নিজস্ব প্রতিবেদক :
নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার, তা করবো, ইনশাআল্লাহ্। এ দায়িত্ব যখন এসেছে, আমাদের সুষ্ঠুভাবে তা পালন করতে হবে। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) নতুন সিইসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে নির্বাচনটা একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ। অতীতেও ছিল, বর্তমানেও রয়েছে। গত তিনটা নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের প্রহসন আমরা দেখেছি। এই সময়ে নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি আরও অন্যরকম। বিশাল একটা গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন একটা অবস্থা দাঁড়িয়েছে। গত ১৫ বছর ধরে কত লোক প্রাণ দিলো, কত লোক আহত হলো, কত লোক নিহত হলো, কত লোক গুম হলো। কত মানুষের সম্পদ হারালো, স্বামী স্ত্রী হারাল, স্ত্রী স্বামী হারাল এবং ছেলে বাপকে হারাল, বাবা ছেলেকে হারাল।
তিনি আরো বলেন, শুধু জুলাই আগস্টে দেড় হাজার লোক শহীদ হলো। ২৫ থেকে ২৬ হাজার লোক আহত হলো। এদের রক্তের সঙ্গে ও ত্যাগের সঙ্গে বেইমানি করা যাবে না। কোনভাবেই করা যাবে না। আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করব একটা ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল ইলেকশন জাতিকে উপহার দেওয়ার জন্য।
নতুন সিইসি বলেন, যার ভোট সে দেবে, এটা সম্ভব অবশ্যই হবে। আমি তথ্য, জ্বালানি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলাম। এই তিন চ্যালেঞ্জিং মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলেছি, ইনশাল্লাহ এই চ্যালেঞ্জও আমি সামলে নেব। যত চ্যালেঞ্জই আসুক সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা নিয়ে ওই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ইনশাল্লাহ আমি জীবনে কোনোদিন ফেল করি নাই। আশা করি ইনশাল্লাহ ফেল করবো না। এই আত্মবিশ্বাস আমার আছে।
এদিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং আরও চার কমিশনার নিয়োগ দিয়ে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। রাষ্ট্রপতি এ নিয়োগ দিয়েছেন বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
নতুন সিইসি নিয়োগ পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীন। তার নেতৃত্বাধীন কমিশনের ওপর থাকবে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ভার।
অন্য চার কমিশনার হিসেবে থাকছেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, সাবেক যুগ্ম-সচিব তহমিদা আহমদ এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
দেশের চতুর্দশ সিইসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া নাসির উদ্দীন একসময় ছিলেন সচিব। অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি তাকে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব দেয়। এবার তাকে দেওয়া হলো নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।
সিইসির শূন্য পদ পূরণ করতে যাওয়া নাসির উদ্দীনের বাড়ি কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করে তিনি পেশাজীবন শুরু করেন শিক্ষক হিসেবে। পরে বিসিএস ৭৯ ব্যাচে তিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দেন।
নাসির উদ্দীন ২০০৪ সালে তথ্য সচিব, এরপর জ্বালানি সচিব, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।