দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে রাজধানীর যোগাযোগ আরো সহজ করতে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে মধুমতি নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে কালনা সেতু। দেশের প্রথম ৬ লেনের এই সেতু নান্দনিকতা আর শৈল্পীক কারুকার্যে অনন্য। কালনা সেতু নির্মিত হলে যশোরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার সাথে রাজধানীর দূরত্ব কমবে ৬০ থেকে ৬৫ কিলোমিটার। বেনাপোল স্থলবন্দরের সাথেও যোগাযোগ আরো সহজ হবে। এখন চলছে প্রকল্পের শেষ মুহূর্তের কর্মযজ্ঞ। চলতি মাসের শেষ দিকে সেতুটি উদ্বোধনের সম্ভাবনা আছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।
তুলসীগঙ্গা নদীর ওপর সেতুর দাবি
নীরব আর শান্ত স্বভাবের নদী মধুমতি। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে এই নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে ধনুক আকৃতির দৃষ্টি নন্দন কালনা সেতু। ১৪টি পিলারের ওপর ১৩টি স্প্যানকে যুক্ত করে সেতুটি নির্মিত হয়েছে। এখন উদ্বোধনের আগে শেষ সময়ের কর্মব্যস্ততা চলছে প্রকল্পজুড়ে।
কালনা সেতু নির্মাণ শৈলীর কারণে অন্যান্য সেতুর চেয়ে কিছুটা স্বতন্ত্র। দেশের প্রথম ৬ লেনের এই সেতুর মাঝের ৪টি লেন দিয়ে পারাপার হবে দ্রুতগামী যানবাহন। আর দুই পাশের বাকি দুই লেন দিয়ে চলবে মাঝারি ও স্বল্প গতির বাহন। সেতুর মাঝের অংশে রয়েছে ১৫০ মিটার ধনুক আকৃতির স্টিলের অবকাঠামোর ওপর কংক্রিটের ঢালাই।
এই সেতু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ করে দেবে। মধুমতি নদীর কালনা ঘাটে গোপালগঞ্জ ও নড়াইলের মধ্যে যানবাহন পারাপারে ফেরির ব্যবস্থা থাকলেও তা পার হতে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রী এবং পরিবহন সংশ্লিষ্টদের। কালনা সেতু উদ্বোধন হলে সেই কষ্ট লাঘব হবে।
সেতুর গোপালগঞ্জ অংশে ৬ লেনের প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মিত হয়েছে। আর নড়াইল অংশে প্রায় পাঁচশ মিটার। উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা কালনা সেতুতে এখন সড়ক বাতি আর পথ নির্দেশিকা চিহ্ন বসানো বাকি।
সেতুর গোপালগঞ্জ অংশে নির্মিত হচ্ছে টোল প্লাজা। যেখানে একই সাথে ৮টি লেনে যানবাহন টোল দিতে পারবে। প্রকল্প পরিচালক জানান, জাইকার অর্থায়নে এবং জাপান ও বাংলাদেশের তিন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কালনা সেতু বাস্তবায়নের কাজ করছে।
এশিয়ান হাইওয়ের অংশ হিসেবে কালনা সেতুর নড়াইল অংশের সরু সড়কটি এক্সপ্রেসওয়ের আদলে তৈরী হবে। এই সেতু উদ্বোধন হলে প্রায় ৫০ বছর ধরে ফেরী পরাপারের কষ্ট লাঘব হবে এই এলাকার মানুষের। পাশাপাশি পদ্মা সেতুর শতভাগ সুফল পাবে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ।