নিজস্ব প্রতিবেদক :
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে নাইন্দা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের ফলে ফের ধসে গেছে সদরপুর সেতুর সংযোগ সড়ক। এতে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ঝুঁকি নিয়ে এই সড়কে চলাচল করছে যানবাহন। জেলার ৯ উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র পথ সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক। এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে সারাদেশের সঙ্গে সড়কপথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে সুনামগঞ্জ জেলা। শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকবে উপজেলার পূর্বাঞ্চলের চার ইউনিয়নের।
বুধবার (২২ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর অ্যাপ্রোচের ধস ক্রমশই বাড়ছে। সদরপুর সেতুর লাগোয়া পূর্ব পাড়ের উত্তরাংশের কোণার মাটি নিচের দিকে দেবে গেছে। এর আগে একাধিকবার একই জায়গা দেবে যাওয়ার কারণে পাথর ও বালির বস্তাকে বিটুমিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। সেতুর উত্তর-পূর্ব পাড়ের প্রতিরক্ষা দেয়ালকে পাশে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে দুই-তিন ধাপে টানা দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তবু যেন দেয়ালটি পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এছাড়া নাইন্দা নদীর উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ে ভাঙন ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। ভাঙনের কারণে দুই পাড়ের ২০টিরও বেশি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়েছে, আশ্রয় নিয়েছে অন্যত্র। এর আগে সেতুর পশ্চিম পাড়ের অংশ ভেঙে যাওয়ায় পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন ছিল যোগাযোগ ব্যবস্থা। সড়ক ও জনপথের রাতভর চেষ্টায় বেইলি সেতু বসিয়ে স্বাভাবিক করা হয়েছিল যান চলাচল। এ অংশও যেকোনো সময় ভেঙে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। সেতুটি পাড় হওয়ার সময় যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা ভয়ে থাকেন- কখন সেতু ধসে নিচে পড়ে যায় গাড়ি!
স্থানীয়রা জানান, একাধিকবার এই সেতু ভেঙে রাস্তা বন্ধ হয়েছে। এতে হাজার হাজার মানুষের প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সেতুর নিচে তাকালেই ভয় করে। জোড়াতালি দিয়ে সংযোগ সড়কের ভাঙন আটকানো যাবে না। দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণ করা হলে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
সিলেট থেকে সুনামগঞ্জে যাত্রী নিয়ে আসা সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক কবির উদ্দিন বলেন, এ সড়কে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়। সদরপুর সেতুর কাছাকাছি এলেই মনে ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। সেতুতে গাড়ি নিয়ে উঠলে এটি কাঁপতে শুরু করে। বারবার এই সেতু ভাঙে আর মেরামত করা হয়। এভাবে জোড়াতালি দিয়ে চলছে না আর।
এ সেতু দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা জানান, এ সড়কে প্রতিদিন যাতায়াত করি। সদরপুরের সেতুর কাছাকাছি গেলে মনে ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। সেতুর দিকে তাকালেই ভয় করে। যেভাবে নদী ভাঙছে সেতুটি অচিরেই নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। সেতুতে যানবাহন নিয়ে উঠলে কাঁপতে শুরু করে। বার বার এই সেতু জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করা হয়। নতুন করে আরেকটি সেতু নির্মাণ করা দরকার।
সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথের বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামানিক বলেন, এই রাস্তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ সেতু সংস্কার করা হচ্ছে। সেতুর দু’পাশে সংস্কারের জন্য ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এর দরপত্রের প্রক্রিয়া চলমান আছে। এছাড়া এই সেতুর পাশে ১৪০ মিটার দৈর্ঘের সেতুর দরপত্রের বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন আছে। একসঙ্গে দুইভাবেই এগোচ্ছি আমরা। এই পথ চালু রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা আছে। দ্রুত সেতুর সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা হবে। দুশ্চিন্তার কিছু নেই।