Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্থানীয় নয়, অবশ্যই জাতীয় নির্বাচন আগে হতে হবে : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

স্থানীয় নয়, অবশ্যই জাতীয় নির্বাচন আগে হতে হবে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘নির্বাচন প্রলম্বিত করলে অন্তর্র্বতী সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) স্থপতি ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, শেষ ১৭ বছরে অবাধ, সুষ্ঠু এবং সর্বজন গ্রাহ্য যে নির্বাচন সেই নির্বাচনের যে ভয়ঙ্কর পরিণতি আমরা দেখতে পেয়েছি সেটা তো হওয়ার কথা ছিল না। এজন্য রাজনৈতিক বিজ্ঞানে পলিটিক্যাল সাইন্সে নতুন অধ্যায় সংযোজিত হয়েছে যে একতরফা এক ব্যক্তির নির্বাচনের জন্য কিভাবে রাষ্ট্রশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দিনের ভোট রাত্রে হয়েছে। ভোটারদেরকে মাইকিং করে ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে, ভোটকেন্দ্রগুলোর সামনে চতুষ্পদ জন্তুর পদচারণ আমরা লক্ষ্য করেছি, এই ধরনের নির্বাচন আমরা দেখেছি বিগত ১৬ থেকে ১৭ বছরে।

রিজভী বলেন, শুধু তাই নয় যারা বিরোধীদলের মনোনয়ন পেয়েছেন তাদের মনোনয়ন জমা দেয়ার সময়ও বাধা দেয়া হয়েছে, আর এটি দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা। কেউ কেউ সেটি জমাও দিতে পারেনি এসব ঘটনা স্থানীয় নির্বাচনের সময়ও হয়েছে জাতীয় নির্বাচনে সময়েও হয়েছে। একতরফা নির্বাচন করার জন্য রাষ্ট্রশক্তি যাদের হাতে থাকে তারা কী ভয়াবহ অত্যাচারের খর্গ এবং বাধার নজির সৃষ্টি করতো প্রতিপক্ষের উপরে সেটি বলে শেষ করা যাবে না। বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের উপর মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হতো, হামলা করা হতো।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া দরকার। এ সময়টা যেন খুব বেশি প্রলম্বিত না হয়, এ কথাটা বলা হয়েছে। নির্বাচন যদি খুব বেশি দেরি হয় তাহলে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দেবে। সেই প্রশ্নটা যাতে দেখা না দেয়। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার জনসমর্থিত সরকার। এই সরকার সবসময় মানুষের সেন্টিমেন্ট ধারণ করে কাজ করে। আমি গতকাল বলেছি, প্রথমে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের পরিবর্তন ঘটে। সেই মূল কাজ বাদ দিয়ে যদি সাবসিডিয়ারি কাজ প্রথমে শুরু করে দেয়, তাহলে এটা গ্রহণযোগ্য হবে না।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইসি এখনো সর্বেসর্বা। রাজনৈতিক সরকার গঠিত হওয়ার পর ইসি কেন জানি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিছুটা অধীন হয়ে পড়ে, পরাধীন হয়ে যায়। আইন, সংবিধান বলে তাদের যে নিজস্ব স্বাধীনতা সেই স্বাধীনতা তারা প্রয়োগ করতে চান না বা পারেন না। নিজে নিজেই দুর্বল হয়ে পড়ে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের সময় অনেক ক্ষেত্রেই হস্তক্ষেপ হয়, অনেক ঘটনা ঘটে। এখানে একটা প্রবেশন (সংশোধন) থাকা দরকার, যে দলীয় সরকার থাকবে কিন্তু ইসি পরিপূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, অনেকে আগের উদাহরণ দেয়। আগের সরকার ও ড. ইউনূসের সরকার তো এক হওয়ার কথা না। এই সরকারকে একটা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে।

তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আমার প্রার্থীকে জেতাতে হবে এমন মনোভাব থাকলে অবাধ নির্বাচন থাকবে না। আমিই সব, আমার দল সব, অন্যকিছু নেই- এ ধরনের চেতনার পরিবর্তন করতে হবে। এর পরিবর্তন করতে পারলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। মানসিকতার পরিবর্তন না করলে সংস্কার ফলপ্রসূ হবে না।

বিগত সরকারের সময়ে ইসি তার নিজস্ব স্বাধীনতা খর্ব করতে প্রস্তাব দিয়েছিল জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তাদের অনেক ক্ষমতা সরকারের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিল। কী অনুগত ইসি ছিল, যারা কমিশনার ছিলেন তাদের সরকার বেছে বেছে নিয়েছে। যারা তাদের জন্য স্লোগান দিতে পারে। ফলে ইসির স্বাধীনতা কী এটা তারা বুঝতে চাইতো না। তারা যেটা মনে করতেন আমি কতটুকু চামচামি করলে প্রধানমন্ত্রী খুশি হবেন, সেই কাজটাই তারা করতেন।

দেশ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ এহসান কবির শানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- সংগীত পরিচালক ইথুন বাবু, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ প্রমুখ।

আবহাওয়া

আর্থিক সংকটে চট্টগ্রামের স্মার্ট স্কুল বাস সার্ভিস

স্থানীয় নয়, অবশ্যই জাতীয় নির্বাচন আগে হতে হবে : রিজভী

প্রকাশের সময় : ০২:২৩:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

স্থানীয় নয়, অবশ্যই জাতীয় নির্বাচন আগে হতে হবে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘নির্বাচন প্রলম্বিত করলে অন্তর্র্বতী সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) স্থপতি ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, শেষ ১৭ বছরে অবাধ, সুষ্ঠু এবং সর্বজন গ্রাহ্য যে নির্বাচন সেই নির্বাচনের যে ভয়ঙ্কর পরিণতি আমরা দেখতে পেয়েছি সেটা তো হওয়ার কথা ছিল না। এজন্য রাজনৈতিক বিজ্ঞানে পলিটিক্যাল সাইন্সে নতুন অধ্যায় সংযোজিত হয়েছে যে একতরফা এক ব্যক্তির নির্বাচনের জন্য কিভাবে রাষ্ট্রশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দিনের ভোট রাত্রে হয়েছে। ভোটারদেরকে মাইকিং করে ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে, ভোটকেন্দ্রগুলোর সামনে চতুষ্পদ জন্তুর পদচারণ আমরা লক্ষ্য করেছি, এই ধরনের নির্বাচন আমরা দেখেছি বিগত ১৬ থেকে ১৭ বছরে।

রিজভী বলেন, শুধু তাই নয় যারা বিরোধীদলের মনোনয়ন পেয়েছেন তাদের মনোনয়ন জমা দেয়ার সময়ও বাধা দেয়া হয়েছে, আর এটি দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা। কেউ কেউ সেটি জমাও দিতে পারেনি এসব ঘটনা স্থানীয় নির্বাচনের সময়ও হয়েছে জাতীয় নির্বাচনে সময়েও হয়েছে। একতরফা নির্বাচন করার জন্য রাষ্ট্রশক্তি যাদের হাতে থাকে তারা কী ভয়াবহ অত্যাচারের খর্গ এবং বাধার নজির সৃষ্টি করতো প্রতিপক্ষের উপরে সেটি বলে শেষ করা যাবে না। বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের উপর মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হতো, হামলা করা হতো।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া দরকার। এ সময়টা যেন খুব বেশি প্রলম্বিত না হয়, এ কথাটা বলা হয়েছে। নির্বাচন যদি খুব বেশি দেরি হয় তাহলে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দেবে। সেই প্রশ্নটা যাতে দেখা না দেয়। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার জনসমর্থিত সরকার। এই সরকার সবসময় মানুষের সেন্টিমেন্ট ধারণ করে কাজ করে। আমি গতকাল বলেছি, প্রথমে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের পরিবর্তন ঘটে। সেই মূল কাজ বাদ দিয়ে যদি সাবসিডিয়ারি কাজ প্রথমে শুরু করে দেয়, তাহলে এটা গ্রহণযোগ্য হবে না।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইসি এখনো সর্বেসর্বা। রাজনৈতিক সরকার গঠিত হওয়ার পর ইসি কেন জানি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিছুটা অধীন হয়ে পড়ে, পরাধীন হয়ে যায়। আইন, সংবিধান বলে তাদের যে নিজস্ব স্বাধীনতা সেই স্বাধীনতা তারা প্রয়োগ করতে চান না বা পারেন না। নিজে নিজেই দুর্বল হয়ে পড়ে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের সময় অনেক ক্ষেত্রেই হস্তক্ষেপ হয়, অনেক ঘটনা ঘটে। এখানে একটা প্রবেশন (সংশোধন) থাকা দরকার, যে দলীয় সরকার থাকবে কিন্তু ইসি পরিপূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, অনেকে আগের উদাহরণ দেয়। আগের সরকার ও ড. ইউনূসের সরকার তো এক হওয়ার কথা না। এই সরকারকে একটা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে।

তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আমার প্রার্থীকে জেতাতে হবে এমন মনোভাব থাকলে অবাধ নির্বাচন থাকবে না। আমিই সব, আমার দল সব, অন্যকিছু নেই- এ ধরনের চেতনার পরিবর্তন করতে হবে। এর পরিবর্তন করতে পারলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। মানসিকতার পরিবর্তন না করলে সংস্কার ফলপ্রসূ হবে না।

বিগত সরকারের সময়ে ইসি তার নিজস্ব স্বাধীনতা খর্ব করতে প্রস্তাব দিয়েছিল জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তাদের অনেক ক্ষমতা সরকারের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিল। কী অনুগত ইসি ছিল, যারা কমিশনার ছিলেন তাদের সরকার বেছে বেছে নিয়েছে। যারা তাদের জন্য স্লোগান দিতে পারে। ফলে ইসির স্বাধীনতা কী এটা তারা বুঝতে চাইতো না। তারা যেটা মনে করতেন আমি কতটুকু চামচামি করলে প্রধানমন্ত্রী খুশি হবেন, সেই কাজটাই তারা করতেন।

দেশ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ এহসান কবির শানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- সংগীত পরিচালক ইথুন বাবু, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ প্রমুখ।