Dhaka বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুপ্রিম কোর্টের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধি বিবেচনায় রয়েছে: আইনমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৫৬:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ২২৬ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মামলাজট কমানোর লক্ষ্যে বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নতুন আদালত প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টিও সরকারের বিবেচনায় রয়েছে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে আইনমন্ত্রী এ তথ্য জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

আনিসুল হক বলেন, দেশের মামলাজট কমানোর লক্ষ্যে বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নতুন আদালত প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সম্প্রতি সহায়ক জনবলসহ ৪৭টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, ৭টি সাইবার ট্রাইব্যুনাল, ৭টি মানব পাচার ট্রাইব্যুনাল, ৭টি সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, গাজীপুর ও রংপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ২টি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৩০টি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও ২২টি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৬২টি অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত ও ১১টি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত, পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলায় ১টি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও ১টি সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, গাজীপুর, রংপুর ও বরিশালে ৩টি মহানগর দায়রা জজ আদালত, ৩টি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত ও ৩টি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালত সৃজন করা হয়েছে।

এছাড়া, ১১টি যুগ্ম জেলা জজ, ৩৪টি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ ১৭টি অর্থঋণ আদালত, ২১৪টি সহকারী জজ আদালত, ১৩টি ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল, ৫৪টি ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল, চট্টগ্রাম জেলায় ৩টি অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, ১০টি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৭টি অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং মাদক সংক্রান্ত মামলা বিচারের জন্য স্বতন্ত্র ৩০টি অতিরিক্ত জেলা জজ, ২৪টি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ, ৬৬টি যুগ্ম জেলা জজ ও ৩২টি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালত সৃজনের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান আইনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বিচার কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিচারকের নতুন পদ সৃজনে বর্তমান সরকার কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের আন্তরিক উদ্যোগের কারণেই অধস্তন আদালতে বিভিন্ন পদমর্যাদার ৩৫৯টি বিচারকের পদ সৃজন করা হয়েছে। আদালতসমূহ যাতে সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারে সেজন্য ১৯৯৯টি সহায়ক পদ সৃজন করা হয়েছে। অপরদিকে ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে চারদলীয় বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে মাত্র ২৫টি বিচারকের পদ এবং ১৩৩টি সহায়ক জনবলের পদ সৃজন করা হয়। ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অধস্তন আদালতে মোট ১,৪২৬ জন বিচারক (সহকারী জজ) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চারদলীয় বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে অধস্তন আদালতে মাত্র ১৯০ জন বিচারক নিয়োগ করা হয়েছিল।

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ষোড়শ বিজেএস-এর মাধ্যমে ১০৪ জন বিচারক নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন সুপারিশ প্রদান করছে। আরও ১০০ জন বিচারক নিয়োগ পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে আনিসুল হক বলেন, বিচারপতি নিয়োগের জন্য সংবিধানে একটি আইন করার কথা বলা আছে। চলতি সংসদে বিচারপতি নিয়োগের জন্য আইন আনা হবে।

আইনমন্ত্রী বলেন, আপিল বিভাগে সাতজন বিচারপতি থাকতে হবে, সংবিধানে এমন কোনো বিধান নেই। আগে ১১জন বিচারপতিও ছিলেন। খুব শিগগির আপিল বিভাগে বিচারপতি নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নেবেন। একইভাবে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি বাড়ানোর বিষয়েও রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নেবেন বলে তিনি আশা করেন।

স্বতন্ত্র সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে আনিসুল হক বলেন, আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত বিষয়াদি আইন ও বিচার বিভাগের কর্মপরিধিভুক্ত। ফলে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস এবং সাব-রেজিস্ট্রার পদ আইন ও বিচার বিভাগের অধীন প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন অধিদপ্তরের আওতায় থাকাই যৌক্তিক। সাব-রেজিস্ট্রার পদ আইন ও বিচার বিভাগ থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত বিষয় আইন ও বিচার বিভাগের আওতাধীন থাকার ব্যাপারটি নিষ্পত্তিকৃত বিষয়।

তিনি বলেন, ভূমি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসকে স্ব-স্ব প্রশাসনিক এখতিয়ারের মধ্যে রেখে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের সঙ্গে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের একটি আন্তঃসংযোগ স্থাপন প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসকে স্ব-স্ব প্রশাসনিক এখতিয়ারের মধ্যে রেখে এরই মধ্যে আন্তঃসংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।

