Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২৮ অক্টোবর আমাদের নয় বিএনপির পতনযাত্রা শুরু: তথ্যমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৪৩:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩
  • ১৮৩ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির চলমান আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বুধবার (১৮ অক্টোবর) তারা ঘোষণা দিয়েছে ২৮ অক্টোবর নাকি সরকার পতনের লক্ষ্যে মহাসমাবেশ করবে। এটা মানুষের মধ্যে হাস্যরস তৈরি করেছে। ২৮ তারিখ আমাদের নয়, বিএনপির পতনযাত্রা শুরু। সেদিন তারা ঘোষণা করবে আগামী নির্বাচনের পর তাদের আন্দোলন শুরু হবে। আমরা গত ১৫ বছর থেকে বিএনপির আন্দোলনের হুমকিতে আছি।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের (ডিএসইসি) মেধাবৃত্তি ও সংবর্ধনা ২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুল গতকাল বলেছেন আগামী ২৮ তারিখ নাকি তারা সমাবেশ করবেন। এরপর মানুষের প্রতিক্রিয়া ছিল এটা কী এই অক্টোবরে, নাকি আগামী বছর অক্টোবরের আন্দোলন। মূলত, বিএনপির এসব আন্দোলনে তাদের কর্মীরা ছাড়া সাধারণ জনগণ নেই।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি কিছুদিন আগে বলেছে অক্টোবরে নাকি তাদের ফাইনাল খেলা। আমরা আশা করেছিলাম অক্টোবরের শুরু থেকে আন্দোলন হবে, হয়নি। এরপর ভেবেছি পূজার পর তাদের আন্দোলন হবে, তাও হয়নি

বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বৃত্তির অংক কত বড় সেটা বড় বিষয় না। কিন্তু বৃত্তি পাওয়াতে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা জোগায়। আমি রাজনীতিবিদ ছাড়াও একজন শিক্ষক। জীবনে স্বপ্ন দেখাটা জরুরি। স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগী হতে হবে। অভিভাবকদের তাদের স্বপ্ন দেখাতে শিখতে হবে। জীবন একটি যুদ্ধের মতো, জীবন চলার পথে কোনো একটা পরীক্ষায় হেরে যেতে পারো, তবে হাল ছাড়লে হবে না। পুরোদমে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। কখনও লক্ষ্যচ্যুত হওয়া যাবে না। তোমাদের মানবিক মানুষে পরিণত হতে হবে। বাবা-মা যেমন তোমাদের খেয়াল রাখছে। বৃদ্ধ বয়সে তাদের খেয়াল তোমাদের রাখতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য সুস্থ রাজনীতি দরকার। অসুস্থ রাজনীতি আমাদের সমাজকে দিন দিন অসুস্থ করে তুলছে। নতুন প্রজন্মের ওপর সেই প্রভাব পড়ছে। রাজনীতি থেকে এখন আমাদের মেধাবীরা দূরে সরে যাচ্ছে। মেধাহীনরা পার্লামেন্টে যাচ্ছে, দেশ পরিচালনা করছে।

সুস্থ রাজনীতি ও মেধাবীদের রাজনীতিতে আসার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের শিশুদের সঠিকভাবে বেড়ে উঠার জন্য সুস্থ রাজনীতি প্রয়োজন। অসুস্থ রাজনীতি সামাজের জন্য ক্ষতিকর। দুঃখজনকভাবে রাজনীতি মেধাবীরা আসছে না। কিন্তু এতে রাজনীতির মঞ্চ তো খালি থাকছে না। মেধাহীনরা এই স্থান দখল করছে। এতে সামগ্রিকভাবে দেশ ও রাজনৈতিক পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে।

রাজনৈতিক ভালো পরিবেশের উদাহরণ কেমন হওয়া উচিত জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গতকাল ঢাকায় দুইটি বড় সমাবেশ হয়েছে। সমাবেশগুলোর দূরত্ব ছিল মাত্র ২ কিলোমিটার। অথচ কোনো ঝামেলা হয়নি। দুইটা সমাবেশই শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। রাজনৈতিক পরিবেশ এমন হওয়া উচিত।

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের হাসপাতালে চালানো হামলায় কয়েকশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। শত শত শিশু মারা গেছে। তাদের কবর দেওয়ার জন্য জায়গাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। সব দেশ প্রতিবাদ জানিয়েছে। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও সেই হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে। ফ্রান্স থেকে শুরু করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এটার প্রতিবাদ জানিয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বুধবার প্রতিবাদ জানিয়েছেন, এর আগেও জানিয়েছেন। আমি সরকারের তথ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রথম থেকে এই হত্যাযজ্ঞ ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বুধবার বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। সবাই এর প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু বিএনপি একটি কথা এই প্রসঙ্গে বলেনি। তারা শুধু বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য, তারেক জিয়ার শাস্তি নিয়ে ব্যস্ত। আজকে যে পুরো পৃথিবী এর বিরুদ্ধে কথা বলছে সেই বিষয় তাদের কানে পৌঁছায় না। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক, আশ্চার্যজনক এবং প্রতিবাদ না জানিয়ে বিএনপি কার্যত এই বর্বরতার পক্ষ অবলম্বন করেছে। শিশু হত্যার পক্ষ অবলম্বন করেছে।

ফিলিস্তিনি ইস্যুতে নিশ্চুপ থাকছে বিএনপি, তাহলে বিএনপি কী ইহুদি ও ইসরায়েলের পক্ষ অবলম্বন করছে প্রশ্ন ছুড়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতও এই বিষয়ে নিশ্চুপ। স্লোগান দেয় আল্লাহর আইন চাই এবং সৎলোকের শাসন চাই। আজকে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতও নিশ্চুপ। অর্থাৎ এরা ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষের কোমল হৃদয়ে আঘাত হানে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। এরা হচ্ছে ধর্ম ব্যবসায়ী। আজকে তাদের নীরবতা ইহুদি ও ইসরায়েলকে সমর্থন করার সামিল।

তিনি আরও বলেন, আমরা কেউ রাজনীতির বাইরে নই। কেউ রাজনীতি না করলেও রাজনীতির একটি প্রভাব প্রত্যেকের জীবনে রয়েছে। সেজন্য আমি মনে করি, আমাদের শিশুদের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের কর্ণধারদের সঠিকভাবে বেড়ে উঠার জন্য সুস্থ রাজনীতি দরকার। অসুস্থ রাজনীতি সমাজকেও অসুস্থ করে দেয়। সাংঘর্ষিক রাজনীতি এবং সবকিছুতে না বলার রাজনীতির যে সংস্কৃতি আমরা চালু করেছি, এটি রাজনীতিকে অসুস্থ করে দিচ্ছে। সেটি আমাদের সমাজের ওপর প্রভাব ফেলছে। আজকে যারা নতুন প্রজন্ম, ভবিষ্যতে দেশ চালাবে, তাদের ওপর প্রভাব ফেলছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাজনীতিতে মেধাবীরা আসছে না। রাজনীতি থেকে মেধাবীরা দূরে সরে যাচ্ছে। কিন্তু রাজনীতির মঞ্চ তো সেজন্য খালি থাকছে না। মেধাবীরা রাজনীতিতে না আসায়, মেধাহীনরা রাজনীতির মঞ্চ দখল করছে। মেধাহীনরা সংসদেও যাচ্ছে, দেশও পরিচালনা করছে। সেজন্য মেধাবীদের রাজনীতিতে আসা প্রয়োজন। মেধাবীরা যদি রাজনীতিতে না আসে, তাহলে মেধাহীনরা রাজনীতিতে জায়গা করে নেয়। যারা সুযোগ সন্ধানী তারা রাজনীতিতে জায়গা করে নেয়।

তিনি বলেন, রাজনীতি যে একটা ব্রত, দেশসেবা, সমাজসেবা, দেশ পরিবর্তন, সমাজ পরিবর্তন, সমাজ উন্নয়ন, রাষ্ট্রের উন্নয়নের। রাজনীতি কোনো পেশা নয়, বরং একটি ব্রত। সেটি অনেক রাজনীতিবিদরা জানেন না বা মনে করেন না। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছে। এই কল্যাণ ট্রাস্ট এখন সাংবাদিকদের একটি ভরসার স্থলে হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে দুস্থ কিংবা অসচ্ছল সাংবাদিকদের এই কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে সহায়তা করা হতো কিংবা কারো মৃত্যু হলে তার পরিবারকে সহায়তা করা হতো। আমরা ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে সাংবাদিকদের পরিবারের সদস্যদের এককালীন বৃত্তি দেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ে গেছে এবং বিধিমালাও চূড়ান্ত হয়েছে।

ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সভাপতি মামুন ফরাজীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান হৃদয়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

