সামনে এগিয়ে নেওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।

দীর্ঘ সময় লাগলেও তার ‘দরজা খুলে দেওয়ায়’ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং তার প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

এলাতারের ভাষ্য তিনি ‘ভয় বোধ থেকে মুক্তি পেয়েছেন’।

২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে খাশুগজিকে হত্যা করে তার লাশ গুম করে ফেলে সৌদি গোয়েন্দারা।

বেশ কয়েকবছর ধরে সৌদি আরবের ‘প্রকৃত’ শাসকের ভূমিকায় থাকা ‘এমবিএস’ নামে পরিচিত মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশেই এ হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে বলে ধারণা মার্কিন গোয়েন্দাদের।

যুবরাজ মোহাম্মদ অবশ্য শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন; যদিও দাবি করেছেন, হত্যাকারীরা ‘তার ছত্রছায়ায় থেকে’ এ কাণ্ড ঘটিয়েছে।

আবহাওয়া

বদলির চিঠি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলায় ৮ কর কর্মকর্তা বরখাস্ত

খাশোগির স্ত্রীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিল যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশের সময় : ১০:৪৩:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

পাঁচ বছর আগে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে খুন হওয়া সাংবাদিক জামাল খাশুগজির স্ত্রীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রায় সাড়ে তিন বছরের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্যে যাওয়ার পর খাশুগজির স্ত্রী হানান এলাতরকে এই সুবিধা দিল যুক্তরাষ্ট্র।

২০১৮ সালের অক্টোবরে সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খুন হন। মার্কিন গোয়েন্দাদের ধারণা, তার মৃত্যুর পেছনে সৌদি আরবের হাত রয়েছে। স্বামী নিহত হওয়ার পর নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন জামালের স্ত্রী হান্নান ইলাতর। এমন পরিস্থিতিতে ২০২০ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন তিনি।

গত ২৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্র তাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে বিবিসি।

আশ্রয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর আবেগাপ্লুত হানান এলাতর বিবিসিকে বলেন, আমরা জয়ী হয়েছি। হ্যা তারা (খুনিরা) জামালের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এবং আমার জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে, কিন্তু আমরা জিতে গেছি।

তিন বছর আগে হান্নান যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন। তিনি জানান, মিসর বা সংযুক্ত আরব আমিরাত ফিরে গেলে তার জীবন হুমকির মুখে পড়বে। তিনি মিসরে জন্মগ্রহণ করলেও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৫ বছরের বেশি সময় বসবাস করেছেন।

চাকরি এবং নিজের স্বাভাবিক জীবন ছেড়ে কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডে সেই ভয় নিয়েই বসবাস করছিলেন এমিরেটসের সাবেক ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট এলাতার।

এরপর তিনি ২০২১ সালে সেখানে কাজের অনুমতি পান বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী র‌্যান্ডা ফাহমি। এলাতরের এখন একটি চাকরি এবং অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।

হান্নানের আইনজীবী রান্ডা ফাহমি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, হান্নান আমিরাতে সব কিছু ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে বসবাস করছেন। যদিও এখানে তিনি নিরাপত্তা নিয়ে ভীত ছিলেন। ২০২১ সালের অক্টোবরে তিনি মার্কিন ওয়ার্ক পারমিট লাভ করেন। এরপর এখানে নতুন জীবন শুরু করেন। বর্তমানে তার একটি চাকরি ও অ্যাপার্টমেন্ট ভবন থাকলেও জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহে হিমশিম খাচ্ছেন।

রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে অনেক সময় লাগলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক জামালের স্ত্রী। তিনি বলেন, ‘অবশেষে আমার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দরজা খুলেছে। এতদিন যে ভয়ের মধ্যে ছিলাম তা থেকে মুক্তি পেলাম।’ একই সঙ্গে এই আশ্রয় লাভের ফলে সাংবাদিক জামালকে ন্যায়বিচার দিতে দায়েরকৃত মামলা আরও সামনে এগিয়ে নেওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।

দীর্ঘ সময় লাগলেও তার ‘দরজা খুলে দেওয়ায়’ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং তার প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

এলাতারের ভাষ্য তিনি ‘ভয় বোধ থেকে মুক্তি পেয়েছেন’।

২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে খাশুগজিকে হত্যা করে তার লাশ গুম করে ফেলে সৌদি গোয়েন্দারা।

বেশ কয়েকবছর ধরে সৌদি আরবের ‘প্রকৃত’ শাসকের ভূমিকায় থাকা ‘এমবিএস’ নামে পরিচিত মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশেই এ হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে বলে ধারণা মার্কিন গোয়েন্দাদের।

যুবরাজ মোহাম্মদ অবশ্য শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন; যদিও দাবি করেছেন, হত্যাকারীরা ‘তার ছত্রছায়ায় থেকে’ এ কাণ্ড ঘটিয়েছে।