নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক বলেছেন, শেখ হাসিনা যদি ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতো তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিল্লির পায়ের নিচে থাকতো।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টি আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, শেখ হাসিনা যদি ২০৪১ সাল পর্যন্ত থাকতো তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিল্লির পায়ের নিচে থাকতো। যারা মায়ের বুক খালি করেছে তারা কিভাবে ভারতে পালিয়ে গেল তাদের নামে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে এই সরকারকে। তারেক রহমান বলেছেন আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই যেই নির্বাচনে কবর থেকে উঠে এসে যেন ভোট দিতে না পারে। একজন ব্যক্তি যেন একটা ভোটই দিতে পারেন। ইউনূস সরকারকে যৌক্তিক সময় নিয়ে অবশ্যই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। অবিলম্বে রাজনৈতিক দলের সাথে আলাপ-আলোচনা করে জনপ্রতিনিধিদের হাতে দেশের দায়িত্বভার দেওয়া হোক।
তিনি বলেন, ১৬ বছরের নির্যাতন, ১৬ বছর আয়নাঘরে থাকা, ১৬ বছরের গুম, ১৬ বছরের খুন, করা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে আল্লাহ দেশ থেকে বিতাড়িত করেছেন। বাবার দেশ হিসেবে তিনি গর্ব করতেন সেই বাবার মৃত্যুর মাসেই তিনি বিদায় নিয়েছেন।
তিনি বলেন, সাংবাদিক ভাইয়েরা গুলি খেয়েও সংবাদ সংগ্রহ করেছেন কিন্তু ওই সংবাদগুলো প্রচার করতে পারেন নাই। মির্জা ফখরুল কি বলেছে সেগুলো কাটছাঁট করে প্রকাশ করা হয়েছে। কিছু কুচক্রী মহল এখনো দেশের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ঘাপটি মেরে বসে আছে। শেখ হাসিনার মদদপুষ্ট ফখরুদ্দিন এই ১১ সেপ্টেম্বরেই তারেক রহমানকে প্লেনে চড়িয়ে বিদেশে পাঠিয়েছিল। দেশের মানুষ উপদেষ্টাদের কাছে জানতে চায় এখনো কেন শেখ হাসিনার প্রেতাত্মারা সচিবালয়ে বসা।
ফারুক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এজন্য এসেছে সংবিধানমতো দেশ চলবে, এ সরকার এজন্য এসেছে আওয়ামী লীগের মতো, ছাত্রলীগ-যুবলীগের মতো ৩ লাখ থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল দিয়ে কোনো দিনই সরকার বাংলাদেশে পরিচালিত হতে দেবে না। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, আমি এমন একটি নির্বাচন চাই, এমন একটি ভোট চাই যে ভোটে জনগণ এক মাথায় এক ভোট দিতে পারে, মৃত ব্যক্তি আর কবর থেকে উঠে যেন ভোট না দিতে পারে। সেজন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা, আপনার কাছে জনগণের আশা, আপনার কাছে আমাদের আশা, আপনার কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের আশা আপনি সেই আশা পূরণ করবেন… যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন।
বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিগত সরকার আমলে দায়েরকৃত ৪০ লাখ মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান ফারুক।
তিনি বলেন, ৪০ লাখ মামলা দায়ের করা হয়েছে আমাদের বিরুদ্ধে। আমার বিরুদ্ধে ৮৪টি মামলা। আমার বাড়ি থেকে আমার ছোট্ট নাতনি যখন তিন মাস বয়স সে কাঁদতেছে তখন আমার বাড়ির দরজা ভেঙে হারুন (ডিবির সাবেক প্রধান হারুন অর রশিদ) তুলে যায়, এ কথাগুলো কি আমাদের মনে আছে? তাই ৪০ লাখ মামলা কেন এখনও রাষ্ট্রপতির আদেশবলে প্রত্যাহার করা হচ্ছে না জনগণ বলা শুরু করেছে। আর নয় ২০১৪ সাল, আর নয় ২০১৮, আর নয় ২০২৪ সাল। এবার চাই অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন।
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এস এম শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাওলানা শাহ মোহা নেসারুল হক, আনোয়ার হোসেন বুলু, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি সভাপতি ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি কারী আবু তাহের, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টির মহাসচিব সাইফুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর আমির হোসেন আমু, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ডিএল এর সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাস প্রমুখ।