Dhaka মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হজে প্লেন ভাড়া কমানো সম্ভব নয় : বিমানের সিইও

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ভারত এবং পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশে হজ প্যাকেজে বিমান ভাড়া অনেক কম বলে দাবি করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এবার ডলারের দাম অনেক বেড়েছে। এছাড়া বিমানের প্রতিটি হজ ফ্লাইটই ডেডিকেটেড। ফলে হজ ফ্লাইটে বিমান ভাড়া কমানো সম্ভব নয়।

রোববার (১৯ মার্চ) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রধান কার্যালয় বলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন তিনি। বিমানের সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, হজ প্যাকেজে ১৬টি ব্যয়ের খাত থাকে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে প্লেন ভাড়া। এই ভাড়া বিমান এককভাবে নির্ধারণ করে না। বিমান শুধু ফ্লাইটের ভাড়া প্রস্তাব করে। পরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়, সংসদীয় কমিটিসহ সরকারের অন্যান্য সংস্থা অনুমোদন দেয়।

বিমানের এমডি বলেন, আমরা ৩ মাস ধরে হজের বিমান ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করছি। আমাদের প্রথম প্রস্তাব ছিল ২ লাখ ১০ হাজার ৩৩৮ টাকা। পরে এটিকে কমিয়ে প্রায় ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাহী কমিটি এই ভাড়া নির্ধারণ করেছে। এবার ভাড়া বৃদ্ধির অন্যতম কারণ ট্যাক্স বৃদ্ধি, ডলারের রেট বৃদ্ধি, জেট ফুয়েলের দাম বৃদ্ধি। ভাড়া বৃদ্ধিতে আমাদের কোনো হাত নেই।

‘হজের বিমান ভাড়া কমছে কি না’- এমডিকে সংবাদ সম্মেলনে ৩/৪ বার এই প্রশ্ন করা হয়। তিনি এ বিষয়ে পরোক্ষভাবে উত্তর দেন। তিনি বলেন, হজের যে ভাড়া ধরা হয়েছে এটা একদম সর্বনিম্ন ও সর্বশেষ। আমরা যতটুকু সম্ভব কমিয়েছি। এর চেয়ে কম আর করা যায় না।

একই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হজ ফ্লাইটে যে বিমান ভাড়া ধরা হয়েছে সেটি একটি আদর্শ বিমান ভাড়া।

তিনি বলেন, হজ প্যাকেজ চূড়ান্ত হয়ে গেছে। সেখানে বিমান একটি মাত্র খাত। আমরা সর্বনিম্ন দিয়েছি। এরপর আমাদের আর কিছু করার নেই।

বিমান ভাড়া নির্ধারণের পদ্ধতি নিয়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করলে এমডি বলেন, হজের বিমান ভাড়া সায়েন্টিফিক উপায়ে নির্ধারণ করা হয়েছে। এটা নিয়ে অযৌক্তিক, অনুমান নির্ভর, অর্ধসত্য বলার সুযোগ নেই। হজযাত্রীরা আমাদেরও যাত্রী, তাদের সেবা দেওয়া আমাদের সর্বপ্রথম দায়িত্ব।

বিমানের হজ ফ্লাইট নির্বিঘ্নে শেষ করার জন্য যানবাহন সংখ্যা বৃদ্ধি, ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ, পাইলট ও কেবিন ক্রু নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সম্প্রতি মানবিক বিভাগ থেকে পাস করে বিমানে পাইলট হওয়া ও বিমানে পাইলট নিয়োগে দুর্নীতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যার বিষয়ে কথা বলা হয়েছে (পাইলট সাদিয়া) তিনি বিমানে পাইলট হিসেবে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পাননি। একজন পাইলট নিয়োগের আগে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে তাকে যেতে হয়। তার (সাদিয়া) কাছে পাইলটের লাইসেন্স ছিল। বিমানে তাকে পাইলট হিসেবে বাছাইয়ের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছিল। তার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এমডি বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিমান নিয়মিত জনসেবামূলক কাজ করে যাচ্ছে। তুরস্কের ভূমিকম্পের সময় টরন্টো থেকে বিনামূল্যে ত্রাণসামগ্রী ইস্তাম্বুলে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও বিমান শিগগিরই ভারতের চেন্নাই, ব্যাঙ্গালুরুতে ফ্লাইট চালু করবে। হজ ব্যবস্থাপনার পর আগস্টে জাপানের নারিতায় এবং এবছরের শেষে নিউইয়র্ক যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। গত বছরের চেয়ে এবার উভয় প্যাকেজেই বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। এবার বিমানের হজ ফ্লাইট ভাড়া প্রায় ৫৮ হাজার টাকার মতো বৃদ্ধি করে ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