২৮ অক্টোবর আমাদের নয় বিএনপির পতনযাত্রা শুরু: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৪:৪৩:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির চলমান আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বুধবার (১৮ অক্টোবর) তারা ঘোষণা দিয়েছে ২৮ অক্টোবর নাকি সরকার পতনের লক্ষ্যে মহাসমাবেশ করবে। এটা মানুষের মধ্যে হাস্যরস তৈরি করেছে। ২৮ তারিখ আমাদের নয়, বিএনপির পতনযাত্রা শুরু। সেদিন তারা ঘোষণা করবে আগামী নির্বাচনের পর তাদের আন্দোলন শুরু হবে। আমরা গত ১৫ বছর থেকে বিএনপির আন্দোলনের হুমকিতে আছি।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের (ডিএসইসি) মেধাবৃত্তি ও সংবর্ধনা ২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুল গতকাল বলেছেন আগামী ২৮ তারিখ নাকি তারা সমাবেশ করবেন। এরপর মানুষের প্রতিক্রিয়া ছিল এটা কী এই অক্টোবরে, নাকি আগামী বছর অক্টোবরের আন্দোলন। মূলত, বিএনপির এসব আন্দোলনে তাদের কর্মীরা ছাড়া সাধারণ জনগণ নেই।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি কিছুদিন আগে বলেছে অক্টোবরে নাকি তাদের ফাইনাল খেলা। আমরা আশা করেছিলাম অক্টোবরের শুরু থেকে আন্দোলন হবে, হয়নি। এরপর ভেবেছি পূজার পর তাদের আন্দোলন হবে, তাও হয়নি

বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বৃত্তির অংক কত বড় সেটা বড় বিষয় না। কিন্তু বৃত্তি পাওয়াতে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা জোগায়। আমি রাজনীতিবিদ ছাড়াও একজন শিক্ষক। জীবনে স্বপ্ন দেখাটা জরুরি। স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগী হতে হবে। অভিভাবকদের তাদের স্বপ্ন দেখাতে শিখতে হবে। জীবন একটি যুদ্ধের মতো, জীবন চলার পথে কোনো একটা পরীক্ষায় হেরে যেতে পারো, তবে হাল ছাড়লে হবে না। পুরোদমে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। কখনও লক্ষ্যচ্যুত হওয়া যাবে না। তোমাদের মানবিক মানুষে পরিণত হতে হবে। বাবা-মা যেমন তোমাদের খেয়াল রাখছে। বৃদ্ধ বয়সে তাদের খেয়াল তোমাদের রাখতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য সুস্থ রাজনীতি দরকার। অসুস্থ রাজনীতি আমাদের সমাজকে দিন দিন অসুস্থ করে তুলছে। নতুন প্রজন্মের ওপর সেই প্রভাব পড়ছে। রাজনীতি থেকে এখন আমাদের মেধাবীরা দূরে সরে যাচ্ছে। মেধাহীনরা পার্লামেন্টে যাচ্ছে, দেশ পরিচালনা করছে।

সুস্থ রাজনীতি ও মেধাবীদের রাজনীতিতে আসার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের শিশুদের সঠিকভাবে বেড়ে উঠার জন্য সুস্থ রাজনীতি প্রয়োজন। অসুস্থ রাজনীতি সামাজের জন্য ক্ষতিকর। দুঃখজনকভাবে রাজনীতি মেধাবীরা আসছে না। কিন্তু এতে রাজনীতির মঞ্চ তো খালি থাকছে না। মেধাহীনরা এই স্থান দখল করছে। এতে সামগ্রিকভাবে দেশ ও রাজনৈতিক পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে।

রাজনৈতিক ভালো পরিবেশের উদাহরণ কেমন হওয়া উচিত জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গতকাল ঢাকায় দুইটি বড় সমাবেশ হয়েছে। সমাবেশগুলোর দূরত্ব ছিল মাত্র ২ কিলোমিটার। অথচ কোনো ঝামেলা হয়নি। দুইটা সমাবেশই শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। রাজনৈতিক পরিবেশ এমন হওয়া উচিত।

