Dhaka বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হারের হ্যাটট্রিক বাংলাদেশের

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১০:৪৪:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩
  • ২১৭ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

জয় দিয়ে শুরু বিশ্বকাপ। এরপর টানা দুই হার। এবার ভারতের কাছে হেরে হ্যাটট্রিক হারের তেঁতো স্বাদ পেলো বাংলাদেশ। নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে বিরাট কোহলির সেঞ্চুরিতে ভারতের কাছে ৭ উইকেটে হেরেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত। ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম।

নিজেদের বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি গড়েন তামিম-লিটন। উদ্বোধনী জুটিতে ৯৩ রান সংগ্রহ করেন এই দুই ব্যাটার। তবে এরপরই ছন্দপতন হয় বাংলাদেশের।

শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৫৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। তানজিদ তামিম ৪৩ বলে ৫১ ও লিটন ৮২ বলে ৬৬ রান করেন। ভারতের পক্ষে জসপ্রীত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ ও রবীন্দ্র জাদেজা নেন ২টি করে উইকেট।

বাংলাদেশের দেয়া ২৫৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আজ শুরু থেকেই হাত খুলে খেলেছেন অধিনায়ক রোহিত। আর তাকে যোগ্য সঙ্গে দিয়ে গেছেন টুর্নামেন্টে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা শুভমান গিল। এ দুজন মিলে প্রথম দশ ওভারেই স্কোরবোর্ডে তুলেন ৬৩ রান। পরের ২ ওভারে যা পৌঁছে ৮০ রানে।

তবে এরপরই নিজের ব্যক্তিগত ফিফটি থেকে মাত্র ২ রান দূরে থাকতে ইনিংসের ত্রয়োদশ ওভারে হাসান মাহমুদের বলে পুল শটে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ফাইন লেগে তাওহীদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচে পরিণত হন অধিনায়ক রোহিত। সাজঘরে ফেরার আগে ৪০ বল খেলে করেছেন ৭ চার এবং ২ ছয়ে করেছেন ৪৮ রান।

৮৮ রানে ভারতের ওপেনিং জুটি ভাঙার পর মাঠে গিলের সঙ্গী হন কোহলি। এ দুজন মিলে পরে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন আরও ৪৪ রান। তবে গিল নিজের ফিফটি তুলে নেয়ার পর দলীয় ১৩২ রানে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে এ জুটি। ৫৫ বলে ৫৩ রান করা গিলকে ফিরিয়েছেন মেহেদী মিরাজ।

গিল ফেরার পর ক্রিজে কোহলির সঙ্গী হন শ্রেয়াস আইয়্যার। এ জুটিতেও ৪৬ রান যোগ হয় ভারতের স্কোরবোর্ডে। এরপর ১৯ রান করা শ্রেয়াসকেও ফেরান মিরাজ ভারতের দলীয় ১৭৮ রানে। তবে শ্রেয়াস ফিরলেও জয় তুলে নিতে কোনো বেগই পেতে হয়নি স্বাগতিকদের।

লোকেশ রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে বাকি কাজটুকু সেরেছেন কোহলি। ৪৮ বলে ফিফটি তুলে নেয়া কোহলি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেছেন ৯৭ বলে ১০৩ রানে। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেয়া রাহুল করেছেন ৩৪ বলে ৩৪ রান। ফলে টুর্নামেন্টে নিজেদের টানা চতুর্থ জয় তুলে নিয়েছে ভারত। টাইগারদের হয়ে আজ সর্বোচ্চ ২টি উইকেট পেয়েছেন মিরাজ। আর দুর্দান্ত শতকে আজকের ম্যাচসেরা হয়েছেন ক্যারিয়ারের ৭৮ তম সেঞ্চুরি তুলে নেয়া কোহলি।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পুনের ব্যাটিং স্বর্গে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই সিদ্ধান্তের মান দুই ওপেনার রাখলেও পরের ব্যাটসম্যানরা পারেননি। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ রানের জুটি (৯৩ রান) আসে লিটন ও তামিমের ব্যাট থেকে। দুজনের জুটি ভেঙে দেয় ৯৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে গড়া ৬৯ রানের জুটি। রানের সন্ধানে থাকা তানজিদ তামিম খেলেছেন দুর্দান্ত এক ইনিংস। মারকুটে ব্যাটিং উপহার দিয়ে তুলে নেন ফিফটি। ৫ চার আর ৩ ছয়ে ৪১ বলে আসে তার অর্ধশতক।

