Dhaka মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৭১-এর মতোই এখন বাংলাদেশের আন্দোলন সারা পৃথিবী সমর্থন করছে : মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : 

১৯৭১ সালের মতোই এখন বাংলাদেশের আন্দোলনকে সারা পৃথিবী সমর্থন করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (৩০ জুন) সকালে ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ি এলাকার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, এখন বিশ্ব বলা শুরু করেছে, বাংলাদেশে একটা নিরপেক্ষ সরকার দরকার। যে সরকারের অধীনে সুষ্ঠু, অবাধ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। এ কারণেই আন্দোলন হচ্ছে। আন্দোলন প্রতিদিন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে বলেই সারা পৃথিবীর জনগণ এই আন্দোলনকে সমর্থন করছে। ঠিক যেভাবে ১৯৭১ সালে বাংলাদের আন্দোলনকে সারা পৃথিবী সমর্থন করেছিল।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে কখনো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সেই কারণে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার দরকার, যা আমরা বারবার বলে আসছি। এই বিষয়ে এখন সকল দল এবং সারা বিশ্বও বলা শুরু করেছে।

তিনি বলেন, সরকারের যত অপকর্ম, দুঃশাসন, দুর্নীতি কেমন একটা পর্যায়ে চলে গেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যে নির্বাচনের বিষয় ছিল তা বাতিল করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার লক্ষ্যে তারা এই কাজটি করেছে। কিন্তু মানুষ এখন পুরোপুরি ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। তারা এখন পরিবর্তনের জন্য আন্দোলনের দিকে যাচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, মুখে মুখে জামায়াত বিরোধিতার ধোঁয়া তুললেও সরকারের সঙ্গে জামায়াতের যোগাযোগ এখন স্পষ্ট হয়েছে। জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই সরকারকে তারা দেখতে চায় না। সরকার নিজেরাই রাজনৈতিক সংকট তৈরি করে রেখেছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েমের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগে সব সময় বলা হত আমরা সহিংসতা করি। তবে গত কয়েক বছরে আমরা এটা প্রমাণ করেছি যে আমরা কোনো ধরনের সহিংসতা করি না। সহিংসতা করে সরকারি দলের লোকজন। পরে তারা উল্টো বিএনপির ওপর দোষ চাপাতে চায়। তবে এবার দোষ চাপানোর সুযোগ পায়নি। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে বিএনপি জনগণের দল। আর বিএনপি জনগণের অধিকার আদায়ে কাজ করে যাচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণ এই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আন্দোলনের একটা ধাপ আছে, কখনও এটা ওঠে কখনও নামে। গত কয়েক বছরে প্রমাণ হয়েছে, বিএনপি ভায়োলেন্স (সহিংসতা) করে না। ভায়োলেন্সটা করে সরকারি দলের লোকেরাই এবং এজেন্সিগুলো। উল্টো তারা দোষ চাপাতে চায় কিন্তু এবার তারা সেই দোষ চাপানোর সুযোগ পায়নি।

তিনি বলেন, বিএনপি মৌলিক কতগুলো বিষয় নিয়ে আন্দোলন করছে। একটা কথা সর্বজনীন স্বীকৃত যে এই সরকার যদি ক্ষমতায় থাকে তাহলে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। সব গণতান্ত্রিক দল বলছে, এখন আন্তর্জাতিক বিশ্বও বলছে।

জামায়াতে ইসলামী বা জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোটের বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যারা নিরপেক্ষ সরকার চাই তাদের সঙ্গে আমরা আছি। আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলে পরামর্শ নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের একটি রূপরেখা তৈরি করতে চাই।

ব্রিকসে যাওয়ার বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এটি সুবিধাবাদী পদক্ষেপ। যখন তাদেরকে (আওয়ামী লীগ) পশ্চিমা বিশ্ব গ্রহণ করছে না তখনই তারা ব্রিকসে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু এতে কোনো লাভ হবে না, কারণ মূল সমস্যা হচ্ছে দুর্নীতি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।

এর আগে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হওয়া বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত চার সংবাদকর্মীসহ পাঁচ জনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং মামলা সম্পর্কে খোঁজ নেন মির্জা ফখরুল।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

