Dhaka সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সেন্ট্রাল হাসপাতালের দুই চিকিৎসকের জামিন

সেন্ট্রাল হাসপাতালের দুই চিকিৎসকের জামিন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর গ্রিনরোডে অবস্থিত সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহা নামে দুই চিকিৎসকের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। ‘ভুল চিকিৎসায়’ মাহবুবা রহমান আঁখির নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন সোহাগের আদালতে তাদের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।

এর আগে গত ২১ জুন তাদের জামিন নামঞ্জুর হয়। এরপর সেই আদেশের বিরুদ্ধে মহানগর দায়রা জজ আদালতে ফৌজদারি বিবিধ মামলায় জামিন চান ডা. শাহজাদী। সেই আবেদনও গত ১২ জুলাই নামঞ্জুর হয়।

সেন্ট্রাল হসপিটালের অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার (গাইনি) অধীনে গত ৯ জুন ভর্তি হন মাহাবুবা রহমান আঁখি। কিন্তু সেদিন ডা. সংযুক্তা হাসপাতালেই ছিলেন না। পরে তার দুই সহযোগী ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহা আঁখির ডেলিভারি করানোর চেষ্টা করেন। সেটি হওয়ার পর আঁখির সন্তানের জটিলতা দেখা দেওয়ায় তাকে এনআইসিইউতে রাখা হয়। একই সঙ্গে আঁখির অবস্থার অবনতি হলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

গত ১০ জুন বিকেলে আঁখির সন্তানের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী ধানমন্ডি থানায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর একটি মামলা দায়ের করেন ইয়াকুব আলী। মামলায় ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা, ডা. মুনা সাহা, ডা. মিলি, সহকারী জমির, এহসান ও হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকেও আসামি করা হয়।

মামলা দায়েরের পর গত ১৫ জুন রাতে ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনা সাহাকে হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর গত ১৮ জুন দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মাহবুবা রহমান আঁখিও। গ্রেপ্তারের পর গত ১৫ জুন ডা. শাহজাদীসহ দুজন আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও কর্তৃপক্ষের প্রতারণায় মাহবুবা রহমান আঁখি মারা যান বলে অভিযোগ করেন তার স্বামী ইয়াকুব আলী সুমন। তিনি দাবি করেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় মারা গেছেন তাদের নবজাতক সন্তানও।

এ ঘটনায় ১৪ জুন ধানমন্ডি থানায় মোট ছয়জনের নাম উল্লেখসহ ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ অভিযোগ এনে মামলা করেন ইয়াকুব আলী। এরপরই ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনাকে গ্রেফতার করে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। মামলার অন্য আসামিরা হলেন ডা. মিলি, সেন্ট্রাল হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজ, জমির ও এহসান।

জানা গেছে, তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি। এমনকি তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক ছিল বলেও চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব সম্ভব বলে আশ্বস্ত করেছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহা।

প্রসব ব্যথা ওঠায় ৯ জুন রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তার অধীনে মাহবুবাকে ভর্তি করা হয়। তখন ডা. সংযুক্তা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সংযুক্তা সাহা আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সেন্ট্রাল হাসপাতালের দুই চিকিৎসকের জামিন

প্রকাশের সময় : ০৫:২৩:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর গ্রিনরোডে অবস্থিত সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহা নামে দুই চিকিৎসকের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। ‘ভুল চিকিৎসায়’ মাহবুবা রহমান আঁখির নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন সোহাগের আদালতে তাদের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।

এর আগে গত ২১ জুন তাদের জামিন নামঞ্জুর হয়। এরপর সেই আদেশের বিরুদ্ধে মহানগর দায়রা জজ আদালতে ফৌজদারি বিবিধ মামলায় জামিন চান ডা. শাহজাদী। সেই আবেদনও গত ১২ জুলাই নামঞ্জুর হয়।

সেন্ট্রাল হসপিটালের অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার (গাইনি) অধীনে গত ৯ জুন ভর্তি হন মাহাবুবা রহমান আঁখি। কিন্তু সেদিন ডা. সংযুক্তা হাসপাতালেই ছিলেন না। পরে তার দুই সহযোগী ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহা আঁখির ডেলিভারি করানোর চেষ্টা করেন। সেটি হওয়ার পর আঁখির সন্তানের জটিলতা দেখা দেওয়ায় তাকে এনআইসিইউতে রাখা হয়। একই সঙ্গে আঁখির অবস্থার অবনতি হলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

গত ১০ জুন বিকেলে আঁখির সন্তানের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী ধানমন্ডি থানায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর একটি মামলা দায়ের করেন ইয়াকুব আলী। মামলায় ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা, ডা. মুনা সাহা, ডা. মিলি, সহকারী জমির, এহসান ও হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকেও আসামি করা হয়।

মামলা দায়েরের পর গত ১৫ জুন রাতে ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনা সাহাকে হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর গত ১৮ জুন দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মাহবুবা রহমান আঁখিও। গ্রেপ্তারের পর গত ১৫ জুন ডা. শাহজাদীসহ দুজন আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও কর্তৃপক্ষের প্রতারণায় মাহবুবা রহমান আঁখি মারা যান বলে অভিযোগ করেন তার স্বামী ইয়াকুব আলী সুমন। তিনি দাবি করেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় মারা গেছেন তাদের নবজাতক সন্তানও।

এ ঘটনায় ১৪ জুন ধানমন্ডি থানায় মোট ছয়জনের নাম উল্লেখসহ ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ অভিযোগ এনে মামলা করেন ইয়াকুব আলী। এরপরই ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনাকে গ্রেফতার করে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। মামলার অন্য আসামিরা হলেন ডা. মিলি, সেন্ট্রাল হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজ, জমির ও এহসান।

জানা গেছে, তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি। এমনকি তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক ছিল বলেও চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব সম্ভব বলে আশ্বস্ত করেছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহা।

প্রসব ব্যথা ওঠায় ৯ জুন রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তার অধীনে মাহবুবাকে ভর্তি করা হয়। তখন ডা. সংযুক্তা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সংযুক্তা সাহা আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন।