চীনে যখন টিকার তৃতীয় দফার ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা চলছিল জুলাইয়ে, তখনই করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট জনসাধারণের ওপর ওই টিকা প্রয়োগ করে চীন। তাদের এই কর্মকান্ডে সমর্থন ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে উদ্ধৃত করে অনলাইন দ্য হিল দিয়েছে এ তথ্য।
একদিকে করোনা ভাইরাসের টিকার পরীক্ষা চলছে। অন্যদিকে হাজার হাজার মানুষকে এই ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দিতে সেই টিকা প্রয়োগ করেছে চীন। তাদের এমন সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের কর্মকর্তা ঝেং ঝোংওয়েই বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে জুনে যোগাযোগ করার পর জুলাই মাসে চীন তার এই জরুরি কর্মসূচি চালু করে। ২৯ শে জুন আমরা অনুমোদন পাওয়ার পর চীনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং তারা আমাদের সমর্থন করেন।
ওদিকে যেসব মানুষের ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে তারা হলেন স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মী ও সীমান্ত কর্মকর্তারা। তাদেরকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ গ্রুপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা চলাকালে তাদেরকে প্রথম এই টিকা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : জানুয়ারিতে বাজারে আসতে পারে দেশি ভ্যাকসিন!
কিন্তু টিকার পরীক্ষা যখন চলছে, এখনও এর শেষ হয়নি, তখন এভাবে সাধারণ মানুষের ওপর টিকা প্রয়োগের কারণে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে রিপোর্ট করেছে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহকারী মহাপরিচালক মারিঙ্গেলা সিমাও শুক্রবার বলেছেন, যেসব দেশের স্বায়ত্তশাসন আছে তারা যেকোনো স্বাস্থ্য বিষয়ক পণ্য ব্যবহারে ইমার্জেন্সির কথা বলে তাদের কর্তৃত্বের প্রয়োগ ঘটাতে পারে।
তারা এক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব নিয়মনীতি ও আইনের উল্লেখ করে। এ মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী বলেছেন, কোভিড-১৯ টিকার ইমার্জেন্সি ব্যবহারে কর্তৃপক্ষের অনুমতি দেয়া হতে পারে একটি অস্থায়ী সমাধান। তৃতীয় দফার পরীক্ষা সম্পন্ন হলে দীর্ঘমেয়াদে তা হতে পারে একটি সমাধান।
চীনে বর্তমানে করোনা ভাইরাসের তিনটি টিকার পরীক্ষা চলছে। এগুলোর পরীক্ষা চলছে বিদেশে। ব্যবহার করা হচ্ছে ইমার্জেন্সি কর্মসূচিতে। তবে এ কর্মসূচি সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ বা বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি বেইজিং।
ঝেং বলেছেন, ২০২০ সালের শেষ নাগাদ তারা ৬১ কোটি ডোজ করোনার টিকা তৈরি করতে চান। ২০২১ সাল নাগাদ তা দাঁড়াবে ১০০ কোটি ডোজ। তিনি আরো বলেন, চীনে বসবাসকারীদের জন্য এই টিকা হবে সামর্থের মধ্যে এবং পাওয়া যাবে হাতের নাগালে।