আনিসুল হক বলেন, ঢাকার উত্তরা, খিলগাঁও, গুলশান, সাভার, চট্টগ্রামের আনোয়ারা, পাহাড়তলী, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা, কুষ্টিয়ার কুমারখালী, টাঙ্গাইলের বাসাইল, নাগরপুর, রাজশাহীর চারঘাট, সিলেটের তাজপুর, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর, ময়মনসিংহের নান্দাইল এবং বরিশালের হিজলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ডিজিটাল পদ্ধতিতে দলিল রেজিস্ট্রি হচ্ছে। এসব অফিসের সঙ্গে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের আন্তঃসংযোগ স্থাপিত হয়েছে। ২০২১ সালের ১০ জুন থেকে ২০২৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওই ১৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে মোট এক লাখ ৪ হাজার ১১৬টি দলিল ই-রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আগে দলিল নিবন্ধনের পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে ল্যান্ড ট্রান্সফার (এলটি) নোটিশ পাঠাতে বিলম্ব হতো। ই-রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে দলিল নিবন্ধনের সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এলটি নোটিশ সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে পাঠানো হয়। এর মাধ্যমে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস দ্রুততম সময়ে নামজারি কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারেন।

অপরদিকে, এই আন্তঃসংযোগের মাধ্যমে সাব-রেজিস্ট্রাররা কোনো দলিল নিবন্ধনের আগে নামজারির সর্বশেষ অবস্থান দেখতে পান। ফলে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন ও জাল খতিয়ানের মাধ্যমে দলিল নিবন্ধন বন্ধ হয়েছে, রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা কমেছে। স্বল্প সময়ে ও কম খরচে মানসম্মত সেবা নিশ্চিত হয়েছে, যোগ করেন মন্ত্রী।

নাটোর-২ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচারকার্যে গতিশীলতা বাড়াতে নানাবিধ কার্যক্রম নিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ভবন নির্মাণসহ অন্য প্রয়োজনসমূহ নির্বাহের জন্য বিভিন্ন আইনজীবী সমিতি নিজেরাই নিজেদের আইনজীবী ভবন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে।

মন্ত্রী বলেন, নাটোর আইনজীবী সমিতিকে বহুতল ভবন নির্মাণকাজের জন্য ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এক কোটি টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে লাইব্রেরি ভবন নির্মাণের জন্য ২৫ লাখ টাকা এবং লিফট স্থাপনের জন্য ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

হাদির ওপর হামলা : ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও ভুয়া নম্বর প্লেট উদ্ধার

সুপ্রিম কোর্টের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধি বিবেচনায় রয়েছে: আইনমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৭:৫৬:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মামলাজট কমানোর লক্ষ্যে বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নতুন আদালত প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টিও সরকারের বিবেচনায় রয়েছে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে আইনমন্ত্রী এ তথ্য জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

আনিসুল হক বলেন, দেশের মামলাজট কমানোর লক্ষ্যে বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নতুন আদালত প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সম্প্রতি সহায়ক জনবলসহ ৪৭টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, ৭টি সাইবার ট্রাইব্যুনাল, ৭টি মানব পাচার ট্রাইব্যুনাল, ৭টি সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, গাজীপুর ও রংপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ২টি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৩০টি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও ২২টি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৬২টি অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত ও ১১টি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত, পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলায় ১টি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও ১টি সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, গাজীপুর, রংপুর ও বরিশালে ৩টি মহানগর দায়রা জজ আদালত, ৩টি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত ও ৩টি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালত সৃজন করা হয়েছে।

এছাড়া, ১১টি যুগ্ম জেলা জজ, ৩৪টি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ ১৭টি অর্থঋণ আদালত, ২১৪টি সহকারী জজ আদালত, ১৩টি ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল, ৫৪টি ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল, চট্টগ্রাম জেলায় ৩টি অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, ১০টি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৭টি অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং মাদক সংক্রান্ত মামলা বিচারের জন্য স্বতন্ত্র ৩০টি অতিরিক্ত জেলা জজ, ২৪টি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ, ৬৬টি যুগ্ম জেলা জজ ও ৩২টি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালত সৃজনের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান আইনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বিচার কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিচারকের নতুন পদ সৃজনে বর্তমান সরকার কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের আন্তরিক উদ্যোগের কারণেই অধস্তন আদালতে বিভিন্ন পদমর্যাদার ৩৫৯টি বিচারকের পদ সৃজন করা হয়েছে। আদালতসমূহ যাতে সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারে সেজন্য ১৯৯৯টি সহায়ক পদ সৃজন করা হয়েছে। অপরদিকে ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে চারদলীয় বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে মাত্র ২৫টি বিচারকের পদ এবং ১৩৩টি সহায়ক জনবলের পদ সৃজন করা হয়। ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অধস্তন আদালতে মোট ১,৪২৬ জন বিচারক (সহকারী জজ) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চারদলীয় বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে অধস্তন আদালতে মাত্র ১৯০ জন বিচারক নিয়োগ করা হয়েছিল।

