Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১১ বছর পর আবারো এভারেস্ট চূড়ায় বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে পৃথিবীর শীর্ষ পর্বত মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা ওড়ালেন বাবর আলী। ১১ বছর প্রতীক্ষার পর আবারো একবার উড়েছে দেশের পতাকা।

রোববার (১৯ মে) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট) এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি। বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক ফরহান জামান। হিমালয়ের শীতিধার চূড়া জয়ের জন্য বাবর আলী রওনা দিয়েছিলেন ১ এপ্রিল। চূড়াটি পর্বতের ১৫ হাজার ৫০০ ফুট ওপরে।

সকালে সেখানে তিনি বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান। তবে তার অভিযানের শেষ এখানেই নয়। বাবরের লক্ষ্য- সঙ্গে লাগোয়া পৃথিবীর চতুর্থ উচ্চতম পর্বত মাউন্ট লোৎসে। রোববার ক্যাম্প-৪ এ নেমে মাঝরাতে আবারও শুরু করবেন দ্বিতীয় লক্ষ্যের পথে যাত্রা। সব অনুকূলে থাকলে ভোরে পৌঁছতে পারেন এর চূড়ায়। এ লোৎসেতে এর আগে কোনো বাংলাদেশি সামিট করেননি। কোনো বাংলাদেশি একই অভিযানে দু’টি আট হাজারি শৃঙ্গেও চড়েননি। তাই লক্ষ্য পূরণে হলে বাবার আলী নতুন রেকর্ড গড়বেন।

এ লোৎসেতে ইতোপূর্বে কোনো বাংলাদেশি সামিট করেননি এবং কোনো বাংলাদেশি একই অভিযানে দুইটি আট হাজারী শৃঙ্গ চড়েননি। তাই লক্ষ্য পূরণে হলে বাবার আলী করবেন এ বিপজ্জনক খেলায় বাংলাদেশের ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।

চলতি বছরের ১ এপ্রিল নেপালের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন বাবর আলী। পর্বতারোহণের প্রয়োজনীয় অনুমতি ও নানা সরঞ্জাম কেনার কাজ শেষ করে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে লুকলার উদ্দেশ্যে রওনা তিনি। সপ্তাহ খানেকের ট্রেকিং শেষ পৌঁছান এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে। মূল অভিযান শুরু হয় এখান থেকেই। পর্বতের চূড়ায় উঠতে সময় লাগে দুই মাসের মতো।

যাত্রা শুরু আগে বাবর আলী জানান, বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে জয় করা অনেকের স্বপ্ন। প্রতিবছর হাজারো পর্বতারোহী এভারেস্টের পথে হাঁটেন। কিন্তু এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার পর একই সঙ্গে আরেক পর্বতশৃঙ্গ লোৎসে ওঠার চেষ্টা বাংলাদেশ থেকে আগে হয়নি। আমি সেই চ্যালেঞ্জটাই নিলাম। অর্থাৎ একই অভিযানে মাউন্ট এভারেস্ট ও চতুর্থ উচ্চতম পর্বত মাউন্ট লোৎসের চূড়ায় উঠব। ’

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন ৩৩ বছর বয়সী বাবর আলী। এরপর শুরু করেছিলেন চিকিৎসা পেশা। তবে থিতু হননি। চাকরি ছেড়ে দেশ-বিদেশ ঘোরার কর্মযজ্ঞ শুরু করেন। সাইকেলিংয়ের পাশাপাশি এখন পর্যন্ত সারগো রি (৪ হাজার ৯৮৪ মিটার), সুরিয়া পিক (৫ হাজার ১৪৫ মি.), মাউন্ট ইয়ানাম (৬ হাজার ১১৬ মি.), মাউন্ট ফাবরাং (৬ হাজার ১৭২ মি.), মাউন্ট চাউ চাউ কাং নিলডা (৬ হাজার ৩০৩ মি.), মাউন্ট শিবা (৬ হাজার ১৪২ মি.), মাউন্ট রামজাক (৬ হাজার ৩১৮ মি.), মাউন্ট আমা দাবলাম (৬ হাজার ৮১২ মি.) ও চুলু ইস্ট (৬ হাজার ০৫৯ মি.) পর্বতের চূড়ায় উঠেছেন এই তরুণ।

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০১০ সালের ২৩ মে এভারেস্ট জয় করেন মুসা ইব্রাহীম। এরপর ২০১১ ও ২০১২ সালে দুবার এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন এম এ মুহিত।

প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে নিশাত মজুমদার ২০১২ সালের ১৯ মে এই পর্বতশৃঙ্গ জয় করেন। সপ্তাহখানেকের মাথায় ২৬ মে এভারেস্ট জয়ের সুখবর আসে ওয়াসফিয়া নাজরীনের কাছ থেকে।

২০১৩ সালের ২০ মে এভারেস্ট জয় করেন আরেক বাংলাদেশি, তার নাম সজল খালেদ। তবে তিনি ওই পর্বতশৃঙ্গ থেকে নামার সময় প্রাণ হারান।

১১ বছরের মাথায় বাবর আলী বিশ্বের শীর্ষ এ পর্বতের চূড়া জয়ের খবর দিলেন বাংলাদেশকে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

