নিজস্ব প্রতিবেদক :
কোনো ব্যক্তি ৬০ বিঘার অতিরিক্ত কৃষিজমি রাখতে পারবেন না। এমনকী উত্তরাধিকার সূত্রে পেলেও পছন্দমতো ৬০ বিঘা রেখে অতিরিক্ত জমি সরকারকে ছেড়ে দিতে হবে। সরকার ক্ষতিপূরণ দিয়ে অতিরিক্ত জমি নিতে খাস করতে পারবে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান ভূমিমন্ত্রী। জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, আপাতত এ আইনে কোনো ব্যক্তি ৬০ বিঘার বেশি জমি রাখতে পারবেন না। কোনো কোম্পানি অনুমতি নিয়ে ৫০০-১০০০ বিঘা রাখতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে আমরা দেখবো কী কারণে তারা নিতে চায়। তবে ব্যক্তি ৬০ বিঘার বেশি জমির মালিক হতে পারবে না।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আমলে এটি ছিল ১০০ বিঘা। এরশাদ সাহেব এসে ৬০ বিঘা করেছেন। উত্তরাধিকার সূত্রে কোনো ব্যক্তির অর্জিত জমি ৬০ বিঘার বেশি হলে ভূমির মালিক তার পছন্দ অনুযায়ী ৬০ বিঘা জমি রাখতে পারবেন। বাকি জমি সরকার বিধি দিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে ক্ষতিপূরণ প্রদান করে খাস করতে পারবে।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আইনের পাঁচ নম্বরে বলা আছে, উত্তরাধিকার সূত্রে অর্জিত জমি ৬০ বিঘার বেশি হলে ভূমির মালিক তার পছন্দ অনুসারে ৬০ বিঘা জমি রাখতে পারবেন। অবশিষ্ট জমি সরকারি বিধির মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে খাস করতে পারবেন। ৬০ বিঘার বেশি থাকলে সেটি কেউ বিক্রিও করে দিতে পারেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কার কার ৬০ বিঘার বেশি জমি আছে আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত ডাটাবেজ আসছে। তখন সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। দেশের যেকোনো জায়গায় জমি থাক না কেন, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ডাটাবেজ দেখে বলা যাবে। এমন না যে আপনি চট্টগ্রামে কিছু কিনলেন, আবার রংপুরে কিনলেন, এভাবে ফাঁকি দিলেন। তা পারবেন না, ডাটাবেজে সব চলে আসবে।
পাস হওয়া ‘ভূমি অপরাধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’এর বিষয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে দেশবাসী এ আইনটির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। মাঝপথে অনেকে একটু হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন যে এটা হয়তো আর আলোর মুখ দেখবে না। আল্লাহর অশেষ রহমত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতার কারণে আমরা জাতিকে একটি সুন্দর বিল উপহার দিতে সক্ষম হয়েছি। এটা খুবই প্রয়োজন ছিল। এটা আমাদের বিশাল অর্জন।
তিনি বলেন, এটা একটা বিশাল জিনিস এবং এটা অনেক জটিল। এই জটিলে হাত দেওয়াটা একটা সাহসিকতার বিষয় ছিল এবং শুরুতে আমাকে অনেকেই বলেছিল যে এটতে হাত দেওয়াটা কি উচিত হবে কি না এবং হাত দিলে হাত পুড়েও যেতে পারে। কারণ এটা খুব সেনসিটিভ। এখানে আইনের অনেক বিষয় আছে। তাকে বললাম, আমারতো সিনসিয়ারিটি আছে এবং প্রধানমন্ত্রীও চান এদেশের মানুষকে সেবা দিতে। আমরা সেবক হিসেবে থাকতে চাই। সুতরাং উনার যেহেতু সাপোর্ট আছে, আমার মনে হয় আল্লাহর রহমতে আমি যদি চেষ্টা করি, সেটা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন আইনটি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করবো, তখন যদি অভিজ্ঞতার আলোকে আইনটি সংশোধন করার প্রয়োজন হয়, এটার প্রয়োজন হবে, সেটা আমরা করবো।’
তিনি আরও বলেন, এটার পেছনে অনেক কাজ করতে হয়েছে। পেছনের চিত্র আপনারা অনেক কিছু দেখেননি। আমাদের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাই সার্বিকভাবে কাজ করেছেন। উনাদের আন্তরিকতার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। না হলে কিন্তু আমার একার পক্ষে এটা সম্ভব হতো না।