নিজস্ব প্রতিবেদক :
আগামী ৩০ জানুয়ারি বিএনপির কালো পতাকা মিছিলের দিন সারাদেশে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ৩০ তারিখ আবারও কালো পতাকা মিছিলের ডাক দিয়েছে। সেদিন আপনারা লাল-সবুজ পতাকা নিয়ে গণতন্ত্র, শান্তি, উন্নয়ন সমাবেশ করবেন। সারাদেশে আমাদের নেতাকর্মীরা পাহারায় থাকবেন।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ‘শান্তি ও গণতন্ত্র’ শীর্ষক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, কোথায় অক্টোবরের ২৮ তারিখ? এতদিন কোথায় ছিলেন গয়েশ্বর বাবু? বলেছিলেন, অলিগলি খুঁজে পাবো না, কে পালিয়েছে? কুড়াল মাছ খেয়ে পালিয়েছিলো কে? অলিগলি খুঁজে পাননি, যাবেন কোথায়? দেখতে দেখতে ১৫ বছর। সামনে আরও ৫ বছর। মানুষ বাঁচে কয় বছর? এই বছর না ওই বছর? রোজার আগে না রোজার পর। মানুষ বাঁচে আর কয় বছর। এই আন্দোলন মানুষ মানে না। হরতাল ডাকে, অবরোধ ডাকে, মানুষ আসে না।
আন্দোলন করে বিএনপি ভুয়া হয়ে গেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি আবার মাঠে নেমেছে। আন্দোলন করে তারা ভুয়া হয়ে গেছে। এই আন্দোলনে পাবলিক সাড়া দেয় না। অবরোধ ডাকে কেউ শুনে না, হরতাল ডাকে রাস্তায় যানজট। বিএনপির অবরোধ, হরতাল ভুয়া। বিএনপি মানেই ভুয়া।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশিদের ভয় দেখায়। ৪১.৮ পার্সেন্ট ভোটারের ভোটে শেখ হাসিনা সরকার নির্বাচিত করেছে। এটা জনগণের সরকার। কোনো বিশিদের সরকার না। বাংলাদেশের মানুষের ভোটে নির্বাচিত সরকার। তারা কালো পতাকা মিছিল করে। কালো পতাকা মানে কী, শোকের মিছিল। কালো পতাকা ভুয়া। বিএনপির নেতাকর্মীরা হতাশ, তারা আর তারেকের ফরমায়েশি কথায় কান দেয় না। খেলা একটা হয়ে গেছে। নির্বাচনের খেলা শেষ। এখন খেলা হবে রাজনীতির। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে খেলা হবে। খেলা হবে হরতাল, আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।
সরকারকে যারা বিদেশিদের ভয় দেখায় তাদের দেশপ্রেম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চীন-ভারত-রাশিয়া আমাদের বন্ধু হতে পারে, কিন্তু আমাদের সরকারকে কোনো বিদেশি শক্তি ক্ষমতায় বসায়নি, দেশের মানুষের বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। শেখ হাসিনা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পান না।
দেশের মানুষ সংকটে পড়লে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হৃদয়ে আঘাত লাগে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অচিরেই আমরা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব। আস্থা হারাবেন না। বিএনপির কথায় কান দেবেন না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের বেশি টাকা দিয়ে আমদানি করতে হয়, বিক্রি করতে হয় তার চেয়ে কম দামে। ধৈর্যহারা হবেন না। শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখুন। দ্রব্যমূল্য কমে যাবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় বসে পুরো টিম নিয়ে নেমে গেছেন জনগণের সংকট লাঘব করতে। মন্ত্রিসভাকে নিয়ে কর্মপরিকল্পনার পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, তার মন্ত্রিসভার কেউ বসে নেই। সবাই কাজে লেগে গেছেন। এভাবে চললে আমরা অচিরেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব। সামনে রমজান। মানুষের কষ্ট আমরা জানি। আমরা জনগণের সরকার।
বিএনপির কালো পতাকা মিছিলকে শোকের মিছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির কর্মসূচিতে জনগণের অংশগ্রহণ নেই। তাদের নেতাকর্মীরা হতাশ। তারেক জিয়ার প্রতি দলের নেতাকর্মীদের কোনো আস্থা নেই। তারা আর তারেক জিয়ার কথায় চলে না।
বিএনপির আন্দোলন কবে হবে প্রশ্ন করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের আন্দোলমে মানুষ সাড়া দেয় না। জনগণ তাদের আন্দোলন মানে না। এই অপশক্তিকে আমরা আর বাড়তে দিতে পারি না। এই অপশক্তিকে আমাদের রুখতে হবে। এদেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে ভালোবাসে।
আটলান্টিকের ওপার থেকে বিএনপি নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি আনতে চায় জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশের সরকারের বিরুদ্ধে তারা বিদেশিদের ডেকে আনে, ভয় দেখায়। তাদের কোনো দেশপ্রেম নেই। দেশের সঙ্কট আমরা জনগনকে নিয়ে সমাধান করবো।
বৈশ্বিক সঙ্কটে সারাদুনিয়া আজ রণক্ষেত্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব যুদ্ধের প্রভাব বাংলাদেশে পড়েছে। আমদের বেশি টাকা দিয়ে আমদানি করে কম টাকায় বিক্রি করতে হয়। এ সময় ধৈর্য না হারিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশটি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মুস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুজ্জামান শিখর প্রমুখ।