Dhaka মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাসিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা তরুণদের বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দেয়া উচিত : মেজর হাফিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

খালি হাতে অস্ত্রের মুখে দাঁড়িয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা তরুণদের বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। “বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্র বিনির্মানে মুক্তিযোদ্ধাদের করণীয় শীর্ষক” এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।

তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদকে সময় দিতে চায় বিএনপি। কিন্তু গণহত্যায় জড়িতের বিচার দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমান সরকার শিক্ষার্থী, তাদের বাবা-মা ও ১৬ বছর নির্যাতিত রাজনৈতিক দলগুলোর সরকার। তাই গণহত্যায় জড়িতদের বিচার দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে।

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ১৮ বছরের সবাইকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, জনগণের সরকারই পারে একাত্তরের চেতনার বাস্তবায়ন করতে। সংস্কার করার জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যথেষ্ট। আপনারা (অন্তর্র্বতী সরকার) শুধু প্রস্তাব দিতে পারেন। আমরা নজর রাখবো সরকার কীভাবে সংস্কার করে? এ সরকার সবার সরকার। শুধু ছাত্রদের সরকার না। এখানে সবার অংশগ্রহণ রয়েছে। আমরা আগস্ট বিপ্লবের প্রতিফলন দেখতে চাই। আগস্ট বিপ্লবের ইতিহাস যাতে কেউ বিকৃত করতে না পারে।

মেজর হাফিজ বলেন, এই সরকারের (অন্তর্বতীকালীন) উচিত ছিলো একটি ভালো নির্বাচন কমিশন গঠন করা। কিন্তু তারা সেটি করেনি। কোনো রোডম্যাপ দেয়নি। শুধু ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। সেনানিবাসে আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও পুলিশ অফিসারদেরকে আশ্রয় দেওয়া উচিৎ হয়নি।

গত জুলাই-আগস্টে আন্দোলন প্রসঙ্গে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শুধু ছাত্রদের আন্দোলনে বিপ্লব হয়নি। বিএনপি ১৭ বছর ধরে আন্দোলন করছে। তারই ধারাবাহিকতায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়েছে। আমি বলবো- সবাইকে স্মরণ করবেন। ড. ইউনূস একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আমেরিকায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলেছেন। কাজ করেছেন। আমি বলবো- ছাত্র-জনতা সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অনেকেই মনে করে আপনারা দুর্বল সরকার। সেজন্য আনসার বাহিনী দিয়ে প্রতিবিপ্লবের ষড়যন্ত্র করেছে। সুতরাং আমি বলবো- আপনারা যে দুর্বল নন, সেটি প্রমাণ করতে সবার সঙ্গে মতবিনিময় করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা নিন।

মেজর হাফিজ বলেন, জনগণের সরকারই পারে একাত্তরের চেতনার বাস্তবায়ন করতে। সংস্কার করার জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যথেষ্ট। আপনারা (অন্তর্বতী সরকার) শুধু প্রস্তাব দিতে পারেন। আমরা নজর রাখবো সরকার কীভাবে সংস্কার করে। এই সরকার সবার সরকার। শুধু ছাত্রদের সরকার না। এখানে সবার অংশগ্রহণ রয়েছে। আমরা আগস্ট বিপ্লবের প্রতিফলন আমরা দেখতে চাই। আগস্ট বিপ্লবের ইতিহাস যাতে কেউ বিকৃত করতে না পারে।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আমাদের সবার রোগ হলো দুর্নীতি। এর বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশের দেশ ভারত থেকে সেটা শিখতে পারি। তাদের দেশে আইন করা আছে যে প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণিত হলে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে সরাসরি জেলখানায় নিয়ে যাওয়া যায়। সে ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ আমাদেরকেও দিতে হবে। দুদককে শক্তিশালী করতে হবে। সংসদ নেতা, বিরোধী দলীয় নেতা ও প্রধান বিচারপতি দুদক চেয়ারম্যানের নিয়োগ দেবেন। যেটি ভারতে রয়েছে।

তিনি বলেন, যারা স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে জীবন বাজি রেখেছেন সেই আহত ব্যাক্তিরা হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় কাতরাচ্ছে। এতো সহজেই তাদেরকে ভুলে গেছেন? আমরা যতদিন বাঁচবো ততদিন আগস্টের আন্দোলনের চেতনা নিয়ে বাঁচতে চাই। এই অধিকার যেন কেউ নষ্ট করতে না পারে আমরা সজাগ থাকবো। কেননা, শেখ হাসিনা সবাইকে ঢালাওভাবে রাজাকার বলার কারণে দেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ ফুঁসে উঠেছে।

পার্বত্যাঞ্চলে অস্থিরতা প্রসঙ্গে মেজর হাফিজ বলেন, পাহাড়ের লোকজন সহজ সরল। তাদেরকে ভুল পথে পরিচালিত করার ষড়যন্ত্র হয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শক্ত পদক্ষেপের কারণে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আমি প্রতিবেশি দেশ ভারতকে বলবো তাদেরকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে উস্কানি দিবেন না। যুদ্ধ করতে হলে বাংলাদেশের সকল মানুষ কিন্তু যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ১৮ বছরের সকলকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হবে। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যা বিশ্বের অনেক দেশে আছে। প্রত্যেক নাগরিক ১ থেকে ২ বছরের সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের জয়নুল আবদীন, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

হাসিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা তরুণদের বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দেয়া উচিত : মেজর হাফিজ

প্রকাশের সময় : ০৮:৫২:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

খালি হাতে অস্ত্রের মুখে দাঁড়িয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা তরুণদের বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। “বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্র বিনির্মানে মুক্তিযোদ্ধাদের করণীয় শীর্ষক” এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।

তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদকে সময় দিতে চায় বিএনপি। কিন্তু গণহত্যায় জড়িতের বিচার দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমান সরকার শিক্ষার্থী, তাদের বাবা-মা ও ১৬ বছর নির্যাতিত রাজনৈতিক দলগুলোর সরকার। তাই গণহত্যায় জড়িতদের বিচার দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে।

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ১৮ বছরের সবাইকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, জনগণের সরকারই পারে একাত্তরের চেতনার বাস্তবায়ন করতে। সংস্কার করার জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যথেষ্ট। আপনারা (অন্তর্র্বতী সরকার) শুধু প্রস্তাব দিতে পারেন। আমরা নজর রাখবো সরকার কীভাবে সংস্কার করে? এ সরকার সবার সরকার। শুধু ছাত্রদের সরকার না। এখানে সবার অংশগ্রহণ রয়েছে। আমরা আগস্ট বিপ্লবের প্রতিফলন দেখতে চাই। আগস্ট বিপ্লবের ইতিহাস যাতে কেউ বিকৃত করতে না পারে।

মেজর হাফিজ বলেন, এই সরকারের (অন্তর্বতীকালীন) উচিত ছিলো একটি ভালো নির্বাচন কমিশন গঠন করা। কিন্তু তারা সেটি করেনি। কোনো রোডম্যাপ দেয়নি। শুধু ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। সেনানিবাসে আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও পুলিশ অফিসারদেরকে আশ্রয় দেওয়া উচিৎ হয়নি।

গত জুলাই-আগস্টে আন্দোলন প্রসঙ্গে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শুধু ছাত্রদের আন্দোলনে বিপ্লব হয়নি। বিএনপি ১৭ বছর ধরে আন্দোলন করছে। তারই ধারাবাহিকতায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়েছে। আমি বলবো- সবাইকে স্মরণ করবেন। ড. ইউনূস একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আমেরিকায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলেছেন। কাজ করেছেন। আমি বলবো- ছাত্র-জনতা সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অনেকেই মনে করে আপনারা দুর্বল সরকার। সেজন্য আনসার বাহিনী দিয়ে প্রতিবিপ্লবের ষড়যন্ত্র করেছে। সুতরাং আমি বলবো- আপনারা যে দুর্বল নন, সেটি প্রমাণ করতে সবার সঙ্গে মতবিনিময় করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা নিন।

মেজর হাফিজ বলেন, জনগণের সরকারই পারে একাত্তরের চেতনার বাস্তবায়ন করতে। সংস্কার করার জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যথেষ্ট। আপনারা (অন্তর্বতী সরকার) শুধু প্রস্তাব দিতে পারেন। আমরা নজর রাখবো সরকার কীভাবে সংস্কার করে। এই সরকার সবার সরকার। শুধু ছাত্রদের সরকার না। এখানে সবার অংশগ্রহণ রয়েছে। আমরা আগস্ট বিপ্লবের প্রতিফলন আমরা দেখতে চাই। আগস্ট বিপ্লবের ইতিহাস যাতে কেউ বিকৃত করতে না পারে।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আমাদের সবার রোগ হলো দুর্নীতি। এর বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশের দেশ ভারত থেকে সেটা শিখতে পারি। তাদের দেশে আইন করা আছে যে প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণিত হলে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে সরাসরি জেলখানায় নিয়ে যাওয়া যায়। সে ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ আমাদেরকেও দিতে হবে। দুদককে শক্তিশালী করতে হবে। সংসদ নেতা, বিরোধী দলীয় নেতা ও প্রধান বিচারপতি দুদক চেয়ারম্যানের নিয়োগ দেবেন। যেটি ভারতে রয়েছে।

তিনি বলেন, যারা স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে জীবন বাজি রেখেছেন সেই আহত ব্যাক্তিরা হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় কাতরাচ্ছে। এতো সহজেই তাদেরকে ভুলে গেছেন? আমরা যতদিন বাঁচবো ততদিন আগস্টের আন্দোলনের চেতনা নিয়ে বাঁচতে চাই। এই অধিকার যেন কেউ নষ্ট করতে না পারে আমরা সজাগ থাকবো। কেননা, শেখ হাসিনা সবাইকে ঢালাওভাবে রাজাকার বলার কারণে দেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ ফুঁসে উঠেছে।

পার্বত্যাঞ্চলে অস্থিরতা প্রসঙ্গে মেজর হাফিজ বলেন, পাহাড়ের লোকজন সহজ সরল। তাদেরকে ভুল পথে পরিচালিত করার ষড়যন্ত্র হয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শক্ত পদক্ষেপের কারণে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আমি প্রতিবেশি দেশ ভারতকে বলবো তাদেরকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে উস্কানি দিবেন না। যুদ্ধ করতে হলে বাংলাদেশের সকল মানুষ কিন্তু যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ১৮ বছরের সকলকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হবে। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যা বিশ্বের অনেক দেশে আছে। প্রত্যেক নাগরিক ১ থেকে ২ বছরের সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের জয়নুল আবদীন, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ।