Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সেবা দিয়ে যাচ্ছি, কে কোন দল করে বিবেচনা করি না: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সেবা দিচ্ছি মানুষকে। এ ক্ষেত্রে কে কোন দল করে, বিবেচনা করি না। সবাইকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। খালেদা জিয়াসহ বিএনপি জামায়াতের চিন্তার দৈন্যতা আছে। যার কারণে এরা মানসিক দৈন্যতায় ভোগে। এরা ভালো কিছু চিন্তা করতে পারে না।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৮০টি সমাপ্ত প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া দেশের ৬৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপিত ‘কমিউনিটি আই সেন্টার’ উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান।

আওয়ামী লীগ সরকারের বাস্তবায়ন করা কমিউনিটি ক্লিনিক বিএনপি ক্ষমতায় এসে বন্ধ করে দিয়েছিল অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত যখন সরকার ক্ষমতায় ছিলাম তখন প্রায় ১০ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রস্তুত করেছিলাম। এর মধ্যে চার হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালুও করেছিলাম। এর মাধ্যমে আমরা জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছিলাম। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। সেসময় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসে।

শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়েই কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়। কারণ তিনি মনে করতেন, এসব ক্লিনিকে যারা কাজ করবে বা চিকিৎসাসেবা নেবে তারা সবাই নাকি নৌকা মার্কায় ভোট দেবে। নৌকা মার্কায় ভোট দেবে এই আশঙ্কায় তিনি মানুষের যে স্বাস্থ্য সেবা আমরা দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছিলাম, সেটাই বন্ধ করে দেয়।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা যে ঘর দিচ্ছি। যে ভূমিহীন-গৃহহীন তাদেরকেই দিচ্ছি। কে কোন দল করে সেটা কিন্তু আমরা দেখছি না। আমরা মানুষকে মানুষ হিসেবেই গণ্য করি। সেভাবেই তাদের সেবাটা দিই। কমিউনিটি ক্লিনিকেও তো আমরা সবার জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু খালেদা জিয়া ও বিএনপি-জামায়াত জোটের চিন্তার দৈন্যতা আছে। তারা স্বার্থপরতায় ভোগে এবং মানুষের কল্যাণ চায় না। এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য।

চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা শুধু চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন না, একটা মানুষকে দেখার সুযোগ দিচ্ছেন, এটা অনেক বড় কাজ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে যাতে কোনো ধরনের অবহেলা না হয়, সে ব্যবস্থা আমরা করে যাচ্ছি। বিশেষ করে, অন্ধজনের বিলাও আলো, এ কাজটা করছি। সারা বাংলাদেশে অন্ধত্ব দূর করতে মানুষকে সেবা দিচ্ছি। অন্ধত্বের হার ৩৫ শতাংশ কমিয়েছি। আরও কমাতে কাজ করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের জীবেনের চাহিদা, অন্ন বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসা, সেই সাথে সাথে সড়ক যোগাযোগসহ সব ক্ষেত্রে ২০০৯ থেকে উন্নয়ন করেছি। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলে এগুলো করতে পেরেছি। এজন্য সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

জলাবদ্ধতা যেন সৃষ্টি না হয় সেদিকে নজর রাখার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব যায়গায় পানি সরে যাওয়ার জন্য জলাধার রাখতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে আমাদের দেশকে বাঁচাতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নদী নালাগুলো মানুষের জীবনের মতো। এগুলো প্রবাহ ঠিক রাখতে হবে। মানুষের হার্ট বন্ধ হলে যেমন মরে যায়, নদীর-নালার প্রবাহ বন্ধ হলে দেশটাই মরে যায়। শুধু পাড় বাধলেই হবে না, নদীর ড্রেজিংও করতে হবে। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রত্যেক এলাকায় নদী খাল বিল হাওরের পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে পদক্ষেপ নিয়েছি। নদীপথগুলোও সচল করার পদক্ষেপ নিই।

বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পানির হাহাকার অনেক জায়গায়। আমরা ব্যবহারে সাশ্রয়ী হলে উদ্বৃত্ত থাকলে রপ্তানি করতে পারবো। বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা অনেক ভর্তুকি দেই। এটারও ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবেন। পাশাপাশি নদী খাল বিল সব কিছু যেনো দূষণমুক্ত হয়, খেয়াল রাখবেন। যেকোনো প্রকল্প প্রণয়নে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখবেন। জলাধার রাখবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের জীবেনের চাহিদা, অন্ন বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসা, সেই সাথে সাথে সড়ক যোগাযোগসহ সব ক্ষেত্রে ২০০৯ থেকে উন্নয়ন করেছি। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলে এগুলো করতে পেরেছি। এ জন্য সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

শেখ হাসিনা বলেন, নদীর পাড় বাঁধিয়ে শুধু ভাঙন রোধ করা যাবে না, তাহলে পলি পড়ে নদী ভরাট হয়ে যাবে। বাংলাদেশ ব-দ্বীপ, বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে পলির দ্বারা। সারাবছর বৃষ্টিতে যে মাটি ধুঁয়ে যায়, বর্ষা এবং বন্যায় সেই পলিটা পড়ে আবার পুনর্ভরাট হয়। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন, যে অঞ্চলে বন্যা হয় সেখানেই কিন্তু পরের বার ফসল উৎপাদনটা বাড়ে। কারণ পলি পড়ার কারণে জমির উর্বরতা বাড়ে। পলির কারণে জমিটা ফসলের জন্য তৈরি হয়।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই প্রত্যেক এলাকাতে নদীনালা, খাল-বিল, পুকুর ও হাওড় বাওড় যা আছে সেগুলোতে যেন পানি সংরক্ষণ এবং পানি প্রবাহ বৃদ্ধি করা হয় তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। খালগুলোর সঙ্গে নদীর সংযোগ স্থাপন করা হয় সেই ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তাই পানি সংরক্ষণে নদী প্রবাহ ও খাল বিল ও জলাশয় ভরাট করে কোনো স্থাপনা বা প্রকল্প করা যাবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নদী-নালাগুলো মানুষের জীবনের মতো, এগুলোর প্রবাহ ঠিক রাখতে হবে। মানুষের হার্ট বন্ধ হলে যেমন মরে যায়, নদী-নালার প্রবাহ বন্ধ হলে দেশটাই মরে যাবে। শুধু পাড় বাধলেই হবে না, নদীর ড্রেজিংও করতে হবে। নদীমাতৃক দেশ আমাদের, তাই সরকার গঠনের পর থেকে নদীপথ সচল করার উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০১৮ সালে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে যাতে কোনো ধরনের অবহেলা না হয়, সে ব্যবস্থা আমরা করে যাচ্ছি। বিশেষ করে, অন্ধজনের বিলাও আলো, এ কাজটা করছি। সারা বাংলাদেশের মানুষের অন্ধত্ব দূর করতে কাজ করা হচ্ছে। অন্ধত্বের হার ৩৫ শতাংশ কমিয়ে আনা হয়েছে। অন্ধত্বের হার আরও কমানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার। এখন পর্যন্ত ২০ লাখ মানুষ কমিউনিটি আই সেন্টার থেকে সেবা নিয়েছেন। নৌকায় ভোট দিয়েছিল বলেই দেশের নানামুখী উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। সেজন্য দেশের জনগণকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

সরকারপ্রধান বলেন, করোনাকালে চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য আমাদের প্রতিটি নার্স-চিকিৎসককে আলাদা করে ভাতা দিতে হয়েছে। কারণ সেই সময়ে ভয়ে কেউই এগিয়ে আসতে চায়নি। এমনকি তাদের সুরক্ষায় পিপিইসহ বিভিন্ন ধরনের সুরক্ষা সামগ্রী কিনে দিতে হয়েছে। করোনার টিকা দেয়ার জন্য ভলান্টিয়ার তৈরি করতে হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশে লাখ লাখ মানুষ মারা গেছে, আল্লাহর রহমতে আমাদের তেমন ক্ষতি হয়নি।

শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে আমরা ১০ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছি। এসব কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রথম ৪ হাজার যখন চালু করি, তখন সেগুলো ৭০ ভাগের মতো সাফল্য অর্জন করে।কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। খালেদা সরকার ক্ষমতা এসেই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়। কারণ, এখানে যারা কাজ করবে, যারা সেবা নেবে, তারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবে, সুতরাং এগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সাবেক মন্ত্রী দস্তগীরের ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

