Dhaka রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকারি চাকরিজীবীদের কেউ দুর্নীতি করলে ছাড় পাবে না : আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারি চাকরিজীবী কেউ দুর্নীতি করলে ছাড় পাবে না বলে মন্তব্য করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, যে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।

রোববার (৯ জুন) দুপুরে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের বিচারকদের জন্য আয়োজিত ১৬তম ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) স্বাধীনভাবে কাজ করছে জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, সরকারি চাকরিতে ঢোকার সময় সম্পদের হিসাব দেওয়ার নিয়ম আছে। সরকারি চাকরিজীবীদের কেউ দুর্নীতি করলে ছাড় পাবে না। দুদক স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, যে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।

আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছিল, তারাই আজকে দেশের উন্নয়ন সহ্য করতে পারছে না। তাদের মানসিক অবস্থা দেখা উচিত।

খেলাপি ঋণের লাগাম টানতে অর্থঋণ আদালতে বিচারাধীন মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ঢাকায় বিদ্যমান ৪টি অর্থঋণ আদালতের পাশাপাশি আরও ৩টি অর্থঋণ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হবে। এছাড়া চট্টগ্রামে ২টি অর্থঋণ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রয়োজনে আদালত সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।

উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সরকার সমৃদ্ধ অর্থনীতির শত্রু হিসেবে খ্যাত খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে চায় উল্লেখ্য করে আইনমন্ত্রী বলেন, তাই ঋণ খেলাপি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি আরও কার্যকরভাবে অনুসরণের পরামর্শ দিয়ে বিচারকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এ মামলার শুনানি পর্যায়ে বিবাদীর অযৌক্তিক কালক্ষেপণ রোধ করতে হবে।

তিনি বলেন, অর্থঋণ আদালত আইনের ৪৬ (৫) ধারা মতে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আদালত, চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (আর্থিক প্রতিষ্ঠান/ব্যাংকার) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিয়মিত সমন্বয় সাধন এবং বাদীপক্ষ/ডিক্রীদার পক্ষের সময়মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। এছাড়া ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ মঞ্জুরির বিষয়ে জবাবদিহিতা ও ঋণ আদায়ে বাদীপক্ষের দায়-দায়িত্ব নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

আনিসুল হক বলেন, বিগত প্রায় সাড়ে ১৫ বছরে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বাস্তবভিত্তিক ও বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলেই আজ বিচার বিভাগের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিচার বিভাগ অনেকটাই আধুনিক ও গতিশীল হয়েছে। বিচার বিভাগের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণে আরও বেশকিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ হাতে নেওয়া হয়েছে। যার অন্যতম হলো মাদারীপুরের শিবচরে ৩৭.২৭ একর জমির ওপর একটি বিশ্বমানের ন্যাশনাল জুডিসিয়াল একাডেমি প্রতিষ্ঠা। এই একাডেমি প্রতিষ্ঠার জন্য আগামী ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে ১৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। আশা করছি, এই টাকা দিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ শেষ করে আগামী অর্থবছরে জুডিসিয়াল অ্যাকাডেমির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা সম্ভব হবে। এছাড়া বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উদ্যোগে কক্সবাজারে একটি বিশ্বমানের রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই ৩ দশমিক ৩৪ একর ভূমি বরাদ্দ দিয়েছেন।

বিচার বিভাগের বাজেট বরাদ্দের বিষয়ে অন্যান্য সরকারের সঙ্গে তুলনা করে আনিসুল হক বলেন, অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, বিএনপি-জামায়াত সরকার এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আট বছরে আইন ও বিচার বিভাগের জন্য ব্যয় করেছিল এক হাজার ৬শ ৫০ কোটি টাকা। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কেবল ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে আইন ও বিচার বিভাগের জন্য বরাদ্দ রেখেছে দুই হাজার ২২ কোটি টাকা। এর বাইরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জন্যও বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৪৮ কোটি টাকা।

বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক শেখ আশফাকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বিশেষ অতিথির হিসেবে বক্তব্য দেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বাণিজ্য ঘাটতি কমানো গেলে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরো কমাবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা

সরকারি চাকরিজীবীদের কেউ দুর্নীতি করলে ছাড় পাবে না : আইনমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৪:২৮:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারি চাকরিজীবী কেউ দুর্নীতি করলে ছাড় পাবে না বলে মন্তব্য করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, যে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।

রোববার (৯ জুন) দুপুরে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের বিচারকদের জন্য আয়োজিত ১৬তম ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) স্বাধীনভাবে কাজ করছে জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, সরকারি চাকরিতে ঢোকার সময় সম্পদের হিসাব দেওয়ার নিয়ম আছে। সরকারি চাকরিজীবীদের কেউ দুর্নীতি করলে ছাড় পাবে না। দুদক স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, যে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।

আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছিল, তারাই আজকে দেশের উন্নয়ন সহ্য করতে পারছে না। তাদের মানসিক অবস্থা দেখা উচিত।

খেলাপি ঋণের লাগাম টানতে অর্থঋণ আদালতে বিচারাধীন মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ঢাকায় বিদ্যমান ৪টি অর্থঋণ আদালতের পাশাপাশি আরও ৩টি অর্থঋণ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হবে। এছাড়া চট্টগ্রামে ২টি অর্থঋণ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রয়োজনে আদালত সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।

উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সরকার সমৃদ্ধ অর্থনীতির শত্রু হিসেবে খ্যাত খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে চায় উল্লেখ্য করে আইনমন্ত্রী বলেন, তাই ঋণ খেলাপি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি আরও কার্যকরভাবে অনুসরণের পরামর্শ দিয়ে বিচারকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এ মামলার শুনানি পর্যায়ে বিবাদীর অযৌক্তিক কালক্ষেপণ রোধ করতে হবে।

তিনি বলেন, অর্থঋণ আদালত আইনের ৪৬ (৫) ধারা মতে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আদালত, চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (আর্থিক প্রতিষ্ঠান/ব্যাংকার) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিয়মিত সমন্বয় সাধন এবং বাদীপক্ষ/ডিক্রীদার পক্ষের সময়মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। এছাড়া ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ মঞ্জুরির বিষয়ে জবাবদিহিতা ও ঋণ আদায়ে বাদীপক্ষের দায়-দায়িত্ব নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

আনিসুল হক বলেন, বিগত প্রায় সাড়ে ১৫ বছরে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বাস্তবভিত্তিক ও বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলেই আজ বিচার বিভাগের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিচার বিভাগ অনেকটাই আধুনিক ও গতিশীল হয়েছে। বিচার বিভাগের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণে আরও বেশকিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ হাতে নেওয়া হয়েছে। যার অন্যতম হলো মাদারীপুরের শিবচরে ৩৭.২৭ একর জমির ওপর একটি বিশ্বমানের ন্যাশনাল জুডিসিয়াল একাডেমি প্রতিষ্ঠা। এই একাডেমি প্রতিষ্ঠার জন্য আগামী ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে ১৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। আশা করছি, এই টাকা দিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ শেষ করে আগামী অর্থবছরে জুডিসিয়াল অ্যাকাডেমির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা সম্ভব হবে। এছাড়া বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উদ্যোগে কক্সবাজারে একটি বিশ্বমানের রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই ৩ দশমিক ৩৪ একর ভূমি বরাদ্দ দিয়েছেন।

বিচার বিভাগের বাজেট বরাদ্দের বিষয়ে অন্যান্য সরকারের সঙ্গে তুলনা করে আনিসুল হক বলেন, অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, বিএনপি-জামায়াত সরকার এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আট বছরে আইন ও বিচার বিভাগের জন্য ব্যয় করেছিল এক হাজার ৬শ ৫০ কোটি টাকা। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কেবল ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে আইন ও বিচার বিভাগের জন্য বরাদ্দ রেখেছে দুই হাজার ২২ কোটি টাকা। এর বাইরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জন্যও বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৪৮ কোটি টাকা।

বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক শেখ আশফাকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বিশেষ অতিথির হিসেবে বক্তব্য দেন।