কিন্তু এরপরই বাংলাদেশ ইনিংসের লাগাম টেনে ধরেন কুলদীপ যাদব। তার বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তানজিদ তামিম। এই এক উইকেটের পতনই যেন ম্যাচে ফিরিয়ে আনে ভারতকে।

এরপর অধিনায়ক শান্তকে বেশিক্ষণ দেখা যায়নি ক্রিজে। ৮ রানে রবীন্দ্র জাদেজার বলে আউট হয়ে ফিরে যান শান্ত। থিতু হতে পারেননি মিরাজও। ১৩ বলে ৩ রান করা মিরাজ আউট হয়েছেন নিতান্ত খামখেয়ালিতে। লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অযথা ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন মিরাজ।

তবে অপরপ্রান্তে টিকে ছিলেন লিটন দাস। সবরকমের বিতর্ক ছাপিয়ে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ১২তম ওয়ানডে ফিফটি। ফিফটির পর আগ্রাসী হবার আভাস দিয়েছিলেন লিটন। সেখানেই কাটা পড়েন তিনি। ৬৬ রানে জাদেজার বলে শুভমান গিলের হাতে ধরা পড়েন লিটন।

ক্রিজে এসে রীতিমতো সংগ্রাম করতে হচ্ছিল তাওহিদ হৃদয়কে। ৩৫ বল খেলেও কোনো বাউন্ডারির দেখা পাননি। শেষ পর্যন্ত তাকে ‘মুক্তি’ দেন শার্দুল ঠাকুর! এই পেসারের খাটো লেন্থের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অনে শুবমান গিলের হাতে ধরা পড়েন হৃদয়। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ১৬ রান।

মুশফিক আভাস দিয়েছিলেন বড় ইনিংসের। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে জাদেজার দুর্দান্ত ক্যাচের কারণে ফিরতে হয়েছে তাকে। ফেরার আগে করেছেন ৩৮ রান। মাঝে নাসুম চেষ্টা করেছিলেন বড় শট খেলতে। একটা চারও এসেছিল তার ব্যাট থেকে। অবশ্য সেটা আর হয়নি। ফিরেছেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে।

ভরসার প্রতীক আবারও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে এসেছে ৩ চার এবং ৩ ছয়। তার ৪৬ রানের ইনিংস বাংলাদেশকে টেনে নিয়ে গেছে আড়াইশ পর্যন্ত।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নেপালে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা নিরাপদে আছেন : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

হারের হ্যাটট্রিক বাংলাদেশের

প্রকাশের সময় : ১০:৪৪:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

জয় দিয়ে শুরু বিশ্বকাপ। এরপর টানা দুই হার। এবার ভারতের কাছে হেরে হ্যাটট্রিক হারের তেঁতো স্বাদ পেলো বাংলাদেশ। নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে বিরাট কোহলির সেঞ্চুরিতে ভারতের কাছে ৭ উইকেটে হেরেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত। ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম।

নিজেদের বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি গড়েন তামিম-লিটন। উদ্বোধনী জুটিতে ৯৩ রান সংগ্রহ করেন এই দুই ব্যাটার। তবে এরপরই ছন্দপতন হয় বাংলাদেশের।

শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৫৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। তানজিদ তামিম ৪৩ বলে ৫১ ও লিটন ৮২ বলে ৬৬ রান করেন। ভারতের পক্ষে জসপ্রীত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ ও রবীন্দ্র জাদেজা নেন ২টি করে উইকেট।

বাংলাদেশের দেয়া ২৫৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আজ শুরু থেকেই হাত খুলে খেলেছেন অধিনায়ক রোহিত। আর তাকে যোগ্য সঙ্গে দিয়ে গেছেন টুর্নামেন্টে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা শুভমান গিল। এ দুজন মিলে প্রথম দশ ওভারেই স্কোরবোর্ডে তুলেন ৬৩ রান। পরের ২ ওভারে যা পৌঁছে ৮০ রানে।

তবে এরপরই নিজের ব্যক্তিগত ফিফটি থেকে মাত্র ২ রান দূরে থাকতে ইনিংসের ত্রয়োদশ ওভারে হাসান মাহমুদের বলে পুল শটে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ফাইন লেগে তাওহীদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচে পরিণত হন অধিনায়ক রোহিত। সাজঘরে ফেরার আগে ৪০ বল খেলে করেছেন ৭ চার এবং ২ ছয়ে করেছেন ৪৮ রান।

৮৮ রানে ভারতের ওপেনিং জুটি ভাঙার পর মাঠে গিলের সঙ্গী হন কোহলি। এ দুজন মিলে পরে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন আরও ৪৪ রান। তবে গিল নিজের ফিফটি তুলে নেয়ার পর দলীয় ১৩২ রানে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে এ জুটি। ৫৫ বলে ৫৩ রান করা গিলকে ফিরিয়েছেন মেহেদী মিরাজ।