হজে প্লেন ভাড়া কমানো সম্ভব নয় : বিমানের সিইও

প্রকাশের সময় : ০৭:০৭:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ভারত এবং পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশে হজ প্যাকেজে বিমান ভাড়া অনেক কম বলে দাবি করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এবার ডলারের দাম অনেক বেড়েছে। এছাড়া বিমানের প্রতিটি হজ ফ্লাইটই ডেডিকেটেড। ফলে হজ ফ্লাইটে বিমান ভাড়া কমানো সম্ভব নয়।

রোববার (১৯ মার্চ) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রধান কার্যালয় বলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন তিনি। বিমানের সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, হজ প্যাকেজে ১৬টি ব্যয়ের খাত থাকে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে প্লেন ভাড়া। এই ভাড়া বিমান এককভাবে নির্ধারণ করে না। বিমান শুধু ফ্লাইটের ভাড়া প্রস্তাব করে। পরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়, সংসদীয় কমিটিসহ সরকারের অন্যান্য সংস্থা অনুমোদন দেয়।

বিমানের এমডি বলেন, আমরা ৩ মাস ধরে হজের বিমান ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করছি। আমাদের প্রথম প্রস্তাব ছিল ২ লাখ ১০ হাজার ৩৩৮ টাকা। পরে এটিকে কমিয়ে প্রায় ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাহী কমিটি এই ভাড়া নির্ধারণ করেছে। এবার ভাড়া বৃদ্ধির অন্যতম কারণ ট্যাক্স বৃদ্ধি, ডলারের রেট বৃদ্ধি, জেট ফুয়েলের দাম বৃদ্ধি। ভাড়া বৃদ্ধিতে আমাদের কোনো হাত নেই।

‘হজের বিমান ভাড়া কমছে কি না’- এমডিকে সংবাদ সম্মেলনে ৩/৪ বার এই প্রশ্ন করা হয়। তিনি এ বিষয়ে পরোক্ষভাবে উত্তর দেন। তিনি বলেন, হজের যে ভাড়া ধরা হয়েছে এটা একদম সর্বনিম্ন ও সর্বশেষ। আমরা যতটুকু সম্ভব কমিয়েছি। এর চেয়ে কম আর করা যায় না।

একই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হজ ফ্লাইটে যে বিমান ভাড়া ধরা হয়েছে সেটি একটি আদর্শ বিমান ভাড়া।

তিনি বলেন, হজ প্যাকেজ চূড়ান্ত হয়ে গেছে। সেখানে বিমান একটি মাত্র খাত। আমরা সর্বনিম্ন দিয়েছি। এরপর আমাদের আর কিছু করার নেই।

বিমান ভাড়া নির্ধারণের পদ্ধতি নিয়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করলে এমডি বলেন, হজের বিমান ভাড়া সায়েন্টিফিক উপায়ে নির্ধারণ করা হয়েছে। এটা নিয়ে অযৌক্তিক, অনুমান নির্ভর, অর্ধসত্য বলার সুযোগ নেই। হজযাত্রীরা আমাদেরও যাত্রী, তাদের সেবা দেওয়া আমাদের সর্বপ্রথম দায়িত্ব।

বিমানের হজ ফ্লাইট নির্বিঘ্নে শেষ করার জন্য যানবাহন সংখ্যা বৃদ্ধি, ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ, পাইলট ও কেবিন ক্রু নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সম্প্রতি মানবিক বিভাগ থেকে পাস করে বিমানে পাইলট হওয়া ও বিমানে পাইলট নিয়োগে দুর্নীতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যার বিষয়ে কথা বলা হয়েছে (পাইলট সাদিয়া) তিনি বিমানে পাইলট হিসেবে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পাননি। একজন পাইলট নিয়োগের আগে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে তাকে যেতে হয়। তার (সাদিয়া) কাছে পাইলটের লাইসেন্স ছিল। বিমানে তাকে পাইলট হিসেবে বাছাইয়ের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছিল। তার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এমডি বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিমান নিয়মিত জনসেবামূলক কাজ করে যাচ্ছে। তুরস্কের ভূমিকম্পের সময় টরন্টো থেকে বিনামূল্যে ত্রাণসামগ্রী ইস্তাম্বুলে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও বিমান শিগগিরই ভারতের চেন্নাই, ব্যাঙ্গালুরুতে ফ্লাইট চালু করবে। হজ ব্যবস্থাপনার পর আগস্টে জাপানের নারিতায় এবং এবছরের শেষে নিউইয়র্ক যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। গত বছরের চেয়ে এবার উভয় প্যাকেজেই বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। এবার বিমানের হজ ফ্লাইট ভাড়া প্রায় ৫৮ হাজার টাকার মতো বৃদ্ধি করে ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।