সেবা দিয়ে যাচ্ছি, কে কোন দল করে বিবেচনা করি না: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০১:৩৭:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সেবা দিচ্ছি মানুষকে। এ ক্ষেত্রে কে কোন দল করে, বিবেচনা করি না। সবাইকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। খালেদা জিয়াসহ বিএনপি জামায়াতের চিন্তার দৈন্যতা আছে। যার কারণে এরা মানসিক দৈন্যতায় ভোগে। এরা ভালো কিছু চিন্তা করতে পারে না।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৮০টি সমাপ্ত প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া দেশের ৬৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপিত ‘কমিউনিটি আই সেন্টার’ উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান।

আওয়ামী লীগ সরকারের বাস্তবায়ন করা কমিউনিটি ক্লিনিক বিএনপি ক্ষমতায় এসে বন্ধ করে দিয়েছিল অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত যখন সরকার ক্ষমতায় ছিলাম তখন প্রায় ১০ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রস্তুত করেছিলাম। এর মধ্যে চার হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালুও করেছিলাম। এর মাধ্যমে আমরা জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছিলাম। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। সেসময় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসে।

শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়েই কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়। কারণ তিনি মনে করতেন, এসব ক্লিনিকে যারা কাজ করবে বা চিকিৎসাসেবা নেবে তারা সবাই নাকি নৌকা মার্কায় ভোট দেবে। নৌকা মার্কায় ভোট দেবে এই আশঙ্কায় তিনি মানুষের যে স্বাস্থ্য সেবা আমরা দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছিলাম, সেটাই বন্ধ করে দেয়।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা যে ঘর দিচ্ছি। যে ভূমিহীন-গৃহহীন তাদেরকেই দিচ্ছি। কে কোন দল করে সেটা কিন্তু আমরা দেখছি না। আমরা মানুষকে মানুষ হিসেবেই গণ্য করি। সেভাবেই তাদের সেবাটা দিই। কমিউনিটি ক্লিনিকেও তো আমরা সবার জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু খালেদা জিয়া ও বিএনপি-জামায়াত জোটের চিন্তার দৈন্যতা আছে। তারা স্বার্থপরতায় ভোগে এবং মানুষের কল্যাণ চায় না। এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য।

চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা শুধু চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন না, একটা মানুষকে দেখার সুযোগ দিচ্ছেন, এটা অনেক বড় কাজ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে যাতে কোনো ধরনের অবহেলা না হয়, সে ব্যবস্থা আমরা করে যাচ্ছি। বিশেষ করে, অন্ধজনের বিলাও আলো, এ কাজটা করছি। সারা বাংলাদেশে অন্ধত্ব দূর করতে মানুষকে সেবা দিচ্ছি। অন্ধত্বের হার ৩৫ শতাংশ কমিয়েছি। আরও কমাতে কাজ করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের জীবেনের চাহিদা, অন্ন বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসা, সেই সাথে সাথে সড়ক যোগাযোগসহ সব ক্ষেত্রে ২০০৯ থেকে উন্নয়ন করেছি। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলে এগুলো করতে পেরেছি। এজন্য সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

জলাবদ্ধতা যেন সৃষ্টি না হয় সেদিকে নজর রাখার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব যায়গায় পানি সরে যাওয়ার জন্য জলাধার রাখতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে আমাদের দেশকে বাঁচাতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নদী নালাগুলো মানুষের জীবনের মতো। এগুলো প্রবাহ ঠিক রাখতে হবে। মানুষের হার্ট বন্ধ হলে যেমন মরে যায়, নদীর-নালার প্রবাহ বন্ধ হলে দেশটাই মরে যায়। শুধু পাড় বাধলেই হবে না, নদীর ড্রেজিংও করতে হবে। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রত্যেক এলাকায় নদী খাল বিল হাওরের পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে পদক্ষেপ নিয়েছি। নদীপথগুলোও সচল করার পদক্ষেপ নিই।

বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পানির হাহাকার অনেক জায়গায়। আমরা ব্যবহারে সাশ্রয়ী হলে উদ্বৃত্ত থাকলে রপ্তানি করতে পারবো। বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা অনেক ভর্তুকি দেই। এটারও ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবেন। পাশাপাশি নদী খাল বিল সব কিছু যেনো দূষণমুক্ত হয়, খেয়াল রাখবেন। যেকোনো প্রকল্প প্রণয়নে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখবেন। জলাধার রাখবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের জীবেনের চাহিদা, অন্ন বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসা, সেই সাথে সাথে সড়ক যোগাযোগসহ সব ক্ষেত্রে ২০০৯ থেকে উন্নয়ন করেছি। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলে এগুলো করতে পেরেছি। এ জন্য সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

শেখ হাসিনা বলেন, নদীর পাড় বাঁধিয়ে শুধু ভাঙন রোধ করা যাবে না, তাহলে পলি পড়ে নদী ভরাট হয়ে যাবে। বাংলাদেশ ব-দ্বীপ, বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে পলির দ্বারা। সারাবছর বৃষ্টিতে যে মাটি ধুঁয়ে যায়, বর্ষা এবং বন্যায় সেই পলিটা পড়ে আবার পুনর্ভরাট হয়। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন, যে অঞ্চলে বন্যা হয় সেখানেই কিন্তু পরের বার ফসল উৎপাদনটা বাড়ে। কারণ পলি পড়ার কারণে জমির উর্বরতা বাড়ে। পলির কারণে জমিটা ফসলের জন্য তৈরি হয়।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই প্রত্যেক এলাকাতে নদীনালা, খাল-বিল, পুকুর ও হাওড় বাওড় যা আছে সেগুলোতে যেন পানি সংরক্ষণ এবং পানি প্রবাহ বৃদ্ধি করা হয় তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। খালগুলোর সঙ্গে নদীর সংযোগ স্থাপন করা হয় সেই ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তাই পানি সংরক্ষণে নদী প্রবাহ ও খাল বিল ও জলাশয় ভরাট করে কোনো স্থাপনা বা প্রকল্প করা যাবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নদী-নালাগুলো মানুষের জীবনের মতো, এগুলোর প্রবাহ ঠিক রাখতে হবে। মানুষের হার্ট বন্ধ হলে যেমন মরে যায়, নদী-নালার প্রবাহ বন্ধ হলে দেশটাই মরে যাবে। শুধু পাড় বাধলেই হবে না, নদীর ড্রেজিংও করতে হবে। নদীমাতৃক দেশ আমাদের, তাই সরকার গঠনের পর থেকে নদীপথ সচল করার উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০১৮ সালে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে যাতে কোনো ধরনের অবহেলা না হয়, সে ব্যবস্থা আমরা করে যাচ্ছি। বিশেষ করে, অন্ধজনের বিলাও আলো, এ কাজটা করছি। সারা বাংলাদেশের মানুষের অন্ধত্ব দূর করতে কাজ করা হচ্ছে। অন্ধত্বের হার ৩৫ শতাংশ কমিয়ে আনা হয়েছে। অন্ধত্বের হার আরও কমানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার। এখন পর্যন্ত ২০ লাখ মানুষ কমিউনিটি আই সেন্টার থেকে সেবা নিয়েছেন। নৌকায় ভোট দিয়েছিল বলেই দেশের নানামুখী উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। সেজন্য দেশের জনগণকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

সরকারপ্রধান বলেন, করোনাকালে চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য আমাদের প্রতিটি নার্স-চিকিৎসককে আলাদা করে ভাতা দিতে হয়েছে। কারণ সেই সময়ে ভয়ে কেউই এগিয়ে আসতে চায়নি। এমনকি তাদের সুরক্ষায় পিপিইসহ বিভিন্ন ধরনের সুরক্ষা সামগ্রী কিনে দিতে হয়েছে। করোনার টিকা দেয়ার জন্য ভলান্টিয়ার তৈরি করতে হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশে লাখ লাখ মানুষ মারা গেছে, আল্লাহর রহমতে আমাদের তেমন ক্ষতি হয়নি।

শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে আমরা ১০ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছি। এসব কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রথম ৪ হাজার যখন চালু করি, তখন সেগুলো ৭০ ভাগের মতো সাফল্য অর্জন করে।কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। খালেদা সরকার ক্ষমতা এসেই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়। কারণ, এখানে যারা কাজ করবে, যারা সেবা নেবে, তারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবে, সুতরাং এগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।