গিল ফেরার পর ক্রিজে কোহলির সঙ্গী হন শ্রেয়াস আইয়্যার। এ জুটিতেও ৪৬ রান যোগ হয় ভারতের স্কোরবোর্ডে। এরপর ১৯ রান করা শ্রেয়াসকেও ফেরান মিরাজ ভারতের দলীয় ১৭৮ রানে। তবে শ্রেয়াস ফিরলেও জয় তুলে নিতে কোনো বেগই পেতে হয়নি স্বাগতিকদের।

লোকেশ রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে বাকি কাজটুকু সেরেছেন কোহলি। ৪৮ বলে ফিফটি তুলে নেয়া কোহলি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেছেন ৯৭ বলে ১০৩ রানে। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেয়া রাহুল করেছেন ৩৪ বলে ৩৪ রান। ফলে টুর্নামেন্টে নিজেদের টানা চতুর্থ জয় তুলে নিয়েছে ভারত। টাইগারদের হয়ে আজ সর্বোচ্চ ২টি উইকেট পেয়েছেন মিরাজ। আর দুর্দান্ত শতকে আজকের ম্যাচসেরা হয়েছেন ক্যারিয়ারের ৭৮ তম সেঞ্চুরি তুলে নেয়া কোহলি।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পুনের ব্যাটিং স্বর্গে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই সিদ্ধান্তের মান দুই ওপেনার রাখলেও পরের ব্যাটসম্যানরা পারেননি। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ রানের জুটি (৯৩ রান) আসে লিটন ও তামিমের ব্যাট থেকে। দুজনের জুটি ভেঙে দেয় ৯৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে গড়া ৬৯ রানের জুটি। রানের সন্ধানে থাকা তানজিদ তামিম খেলেছেন দুর্দান্ত এক ইনিংস। মারকুটে ব্যাটিং উপহার দিয়ে তুলে নেন ফিফটি। ৫ চার আর ৩ ছয়ে ৪১ বলে আসে তার অর্ধশতক।

কিন্তু এরপরই বাংলাদেশ ইনিংসের লাগাম টেনে ধরেন কুলদীপ যাদব। তার বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তানজিদ তামিম। এই এক উইকেটের পতনই যেন ম্যাচে ফিরিয়ে আনে ভারতকে।

এরপর অধিনায়ক শান্তকে বেশিক্ষণ দেখা যায়নি ক্রিজে। ৮ রানে রবীন্দ্র জাদেজার বলে আউট হয়ে ফিরে যান শান্ত। থিতু হতে পারেননি মিরাজও। ১৩ বলে ৩ রান করা মিরাজ আউট হয়েছেন নিতান্ত খামখেয়ালিতে। লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অযথা ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন মিরাজ।

তবে অপরপ্রান্তে টিকে ছিলেন লিটন দাস। সবরকমের বিতর্ক ছাপিয়ে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ১২তম ওয়ানডে ফিফটি। ফিফটির পর আগ্রাসী হবার আভাস দিয়েছিলেন লিটন। সেখানেই কাটা পড়েন তিনি। ৬৬ রানে জাদেজার বলে শুভমান গিলের হাতে ধরা পড়েন লিটন।

ক্রিজে এসে রীতিমতো সংগ্রাম করতে হচ্ছিল তাওহিদ হৃদয়কে। ৩৫ বল খেলেও কোনো বাউন্ডারির দেখা পাননি। শেষ পর্যন্ত তাকে ‘মুক্তি’ দেন শার্দুল ঠাকুর! এই পেসারের খাটো লেন্থের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অনে শুবমান গিলের হাতে ধরা পড়েন হৃদয়। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ১৬ রান।

মুশফিক আভাস দিয়েছিলেন বড় ইনিংসের। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে জাদেজার দুর্দান্ত ক্যাচের কারণে ফিরতে হয়েছে তাকে। ফেরার আগে করেছেন ৩৮ রান। মাঝে নাসুম চেষ্টা করেছিলেন বড় শট খেলতে। একটা চারও এসেছিল তার ব্যাট থেকে। অবশ্য সেটা আর হয়নি। ফিরেছেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে।

ভরসার প্রতীক আবারও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে এসেছে ৩ চার এবং ৩ ছয়। তার ৪৬ রানের ইনিংস বাংলাদেশকে টেনে নিয়ে গেছে আড়াইশ পর্যন্ত।