১১ বছর পর আবারো এভারেস্ট চূড়ায় বাংলাদেশ

প্রকাশের সময় : ০২:৪৭:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে পৃথিবীর শীর্ষ পর্বত মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা ওড়ালেন বাবর আলী। ১১ বছর প্রতীক্ষার পর আবারো একবার উড়েছে দেশের পতাকা।

রোববার (১৯ মে) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট) এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি। বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক ফরহান জামান। হিমালয়ের শীতিধার চূড়া জয়ের জন্য বাবর আলী রওনা দিয়েছিলেন ১ এপ্রিল। চূড়াটি পর্বতের ১৫ হাজার ৫০০ ফুট ওপরে।

সকালে সেখানে তিনি বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান। তবে তার অভিযানের শেষ এখানেই নয়। বাবরের লক্ষ্য- সঙ্গে লাগোয়া পৃথিবীর চতুর্থ উচ্চতম পর্বত মাউন্ট লোৎসে। রোববার ক্যাম্প-৪ এ নেমে মাঝরাতে আবারও শুরু করবেন দ্বিতীয় লক্ষ্যের পথে যাত্রা। সব অনুকূলে থাকলে ভোরে পৌঁছতে পারেন এর চূড়ায়। এ লোৎসেতে এর আগে কোনো বাংলাদেশি সামিট করেননি। কোনো বাংলাদেশি একই অভিযানে দু’টি আট হাজারি শৃঙ্গেও চড়েননি। তাই লক্ষ্য পূরণে হলে বাবার আলী নতুন রেকর্ড গড়বেন।

এ লোৎসেতে ইতোপূর্বে কোনো বাংলাদেশি সামিট করেননি এবং কোনো বাংলাদেশি একই অভিযানে দুইটি আট হাজারী শৃঙ্গ চড়েননি। তাই লক্ষ্য পূরণে হলে বাবার আলী করবেন এ বিপজ্জনক খেলায় বাংলাদেশের ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।

চলতি বছরের ১ এপ্রিল নেপালের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন বাবর আলী। পর্বতারোহণের প্রয়োজনীয় অনুমতি ও নানা সরঞ্জাম কেনার কাজ শেষ করে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে লুকলার উদ্দেশ্যে রওনা তিনি। সপ্তাহ খানেকের ট্রেকিং শেষ পৌঁছান এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে। মূল অভিযান শুরু হয় এখান থেকেই। পর্বতের চূড়ায় উঠতে সময় লাগে দুই মাসের মতো।

যাত্রা শুরু আগে বাবর আলী জানান, বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে জয় করা অনেকের স্বপ্ন। প্রতিবছর হাজারো পর্বতারোহী এভারেস্টের পথে হাঁটেন। কিন্তু এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার পর একই সঙ্গে আরেক পর্বতশৃঙ্গ লোৎসে ওঠার চেষ্টা বাংলাদেশ থেকে আগে হয়নি। আমি সেই চ্যালেঞ্জটাই নিলাম। অর্থাৎ একই অভিযানে মাউন্ট এভারেস্ট ও চতুর্থ উচ্চতম পর্বত মাউন্ট লোৎসের চূড়ায় উঠব। ’

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন ৩৩ বছর বয়সী বাবর আলী। এরপর শুরু করেছিলেন চিকিৎসা পেশা। তবে থিতু হননি। চাকরি ছেড়ে দেশ-বিদেশ ঘোরার কর্মযজ্ঞ শুরু করেন। সাইকেলিংয়ের পাশাপাশি এখন পর্যন্ত সারগো রি (৪ হাজার ৯৮৪ মিটার), সুরিয়া পিক (৫ হাজার ১৪৫ মি.), মাউন্ট ইয়ানাম (৬ হাজার ১১৬ মি.), মাউন্ট ফাবরাং (৬ হাজার ১৭২ মি.), মাউন্ট চাউ চাউ কাং নিলডা (৬ হাজার ৩০৩ মি.), মাউন্ট শিবা (৬ হাজার ১৪২ মি.), মাউন্ট রামজাক (৬ হাজার ৩১৮ মি.), মাউন্ট আমা দাবলাম (৬ হাজার ৮১২ মি.) ও চুলু ইস্ট (৬ হাজার ০৫৯ মি.) পর্বতের চূড়ায় উঠেছেন এই তরুণ।

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০১০ সালের ২৩ মে এভারেস্ট জয় করেন মুসা ইব্রাহীম। এরপর ২০১১ ও ২০১২ সালে দুবার এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন এম এ মুহিত।

প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে নিশাত মজুমদার ২০১২ সালের ১৯ মে এই পর্বতশৃঙ্গ জয় করেন। সপ্তাহখানেকের মাথায় ২৬ মে এভারেস্ট জয়ের সুখবর আসে ওয়াসফিয়া নাজরীনের কাছ থেকে।

২০১৩ সালের ২০ মে এভারেস্ট জয় করেন আরেক বাংলাদেশি, তার নাম সজল খালেদ। তবে তিনি ওই পর্বতশৃঙ্গ থেকে নামার সময় প্রাণ হারান।

১১ বছরের মাথায় বাবর আলী বিশ্বের শীর্ষ এ পর্বতের চূড়া জয়ের খবর দিলেন বাংলাদেশকে।