Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৪০ বছর হয়নি সংযোগ সড়ক, দুর্ভোগ ৫ গ্রামের মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের চাকল বিলের মাঝে ৪০ বছর পূর্বে সেতু ও মাটির সড়ক নির্মিত হয়েছিল।  কয়েক যুগ পেড়িয়ে গেলেও সেতুটি ব্যবহার করতে পারেনি এই এলাকার মানুষ। কারণ বিলের থইথই পানির ভেতর সেতু নির্মাণ হলেও ছিল না কোনো সড়ক। বর্ষায় উত্তাল ঢেউয়ে সড়কটির অস্তিত্ব বিলীন হয়েগেছে। ৪০ বছর যাবৎ সেতুটি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকলেও নতুন করে সংযোগ সড়ক নির্মিত হয়নি। ফলে কাজে আসেছে না সেতুটি। এখন সেতুটি ব্যবহার উপযোগী করার পাশাপাশি সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে দুর্ভোগ লাঘবের দাবি রওশনপুর, ঝাউপাড়া, মকিমপুরসহ ৫ গ্রামের হাজারো মানুষ।

সরেজমিনে জানা গেছে, চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবু জাফর মিয়া ১৯৮৫ সালে উপজেলা পরিষদের বরাদ্দে সেতুটি নির্মাণ করেছিলেন। সেতুটি ব্যবহার করতে সে সময় মকিমপুর উত্তরপাড়া থেকে ঝাড়পাড়া-জোলাগাড়ি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার মাটির সড়ক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বিলের উত্তাল ঢেউয়ে বছর ঘুরতেই মাটির সড়কটি বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তীতে আর সড়কটি চলাচলের উপযোগী করা হয়নি। ফলে সেতুটিও ব্যবহার করতে পারেনি এলাকার মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, গ্রামীণ উন্নয়ন অবকাঠামোর আওতায় অনেক আগে চলাচলের জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল গুরুদাসপুরের চাপিলা ও ধারাবারিষা ইউপিনয়নের শেষ সীমান্ত চাকলবিলে। উদ্দেশ্য ছিল ধারবারিষা ইউনিয়নের জোলাগাড়ি তথা উপজেলা শহরের সঙ্গে চাপিলা ইউনিয়নের মকিমপুরের সরাসরি যোগাযোগ। এতে উপজেলার সঙ্গে মকিমপুর তথা চাপিলা ইউপির বড় একটা অংশের সহজ যোগাযোগ তৈরি হতো। কিন্তু বাস্তবে এসবের কিছুই হয়নি। সেতুটি তিন যুগ ধরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকলেও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি।

গুরুদাসপুর উপজেলা প্রকৌশলী মিলন মিয়া জানান, ব্যবহার না করায় ৪০ বছর আগের পুড়নো সেতুটি এখন চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এটির ঢালাই এবং ইট খসে পড়ছে। সেতুটি ব্যবহার উপযোগী করতে পূনর্র্নিমাণ করতে হবে।

মকিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল আক্তার জানান, ধারাবারিষা আর চাপিলা ইউনিয়নকে বিভক্ত করেছে চাকলবিল। এই বিলে প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপন্ন হয়। আশপাশের মোকিমপুর, তেলটুপি, রওশনপুর, নওপাড়া, ঝাউপাড়া ও সোনাবাজু গ্রামের কৃষকেরা এই বিলে চাষাবাদ করেন। কিন্তু মকিমপুর-জোলাগাড়ি সড়কটি পূনর্র্নিমাণ না করায় সেতুটি ব্যবহার করা যায়নি। ফলে এসব এলাকার কৃষকদের পণ্য পরিবহনসহ মানুষ চলাচলে ভোগান্তি বেড়েছে।

স্থানীয় যুবলীগ নেতা আজাদ জানান, চাপিলার অন্তত ৫ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ চলাচলের ক্ষেত্রে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। জেলা-উপজেলা সদর, থানা, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যোগাযোগ রক্ষা করতে হচ্ছে ৭ কিলোমিটার ঘুরপথে। এতে বাড়ছে দুর্ভোগ। চাকলবিলের সেতুটি পূনর্র্নিমাণ এবং সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালুর দাবি তাদের।

চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান স্থানীয়দের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে জানান, চাকলবিলের বুকচিরে বয়ে যাওয়া সড়ক এবং পুড়নো সেতুটি পূনর্র্নিমাণ করা হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

