আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
তুরস্কের ১০০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ফলপ্রসূ নির্বাচনে ভোট দিয়েছে দেশটির জনগণ। চলছে গণনা। এরই মধ্যে ৮৪ শতাংশ ভোট গণনা শেষে হয়েছে। এখনও লক্ষাধিক ভোট গণনা বাকি আছে। প্রাথমিক ফলাফলে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একেপি) এগিয়ে আছে বিরোধী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কেমাল কিলিকদারোগ্লুর চেয়ে।
প্রাথমিক বেসরকারি ফলাফলে দেখা যাচ্ছে যে এরদোয়ান ৫২.৭ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কিলিকদারোগ্লু ৪১.৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। গণনা করা ৪০.০৪ শতাংশ ভোটের ওপর ভিত্তি করে এ ফলাফল দিয়েছে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।
এবার নির্বাচনের ভোট কেন্দ্রগুলো স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় বন্ধ হয়ে গেছে। এবার প্রতিটি ভোটার দু’টি ব্যালটে ভোট দিয়েছেন।
এ নির্বাচনে বিপুল ভোটার সমাগম হয়েছে। বিশেষ করে তুরস্কের বৃহত্তম শহরগুলোতে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। রোববার রাতে বলা যাবে যে কোন প্রার্থী এগিয়ে আছেন এবং দ্বিতীয় দফায় কোনো ভোট হবে কিনা।
জনমত জরিপে এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন কামাল কিলিকদারোগ্লু। তিনি একটি ছয়-দলীয় জোটের প্রধান। রোববার যদি কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না জিততে পারে, তবে ২৮ মে দ্বিতীয় দফায় ভোট হবে।
তুরস্কের এ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাধ্যমেই এটা বলা যাবে যে কে আট কোটি জনসংখ্যার তুরস্ককে নেতৃত্ব দেবে। বিষয়টা শুধু তুরস্কেই সীমাবদ্ধ নয়, ন্যাটো জোটেও এ নির্বাচনের প্রভাব পড়বে।
তুরস্কে এবার ছয় কোটি ৪১ লাখের বেশি লোক ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধিত হয়েছেন। এদের মধ্যে প্রায় ১৭ লাখ ৬০ হাজার তুর্কি বিদেশে থেকে ভোট দিয়েছেন। এছাড়া দেশটিতে প্রায় ৪৯ লাখ লোক নতুন করে ভোটার হয়েছেন।
দেশটিতে ভোটারদের জন্য মোট এক লাখ ৯১ হাজার ৮৮৫টি ব্যালট বাক্স স্থাপন করা হয়।
প্রতিটি ভোটার দু’টি ব্যালটে ভোট দেন। এগুলোর মধ্যে একটি প্রেসিডেন্ট ও অন্যটি এমপি নির্বাচনের জন্য। দেশটিতে প্রেসিডেন্ট ও এমপির কার্যকালের মেয়াদ পাঁচ বছর।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভোটাররা রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, প্রধান বিরোধী দলীয় প্রার্থী কামাল কিলিকদারোগ্লু ও সিনান ওগানকে ভোট দেন।
এবার তুরস্কে ৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল এবং ১৫০টিরও বেশি স্বতন্ত্র সংসদীয় প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
তুরস্কের স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই ভোট কেন্দ্রগুলোর সামনে ভোটাররা লাইনে দাঁড়ান। রোববার (১৪ মে) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয় বিকেল ৫টায়।
তুরস্কের নির্বাচনসংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, ভোটের দিন রাত ৯টা পর্যন্ত ফলাফল নিয়ে কোনো ধরনের সংবাদ প্রকাশ নিষিদ্ধ। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়াবে কি না, তার ইঙ্গিত আজ গভীর রাতের দিকে পাওয়া যেতে পারে। সূত্র : আল-জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি, বিবিসি।