সাভার উপজেলা প্রতিনিধি :
প্রতিযোগিতা করে চলতে গিয়ে গত বুধবার ঢাকার সাভারে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অ্যাম্বুলেন্স ও দুটি বাস। এতে নিহত হয় এক শিশুসহ একই পরিবারের চারজন। এই ঘটনায় শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সাভার হাইওয়ে থানা-পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত অ্যাম্বুলেন্সের ও একটি বাসের চালককে গ্রেপ্তার করেছে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- অ্যাম্বুলেন্সের চালক জাহিদ হাসান (২১) ও শ্যামলী পরিবহণের বাসচালক জহিরুল ইসলাম (৪৪)। তাদের মধ্যে জাহিদ হাসানের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর থানার সুতি লাঙ্গলজোরা গ্রামে। অন্যদিকে, বাসচালক জহিরুল ইসলামের বাড়ি দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ থানার চাওলিয়া গ্রামে।
হাইওয়ে থানা-পুলিশ জানায়, জহিরুল ইসলামকে শুক্রবার রাতে ঢাকার গাবতলী থেকে আর জাহিদ হাসানকে গাজীপুরের কোনাবাড়ী থেকে আটক করা হয়। তাঁদের আজ শনিবার সাভার থানায় দায়ের করা দুর্ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। দুর্ঘটনার দিন হাইওয়ে থানার পক্ষ থেকে সাভার থানায় ওই মামলা দায়ের করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া দুই চালকের বরাত দিয়ে সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম বলেন, অ্যাম্বুলেন্স আর দুটি বাস আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় পাল্লাপাল্লি করে চলছিল। ঘটনাস্থল ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সাভারের রাজফুলবাড়িয়া এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি বাস দুটিকে অতিক্রম করার সময় সামনে থাকা ঝুমুর পরিবহনের বাসের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সড়ক বিভাজনের সঙ্গে আটকে যায়। এতে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে মুহূর্তের মধ্যে অ্যাম্বুলেন্সে আগুন ধরে যায়। এর পরপরই অ্যাম্বুলেন্সের পেছনে থাকা ঝুমুর পরিবহনের বাসটি অ্যাম্বুলেন্সের পেছনে গিয়ে ধাক্কা মারে। আর শ্যামলী পরিবহনের বাসটি ধাক্কা মারে ঝুমুর পরিবহনের পেছনে। এর পরপরই অ্যাম্বুলেন্স থেকে ওই দুটি বাসেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
ওসি সওগাতুল আলম আরও বলেন, দুর্ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সে আটকে পড়া চার যাত্রী অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেলেও অ্যাম্বুলেন্সের চালকসহ দুই বাসের চালক ও তাঁদের সহকারীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
অসুস্থ ছেলে ফোয়াদ সিদ্দিকীকে (১২) নিয়ে গত বুধবার ঢাকার একটি হাসপাতালে যাচ্ছিলেন টাঙ্গাইলের গোপালপুরের ফারুক-মহোসিনা দম্পতি। এ সময় পথিমধ্যে ফোয়াদসহ ফারুক ও মহোসিনা এবং ফুয়াদের খালা মাহফুজা আক্তার সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।
ফারুক হোসেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ভাবন দত্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি টাঙ্গাইলের গোপালপুরে।