৪০ বছর হয়নি সংযোগ সড়ক, দুর্ভোগ ৫ গ্রামের মানুষ

প্রকাশের সময় : ০৮:৩৫:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের চাকল বিলের মাঝে ৪০ বছর পূর্বে সেতু ও মাটির সড়ক নির্মিত হয়েছিল।  কয়েক যুগ পেড়িয়ে গেলেও সেতুটি ব্যবহার করতে পারেনি এই এলাকার মানুষ। কারণ বিলের থইথই পানির ভেতর সেতু নির্মাণ হলেও ছিল না কোনো সড়ক। বর্ষায় উত্তাল ঢেউয়ে সড়কটির অস্তিত্ব বিলীন হয়েগেছে। ৪০ বছর যাবৎ সেতুটি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকলেও নতুন করে সংযোগ সড়ক নির্মিত হয়নি। ফলে কাজে আসেছে না সেতুটি। এখন সেতুটি ব্যবহার উপযোগী করার পাশাপাশি সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে দুর্ভোগ লাঘবের দাবি রওশনপুর, ঝাউপাড়া, মকিমপুরসহ ৫ গ্রামের হাজারো মানুষ।

সরেজমিনে জানা গেছে, চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবু জাফর মিয়া ১৯৮৫ সালে উপজেলা পরিষদের বরাদ্দে সেতুটি নির্মাণ করেছিলেন। সেতুটি ব্যবহার করতে সে সময় মকিমপুর উত্তরপাড়া থেকে ঝাড়পাড়া-জোলাগাড়ি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার মাটির সড়ক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বিলের উত্তাল ঢেউয়ে বছর ঘুরতেই মাটির সড়কটি বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তীতে আর সড়কটি চলাচলের উপযোগী করা হয়নি। ফলে সেতুটিও ব্যবহার করতে পারেনি এলাকার মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, গ্রামীণ উন্নয়ন অবকাঠামোর আওতায় অনেক আগে চলাচলের জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল গুরুদাসপুরের চাপিলা ও ধারাবারিষা ইউপিনয়নের শেষ সীমান্ত চাকলবিলে। উদ্দেশ্য ছিল ধারবারিষা ইউনিয়নের জোলাগাড়ি তথা উপজেলা শহরের সঙ্গে চাপিলা ইউনিয়নের মকিমপুরের সরাসরি যোগাযোগ। এতে উপজেলার সঙ্গে মকিমপুর তথা চাপিলা ইউপির বড় একটা অংশের সহজ যোগাযোগ তৈরি হতো। কিন্তু বাস্তবে এসবের কিছুই হয়নি। সেতুটি তিন যুগ ধরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকলেও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি।

গুরুদাসপুর উপজেলা প্রকৌশলী মিলন মিয়া জানান, ব্যবহার না করায় ৪০ বছর আগের পুড়নো সেতুটি এখন চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এটির ঢালাই এবং ইট খসে পড়ছে। সেতুটি ব্যবহার উপযোগী করতে পূনর্র্নিমাণ করতে হবে।

মকিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল আক্তার জানান, ধারাবারিষা আর চাপিলা ইউনিয়নকে বিভক্ত করেছে চাকলবিল। এই বিলে প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপন্ন হয়। আশপাশের মোকিমপুর, তেলটুপি, রওশনপুর, নওপাড়া, ঝাউপাড়া ও সোনাবাজু গ্রামের কৃষকেরা এই বিলে চাষাবাদ করেন। কিন্তু মকিমপুর-জোলাগাড়ি সড়কটি পূনর্র্নিমাণ না করায় সেতুটি ব্যবহার করা যায়নি। ফলে এসব এলাকার কৃষকদের পণ্য পরিবহনসহ মানুষ চলাচলে ভোগান্তি বেড়েছে।

স্থানীয় যুবলীগ নেতা আজাদ জানান, চাপিলার অন্তত ৫ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ চলাচলের ক্ষেত্রে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। জেলা-উপজেলা সদর, থানা, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যোগাযোগ রক্ষা করতে হচ্ছে ৭ কিলোমিটার ঘুরপথে। এতে বাড়ছে দুর্ভোগ। চাকলবিলের সেতুটি পূনর্র্নিমাণ এবং সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালুর দাবি তাদের।

চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান স্থানীয়দের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে জানান, চাকলবিলের বুকচিরে বয়ে যাওয়া সড়ক এবং পুড়নো সেতুটি পূনর্র্নিমাণ করা হবে।