Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকারি সংস্কার কাজে বাধা দিলে জনগণই তার বিকল্প খুঁজে নেবে : হাসনাত আবদুল্লাহ

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

সরকারি সংস্কার কাজে বাধা দিলে জনগণই তার বিকল্প খুঁজে নেবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

সোমবার (২৬ মে) সকালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় সাংগঠনিক সফর শুরুর আগে নগরীর ষোলশহরে বিপ্লব উদ্যানের সামনে জমায়েতে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকারকে জিম্মি করলে পরিস্থিতি ভালো হবে না। সংস্কার কার্যক্রমে বাধা দিলে কঠোর হস্তে প্রতিরোধ করা হবে।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এখন সচিবালয়েও দেখছি আন্দোলন হচ্ছে, বিক্ষোভ হচ্ছে। এনবিআর সংস্কারে বাধা দেওয়া হচ্ছে। যখন ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান চলছিল, তখন আপনারা শেখ হাসিনাকে সমর্থন জানিয়ে কালো ব্যাজ ধারণ করে অফিস করেছেন। এখন আপনারা হুমকি দেন, অফিস চলতে দেবেন না, অফিস বন্ধ করে রাখবেন!

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট আপনাদের এমন কোনও হিম্মত ছিল না যে, শেখ হাসিনার চোখে আঙুল দিয়ে তার ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন কিংবা কেউ পদত্যাগ করেননি। আপনারা একজন কর্মকর্তা, কর্মচারী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী আমাদের অসহায় দুর্ভোগের রেজিমেন্ট হিসেবে যদি কিছু পরিচিত হয়, সেটা হচ্ছে সচিবালয়। আর দুর্নীতির আতরঘর হিসেবে পরিচিত হয়, সেটা এনবিআর।

সচিবালয়ে আন্দোলনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জনগণের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এ সরকারকে যদি আপনারা হুমকি দেন, ধমকি দেন, সরকারের সংস্কার কার্যক্রমে বাধা দেবেন, তাহলে মনে রাখবেন এই জনগণ আপনাদের বিকল্প খুঁজে নেবে। পাঁচ আগস্টের আগ পর্যন্ত সচিবালয়ের কোনো সচিব, কোনো কর্মকর্তা, কোনো কর্মচারী কি পদত্যাগ করেছিল? রাস্তার মধ্যে সন্তানদের, দেশের সাধারণ নাগরিকদের গুলি করে যখন হত্যা করছিল, একজন সচিব, একজন আমলা, একজন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কি পদত্যাগ করেছিল?

তিনি বলেন, ‘আজ যখন সরকার সংস্কার কার্যক্রম শুরু করছে, সেখানে তারা সহযোগিতা না করে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমাদের জীবন থাকতে, স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, হাসনাত আবদুল্লাহ বেঁচে থাকতে, দেশে লাখ লাখ হাসনাত আবদুল্লাহ রয়েছে, তারা বেঁচে থাকতে সরকারের সংস্কার কার্যক্রমে যদি বাধা আসে, সচিবালয় থেকে যদি বাধা আসে, তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর হস্তে সেটা প্রতিরোধ করা হবে। আপনারা এটা ভাববেন না যে, আপনাদের বিকল্প নেই। জনগণ বিকল্প খুঁজে নেবে।’

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, সুতরাং সরকারকে সহযোগিতা করুন, সংস্কার কার্যক্রমকে সহযোগিতা করুন। আপনাদের যদি সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে কোনো পর্যালোচনা থাকে, কোনো মন্তব্য থাকে, তাহলে আলোচনার মাধ্যমে সেটা সমাধান করুন। কিন্তু সরকারকে যদি জিম্মি করেন, সেটার পরিস্থিতি ভালো হবে না। আপনাদের তো কোনো হিম্মত ছিল না ফ্যাসিবাদী সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার।

উল্লেখ্য, ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ার প্রতিবাদে টানা তৃতীয়দিনের মত বিক্ষোভ-মিছিল-সমাবেশ করছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ।

আজ সোমবার সকাল ১০টায় নেতারা নিজেরা মিটিং করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করেন। এ সময় চাকরি অধ্যাদেশ প্রত্যাহার না হলে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেন কর্মচারীরা। পরে সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি বাদিউল কবীর ও মহাসচিব নিজাম উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি পুরো সচিবালয় প্রদক্ষিণ করে।

এরপর বেলা সোয়া ১১টার দিকে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের অন্য অংশ। এই অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন মো. নূরুল ইসলাম এবং মুজাহিদুল ইসলাম।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