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ষোড়শ বিজেএস-এর মাধ্যমে ১০৪ জন বিচারক নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন সুপারিশ প্রদান করছে। আরও ১০০ জন বিচারক নিয়োগ পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে আনিসুল হক বলেন, বিচারপতি নিয়োগের জন্য সংবিধানে একটি আইন করার কথা বলা আছে। চলতি সংসদে বিচারপতি নিয়োগের জন্য আইন আনা হবে।

আইনমন্ত্রী বলেন, আপিল বিভাগে সাতজন বিচারপতি থাকতে হবে, সংবিধানে এমন কোনো বিধান নেই। আগে ১১জন বিচারপতিও ছিলেন। খুব শিগগির আপিল বিভাগে বিচারপতি নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নেবেন। একইভাবে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি বাড়ানোর বিষয়েও রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নেবেন বলে তিনি আশা করেন।

স্বতন্ত্র সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে আনিসুল হক বলেন, আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত বিষয়াদি আইন ও বিচার বিভাগের কর্মপরিধিভুক্ত। ফলে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস এবং সাব-রেজিস্ট্রার পদ আইন ও বিচার বিভাগের অধীন প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন অধিদপ্তরের আওতায় থাকাই যৌক্তিক। সাব-রেজিস্ট্রার পদ আইন ও বিচার বিভাগ থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত বিষয় আইন ও বিচার বিভাগের আওতাধীন থাকার ব্যাপারটি নিষ্পত্তিকৃত বিষয়।

তিনি বলেন, ভূমি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসকে স্ব-স্ব প্রশাসনিক এখতিয়ারের মধ্যে রেখে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের সঙ্গে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের একটি আন্তঃসংযোগ স্থাপন প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসকে স্ব-স্ব প্রশাসনিক এখতিয়ারের মধ্যে রেখে এরই মধ্যে আন্তঃসংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।

আনিসুল হক বলেন, ঢাকার উত্তরা, খিলগাঁও, গুলশান, সাভার, চট্টগ্রামের আনোয়ারা, পাহাড়তলী, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা, কুষ্টিয়ার কুমারখালী, টাঙ্গাইলের বাসাইল, নাগরপুর, রাজশাহীর চারঘাট, সিলেটের তাজপুর, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর, ময়মনসিংহের নান্দাইল এবং বরিশালের হিজলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ডিজিটাল পদ্ধতিতে দলিল রেজিস্ট্রি হচ্ছে। এসব অফিসের সঙ্গে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের আন্তঃসংযোগ স্থাপিত হয়েছে। ২০২১ সালের ১০ জুন থেকে ২০২৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওই ১৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে মোট এক লাখ ৪ হাজার ১১৬টি দলিল ই-রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আগে দলিল নিবন্ধনের পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে ল্যান্ড ট্রান্সফার (এলটি) নোটিশ পাঠাতে বিলম্ব হতো। ই-রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে দলিল নিবন্ধনের সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এলটি নোটিশ সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে পাঠানো হয়। এর মাধ্যমে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস দ্রুততম সময়ে নামজারি কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারেন।

অপরদিকে, এই আন্তঃসংযোগের মাধ্যমে সাব-রেজিস্ট্রাররা কোনো দলিল নিবন্ধনের আগে নামজারির সর্বশেষ অবস্থান দেখতে পান। ফলে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন ও জাল খতিয়ানের মাধ্যমে দলিল নিবন্ধন বন্ধ হয়েছে, রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা কমেছে। স্বল্প সময়ে ও কম খরচে মানসম্মত সেবা নিশ্চিত হয়েছে, যোগ করেন মন্ত্রী।

নাটোর-২ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচারকার্যে গতিশীলতা বাড়াতে নানাবিধ কার্যক্রম নিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ভবন নির্মাণসহ অন্য প্রয়োজনসমূহ নির্বাহের জন্য বিভিন্ন আইনজীবী সমিতি নিজেরাই নিজেদের আইনজীবী ভবন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে।

মন্ত্রী বলেন, নাটোর আইনজীবী সমিতিকে বহুতল ভবন নির্মাণকাজের জন্য ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এক কোটি টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে লাইব্রেরি ভবন নির্মাণের জন্য ২৫ লাখ টাকা এবং লিফট স্থাপনের জন্য ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।