Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৭ হাজার কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্র পেয়েও মালয়েশিয়া সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ে দেশটিতে যেতে পারেননি ১৬ হাজার ৯৭০ জন বাংলাদেশি কর্মী বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।

রোববার (২ জুন) বিকালে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৩১ মে পর্যন্ত ৫ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৬ জনকে মন্ত্রণালয় (প্রবাসী কল্যাণ) অনুমোদন দিয়েছে। বিএমইটির ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬৪২ জনকে। ৩১ মে পর্যন্ত যেতে পেরেছেন ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬৭২ জন। সেই হিসাবে ১৬ হাজার ৯৭০ জন যেতে পারেননি। সংখ্যাটা কিছুটা কমবেশি হতে পারে।

শফিকুর রহমান রহমান বলেন, কেন তারা যেতে পারেননি এ ব্যাপারে আমরা একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটিতে ছয়জন সদস্য আছেন। অতিরিক্ত সচিব (মন্ত্রণালয়ের) নূর মোহাম্মদ মাহবুবকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটি তাদের সুপারিশ দেবে। যারা এটার জন্য দায়ী হবেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা কর্মীরা তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ করতে পারবেন এবং প্রয়োজন হলে কর্মীদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করা হবে।

মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার বারবার সিন্ডিকেট বা চক্রের কারণে বন্ধ হচ্ছে। সিন্ডিকেটে সরকারের প্রভাবশালী সংসদ সদস্যদের নামও এসেছে গণমাধ্যমে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে বা যারা এই তদন্তের মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত হবেন তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সিন্ডিকেটের বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সিন্ডিকেটে বিশ্বাস করি না। আমরা চাই, আমাদের আড়াই হাজার এজেন্ট আছে, তাদের মাধ্যমে কর্মীরা বিদেশ যাক।

শেষ সময়ে কর্মীদের ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ছাড়পত্র তারা যখন চেয়েছে, রিক্রুটিং এজেন্সি যখন চেয়েছে আমরা প্রয়োজনীয়তা দেখে দ্রুত তা দিয়েছি। না হলে সবাই বলবে মন্ত্রণালয় দেয়নি। সে কারণে যে সময় যেটার প্রয়োজন হয় সেটার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের সচিব রুহুল আমিন বলেন, ২৪ মের পর থেকে যাদের টিকিট ছিল শুধুমাত্র তাদের ক্ষেত্রে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে কাউকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

কর্মীদের না যেতে পারার পেছনে মন্ত্রণালয়ের কোনো গাফিলতি ছিল না দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ে গাফিলতি হয়নি। এখনও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা এক সপ্তাহ আগে চিঠি দিয়েছিলাম মালয়েশিয়া সরকারকে আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর জন্য। মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারের সঙ্গে আলাপ করেছি। তিনি ৫ তারিখে মন্ত্রণালয়ে আসবেন। তখন তার সঙ্গে আবারও এ বিষয়ে কথা হবে।

বন্ধ হয়ে যাওয়া মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রমবাজার খুলবে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সরকার মালয়েশিয়ার সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। শ্রমবাজার ফের খুলবে।

বিভিন্ন গণমাধ্যম সিন্ডিকেটের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই সিন্ডিকেট বন্ধে আপনারা কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সিন্ডিকেট বিশ্বাস করি না। এখানে মালয়েশিয়া থেকে যারা নেবে তারা যদি তাদের পছন্দের এজেন্সি দ্বারা নিতে চায় সেটা তাদের ব্যাপার।

গণমাধ্যমে জানতে পেরেছি চারজন সংসদ সদস্য এ সিন্ডিকেটের মধ্যে আছে। তাদের এজেন্সিগুলো এ সিন্ডিকেটে রয়েছে। এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো এমপি সম্পর্কে জানি না। আমরা জানি, রিক্রুটিং এজেন্ট। এমপি জানারও কথা নয়, চেনারও কথা নয়। আমরা সিন্ডিকেটও বিশ্বাস করি না।’
যারা ক্ষতিগ্রস্ত তারা টাকা ফেরত পাবে কি না? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা হয়রানির শিকার হয়েছেন এ কমিটির কাছে যে কেউ অভিযোগ করতে পারবেন। যারা বেশি টাকা দিয়ে ভিসা নিয়েছেন, কেউ যদি বলে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে ভিসা নিয়েছেন। তারা এসে অভিযোগ করুক। তারা টাকা না পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বায়রা কেও জানিয়েছি, বায়রাও আমাদের আশ্বাস দিয়েছে। তারা যদি অভিযোগ করে বায়রা ও এজেন্সির ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবে।

মালয়েশিয়া আবারও শ্রমবাজার খুলবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রমজার খোলার ব্যাপারে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আরও অন্যান্য দেশের জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। মালয়েশিয়ার কোম্পানি যে ৪৭টা কোম্পানিকে ব্ল্যাকলিস্ট করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