সরকারি সংস্কার কাজে বাধা দিলে জনগণই তার বিকল্প খুঁজে নেবে : হাসনাত আবদুল্লাহ

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৮:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

সরকারি সংস্কার কাজে বাধা দিলে জনগণই তার বিকল্প খুঁজে নেবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

সোমবার (২৬ মে) সকালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় সাংগঠনিক সফর শুরুর আগে নগরীর ষোলশহরে বিপ্লব উদ্যানের সামনে জমায়েতে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকারকে জিম্মি করলে পরিস্থিতি ভালো হবে না। সংস্কার কার্যক্রমে বাধা দিলে কঠোর হস্তে প্রতিরোধ করা হবে।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এখন সচিবালয়েও দেখছি আন্দোলন হচ্ছে, বিক্ষোভ হচ্ছে। এনবিআর সংস্কারে বাধা দেওয়া হচ্ছে। যখন ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান চলছিল, তখন আপনারা শেখ হাসিনাকে সমর্থন জানিয়ে কালো ব্যাজ ধারণ করে অফিস করেছেন। এখন আপনারা হুমকি দেন, অফিস চলতে দেবেন না, অফিস বন্ধ করে রাখবেন!

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট আপনাদের এমন কোনও হিম্মত ছিল না যে, শেখ হাসিনার চোখে আঙুল দিয়ে তার ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন কিংবা কেউ পদত্যাগ করেননি। আপনারা একজন কর্মকর্তা, কর্মচারী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী আমাদের অসহায় দুর্ভোগের রেজিমেন্ট হিসেবে যদি কিছু পরিচিত হয়, সেটা হচ্ছে সচিবালয়। আর দুর্নীতির আতরঘর হিসেবে পরিচিত হয়, সেটা এনবিআর।

সচিবালয়ে আন্দোলনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জনগণের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এ সরকারকে যদি আপনারা হুমকি দেন, ধমকি দেন, সরকারের সংস্কার কার্যক্রমে বাধা দেবেন, তাহলে মনে রাখবেন এই জনগণ আপনাদের বিকল্প খুঁজে নেবে। পাঁচ আগস্টের আগ পর্যন্ত সচিবালয়ের কোনো সচিব, কোনো কর্মকর্তা, কোনো কর্মচারী কি পদত্যাগ করেছিল? রাস্তার মধ্যে সন্তানদের, দেশের সাধারণ নাগরিকদের গুলি করে যখন হত্যা করছিল, একজন সচিব, একজন আমলা, একজন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কি পদত্যাগ করেছিল?

তিনি বলেন, ‘আজ যখন সরকার সংস্কার কার্যক্রম শুরু করছে, সেখানে তারা সহযোগিতা না করে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমাদের জীবন থাকতে, স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, হাসনাত আবদুল্লাহ বেঁচে থাকতে, দেশে লাখ লাখ হাসনাত আবদুল্লাহ রয়েছে, তারা বেঁচে থাকতে সরকারের সংস্কার কার্যক্রমে যদি বাধা আসে, সচিবালয় থেকে যদি বাধা আসে, তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর হস্তে সেটা প্রতিরোধ করা হবে। আপনারা এটা ভাববেন না যে, আপনাদের বিকল্প নেই। জনগণ বিকল্প খুঁজে নেবে।’

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, সুতরাং সরকারকে সহযোগিতা করুন, সংস্কার কার্যক্রমকে সহযোগিতা করুন। আপনাদের যদি সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে কোনো পর্যালোচনা থাকে, কোনো মন্তব্য থাকে, তাহলে আলোচনার মাধ্যমে সেটা সমাধান করুন। কিন্তু সরকারকে যদি জিম্মি করেন, সেটার পরিস্থিতি ভালো হবে না। আপনাদের তো কোনো হিম্মত ছিল না ফ্যাসিবাদী সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার।

উল্লেখ্য, ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ার প্রতিবাদে টানা তৃতীয়দিনের মত বিক্ষোভ-মিছিল-সমাবেশ করছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ।

আজ সোমবার সকাল ১০টায় নেতারা নিজেরা মিটিং করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করেন। এ সময় চাকরি অধ্যাদেশ প্রত্যাহার না হলে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেন কর্মচারীরা। পরে সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি বাদিউল কবীর ও মহাসচিব নিজাম উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি পুরো সচিবালয় প্রদক্ষিণ করে।

এরপর বেলা সোয়া ১১টার দিকে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের অন্য অংশ। এই অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন মো. নূরুল ইসলাম এবং মুজাহিদুল ইসলাম।