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের হাসপাতালে চালানো হামলায় কয়েকশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। শত শত শিশু মারা গেছে। তাদের কবর দেওয়ার জন্য জায়গাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। সব দেশ প্রতিবাদ জানিয়েছে। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও সেই হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে। ফ্রান্স থেকে শুরু করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এটার প্রতিবাদ জানিয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বুধবার প্রতিবাদ জানিয়েছেন, এর আগেও জানিয়েছেন। আমি সরকারের তথ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রথম থেকে এই হত্যাযজ্ঞ ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বুধবার বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। সবাই এর প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু বিএনপি একটি কথা এই প্রসঙ্গে বলেনি। তারা শুধু বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য, তারেক জিয়ার শাস্তি নিয়ে ব্যস্ত। আজকে যে পুরো পৃথিবী এর বিরুদ্ধে কথা বলছে সেই বিষয় তাদের কানে পৌঁছায় না। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক, আশ্চার্যজনক এবং প্রতিবাদ না জানিয়ে বিএনপি কার্যত এই বর্বরতার পক্ষ অবলম্বন করেছে। শিশু হত্যার পক্ষ অবলম্বন করেছে।

ফিলিস্তিনি ইস্যুতে নিশ্চুপ থাকছে বিএনপি, তাহলে বিএনপি কী ইহুদি ও ইসরায়েলের পক্ষ অবলম্বন করছে প্রশ্ন ছুড়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতও এই বিষয়ে নিশ্চুপ। স্লোগান দেয় আল্লাহর আইন চাই এবং সৎলোকের শাসন চাই। আজকে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতও নিশ্চুপ। অর্থাৎ এরা ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষের কোমল হৃদয়ে আঘাত হানে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। এরা হচ্ছে ধর্ম ব্যবসায়ী। আজকে তাদের নীরবতা ইহুদি ও ইসরায়েলকে সমর্থন করার সামিল।

তিনি আরও বলেন, আমরা কেউ রাজনীতির বাইরে নই। কেউ রাজনীতি না করলেও রাজনীতির একটি প্রভাব প্রত্যেকের জীবনে রয়েছে। সেজন্য আমি মনে করি, আমাদের শিশুদের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের কর্ণধারদের সঠিকভাবে বেড়ে উঠার জন্য সুস্থ রাজনীতি দরকার। অসুস্থ রাজনীতি সমাজকেও অসুস্থ করে দেয়। সাংঘর্ষিক রাজনীতি এবং সবকিছুতে না বলার রাজনীতির যে সংস্কৃতি আমরা চালু করেছি, এটি রাজনীতিকে অসুস্থ করে দিচ্ছে। সেটি আমাদের সমাজের ওপর প্রভাব ফেলছে। আজকে যারা নতুন প্রজন্ম, ভবিষ্যতে দেশ চালাবে, তাদের ওপর প্রভাব ফেলছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাজনীতিতে মেধাবীরা আসছে না। রাজনীতি থেকে মেধাবীরা দূরে সরে যাচ্ছে। কিন্তু রাজনীতির মঞ্চ তো সেজন্য খালি থাকছে না। মেধাবীরা রাজনীতিতে না আসায়, মেধাহীনরা রাজনীতির মঞ্চ দখল করছে। মেধাহীনরা সংসদেও যাচ্ছে, দেশও পরিচালনা করছে। সেজন্য মেধাবীদের রাজনীতিতে আসা প্রয়োজন। মেধাবীরা যদি রাজনীতিতে না আসে, তাহলে মেধাহীনরা রাজনীতিতে জায়গা করে নেয়। যারা সুযোগ সন্ধানী তারা রাজনীতিতে জায়গা করে নেয়।

তিনি বলেন, রাজনীতি যে একটা ব্রত, দেশসেবা, সমাজসেবা, দেশ পরিবর্তন, সমাজ পরিবর্তন, সমাজ উন্নয়ন, রাষ্ট্রের উন্নয়নের। রাজনীতি কোনো পেশা নয়, বরং একটি ব্রত। সেটি অনেক রাজনীতিবিদরা জানেন না বা মনে করেন না। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছে। এই কল্যাণ ট্রাস্ট এখন সাংবাদিকদের একটি ভরসার স্থলে হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে দুস্থ কিংবা অসচ্ছল সাংবাদিকদের এই কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে সহায়তা করা হতো কিংবা কারো মৃত্যু হলে তার পরিবারকে সহায়তা করা হতো। আমরা ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে সাংবাদিকদের পরিবারের সদস্যদের এককালীন বৃত্তি দেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ে গেছে এবং বিধিমালাও চূড়ান্ত হয়েছে।

ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সভাপতি মামুন ফরাজীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান হৃদয়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত প্রমুখ।