৭১-এর মতোই এখন বাংলাদেশের আন্দোলন সারা পৃথিবী সমর্থন করছে : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৩:২৪:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ জুন ২০২৩

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : 

১৯৭১ সালের মতোই এখন বাংলাদেশের আন্দোলনকে সারা পৃথিবী সমর্থন করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (৩০ জুন) সকালে ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ি এলাকার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, এখন বিশ্ব বলা শুরু করেছে, বাংলাদেশে একটা নিরপেক্ষ সরকার দরকার। যে সরকারের অধীনে সুষ্ঠু, অবাধ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। এ কারণেই আন্দোলন হচ্ছে। আন্দোলন প্রতিদিন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে বলেই সারা পৃথিবীর জনগণ এই আন্দোলনকে সমর্থন করছে। ঠিক যেভাবে ১৯৭১ সালে বাংলাদের আন্দোলনকে সারা পৃথিবী সমর্থন করেছিল।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে কখনো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সেই কারণে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার দরকার, যা আমরা বারবার বলে আসছি। এই বিষয়ে এখন সকল দল এবং সারা বিশ্বও বলা শুরু করেছে।

তিনি বলেন, সরকারের যত অপকর্ম, দুঃশাসন, দুর্নীতি কেমন একটা পর্যায়ে চলে গেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যে নির্বাচনের বিষয় ছিল তা বাতিল করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার লক্ষ্যে তারা এই কাজটি করেছে। কিন্তু মানুষ এখন পুরোপুরি ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। তারা এখন পরিবর্তনের জন্য আন্দোলনের দিকে যাচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, মুখে মুখে জামায়াত বিরোধিতার ধোঁয়া তুললেও সরকারের সঙ্গে জামায়াতের যোগাযোগ এখন স্পষ্ট হয়েছে। জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই সরকারকে তারা দেখতে চায় না। সরকার নিজেরাই রাজনৈতিক সংকট তৈরি করে রেখেছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েমের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগে সব সময় বলা হত আমরা সহিংসতা করি। তবে গত কয়েক বছরে আমরা এটা প্রমাণ করেছি যে আমরা কোনো ধরনের সহিংসতা করি না। সহিংসতা করে সরকারি দলের লোকজন। পরে তারা উল্টো বিএনপির ওপর দোষ চাপাতে চায়। তবে এবার দোষ চাপানোর সুযোগ পায়নি। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে বিএনপি জনগণের দল। আর বিএনপি জনগণের অধিকার আদায়ে কাজ করে যাচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণ এই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আন্দোলনের একটা ধাপ আছে, কখনও এটা ওঠে কখনও নামে। গত কয়েক বছরে প্রমাণ হয়েছে, বিএনপি ভায়োলেন্স (সহিংসতা) করে না। ভায়োলেন্সটা করে সরকারি দলের লোকেরাই এবং এজেন্সিগুলো। উল্টো তারা দোষ চাপাতে চায় কিন্তু এবার তারা সেই দোষ চাপানোর সুযোগ পায়নি।

তিনি বলেন, বিএনপি মৌলিক কতগুলো বিষয় নিয়ে আন্দোলন করছে। একটা কথা সর্বজনীন স্বীকৃত যে এই সরকার যদি ক্ষমতায় থাকে তাহলে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। সব গণতান্ত্রিক দল বলছে, এখন আন্তর্জাতিক বিশ্বও বলছে।

জামায়াতে ইসলামী বা জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোটের বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যারা নিরপেক্ষ সরকার চাই তাদের সঙ্গে আমরা আছি। আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলে পরামর্শ নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের একটি রূপরেখা তৈরি করতে চাই।

ব্রিকসে যাওয়ার বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এটি সুবিধাবাদী পদক্ষেপ। যখন তাদেরকে (আওয়ামী লীগ) পশ্চিমা বিশ্ব গ্রহণ করছে না তখনই তারা ব্রিকসে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু এতে কোনো লাভ হবে না, কারণ মূল সমস্যা হচ্ছে দুর্নীতি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।

এর আগে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হওয়া বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত চার সংবাদকর্মীসহ পাঁচ জনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং মামলা সম্পর্কে খোঁজ নেন মির্জা ফখরুল।