১৭ হাজার কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি

প্রকাশের সময় : ০৯:৫৫:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্র পেয়েও মালয়েশিয়া সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ে দেশটিতে যেতে পারেননি ১৬ হাজার ৯৭০ জন বাংলাদেশি কর্মী বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।

রোববার (২ জুন) বিকালে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৩১ মে পর্যন্ত ৫ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৬ জনকে মন্ত্রণালয় (প্রবাসী কল্যাণ) অনুমোদন দিয়েছে। বিএমইটির ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬৪২ জনকে। ৩১ মে পর্যন্ত যেতে পেরেছেন ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬৭২ জন। সেই হিসাবে ১৬ হাজার ৯৭০ জন যেতে পারেননি। সংখ্যাটা কিছুটা কমবেশি হতে পারে।

শফিকুর রহমান রহমান বলেন, কেন তারা যেতে পারেননি এ ব্যাপারে আমরা একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটিতে ছয়জন সদস্য আছেন। অতিরিক্ত সচিব (মন্ত্রণালয়ের) নূর মোহাম্মদ মাহবুবকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটি তাদের সুপারিশ দেবে। যারা এটার জন্য দায়ী হবেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা কর্মীরা তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ করতে পারবেন এবং প্রয়োজন হলে কর্মীদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করা হবে।

মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার বারবার সিন্ডিকেট বা চক্রের কারণে বন্ধ হচ্ছে। সিন্ডিকেটে সরকারের প্রভাবশালী সংসদ সদস্যদের নামও এসেছে গণমাধ্যমে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে বা যারা এই তদন্তের মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত হবেন তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সিন্ডিকেটের বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সিন্ডিকেটে বিশ্বাস করি না। আমরা চাই, আমাদের আড়াই হাজার এজেন্ট আছে, তাদের মাধ্যমে কর্মীরা বিদেশ যাক।

শেষ সময়ে কর্মীদের ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ছাড়পত্র তারা যখন চেয়েছে, রিক্রুটিং এজেন্সি যখন চেয়েছে আমরা প্রয়োজনীয়তা দেখে দ্রুত তা দিয়েছি। না হলে সবাই বলবে মন্ত্রণালয় দেয়নি। সে কারণে যে সময় যেটার প্রয়োজন হয় সেটার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের সচিব রুহুল আমিন বলেন, ২৪ মের পর থেকে যাদের টিকিট ছিল শুধুমাত্র তাদের ক্ষেত্রে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে কাউকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

কর্মীদের না যেতে পারার পেছনে মন্ত্রণালয়ের কোনো গাফিলতি ছিল না দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ে গাফিলতি হয়নি। এখনও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা এক সপ্তাহ আগে চিঠি দিয়েছিলাম মালয়েশিয়া সরকারকে আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর জন্য। মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারের সঙ্গে আলাপ করেছি। তিনি ৫ তারিখে মন্ত্রণালয়ে আসবেন। তখন তার সঙ্গে আবারও এ বিষয়ে কথা হবে।

বন্ধ হয়ে যাওয়া মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রমবাজার খুলবে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সরকার মালয়েশিয়ার সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। শ্রমবাজার ফের খুলবে।

বিভিন্ন গণমাধ্যম সিন্ডিকেটের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই সিন্ডিকেট বন্ধে আপনারা কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সিন্ডিকেট বিশ্বাস করি না। এখানে মালয়েশিয়া থেকে যারা নেবে তারা যদি তাদের পছন্দের এজেন্সি দ্বারা নিতে চায় সেটা তাদের ব্যাপার।

গণমাধ্যমে জানতে পেরেছি চারজন সংসদ সদস্য এ সিন্ডিকেটের মধ্যে আছে। তাদের এজেন্সিগুলো এ সিন্ডিকেটে রয়েছে। এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো এমপি সম্পর্কে জানি না। আমরা জানি, রিক্রুটিং এজেন্ট। এমপি জানারও কথা নয়, চেনারও কথা নয়। আমরা সিন্ডিকেটও বিশ্বাস করি না।’
যারা ক্ষতিগ্রস্ত তারা টাকা ফেরত পাবে কি না? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা হয়রানির শিকার হয়েছেন এ কমিটির কাছে যে কেউ অভিযোগ করতে পারবেন। যারা বেশি টাকা দিয়ে ভিসা নিয়েছেন, কেউ যদি বলে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে ভিসা নিয়েছেন। তারা এসে অভিযোগ করুক। তারা টাকা না পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বায়রা কেও জানিয়েছি, বায়রাও আমাদের আশ্বাস দিয়েছে। তারা যদি অভিযোগ করে বায়রা ও এজেন্সির ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবে।

মালয়েশিয়া আবারও শ্রমবাজার খুলবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রমজার খোলার ব্যাপারে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আরও অন্যান্য দেশের জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। মালয়েশিয়ার কোম্পানি যে ৪৭টা কোম্পানিকে ব্ল্যাকলিস্ট করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।