Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকারকে পরাজিত না করে কেউ ক্ষ্যান্ত হবে না : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সরকারকে পরাজিত না করে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে কেউ ক্ষ্যান্ত হবে না। সাজা দিয়ে আমাদের রুখে দেয়া যাবে না।

সোমবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দুুপুর ২টায় এ সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১১টা থেকেই মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন কর্মীরা। মির্জা ফখরুল যখন মঞ্চে আসেন তখন বিজয়নগর থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত লোকারণ্য হয়ে পড়ে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর সুযোগ নেই বলে প্রধানমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন, তা দেশের জনগণ বুঝে গেছে। জনগণ এত বোকা নয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ পরিষ্কার করে বলতে চায়, খালেদা জিয়ার কিছু হলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। খালেদা জিয়ার অপরাধ তিনি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন। বিরোধীদলের আন্দোলন মেনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিয়েছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার দেশের বাইরে সুচিকিৎসার জন্যে তার পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করেছিলেন। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার হাতে কিছু নেই! আদালতের কথা বলেন। বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে এ দেশের মানুষের এই ফ্যাসিস্টদের কাউকে ছাড়বে না। এই আওয়ামী লীগ এখন আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়, তারা ফ্যাসিস্ট। এরা সম্পূর্ণভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। এরা আর মানুষের দল নয়।

তিনি বলেন, সাজা দিয়ে আমাদের রুখে দেয়া যাবে না। একেকটা সাজায় একেকটা নেতা বের হয়ে আসছে। বিএনপি একটি ফিনিক্স পাখির মতো। এই সরকারকে পরাজিত না করে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে কেউ ক্ষান্ত হবে না।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা নিয়ে তার পরিবার সরকারের কাছে একাধিকবার আবেদনই করেননি, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথাও বলেছেন। দেশের মানুষ এত বোকা নয়। তারা বুঝেছে, তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী খালেদা জিয়া। তাকে যদি আটক রাখা যায় তাহলে তারা (সরকার) শাসন টিকিয়ে রাখতে পারবে। আজ তাই তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে চায়। দেশের মানুষ জানিয়ে দিতে চায়, খালেদার কিছু হলে জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজ সকালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত বোর্ডের চিকিৎসকরা পরিষ্কার করে বলেছেন, দেশে যা যা করার দরকার সবই করা হয়েছে, এখন তাকে সুস্থ করতে হলে বিদেশে না নেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া দেশে সহনশীল রাজনীতি সৃষ্টি করেছিলেন। সংসদীয় গণতন্ত্র কায়েম করেছেন। আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৬ দিন হরতাল দিয়েছে। আজ তারা তা মানছেন না। আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ জনবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়েছে।

ফখরুল বলেন, আজ মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায় দিয়ে বিএনপির ১৫ নেতাকে চার বছর করে সাজা দিয়েছে। গতকাল আরও ১৫ জন সাবেক ছাত্রনেতাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তারা মনে করছে এদের আটক রাখলে বিএনপিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। প্রতিটি সাজার বিরুদ্ধে হাজার হাজার কর্মী সৃষ্টি হচ্ছে। বিএনপি হচ্ছে ফিনিক্স পাখির মতো। অনেক সিনিয়র নেতাদের সাজা দিয়ে আটক রেখেছে। এগুলো করে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে পারবেন না।

তিনি বলেন, এবার ক্ষান্ত হোন। আর অত্যাচার করবেন না। আপনারা বুঝতে পারছেন না আপনাদের জন্য কী দাঁড়িয়ে আছে। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। আইয়ুব-ইয়াহিয়াও পারেনি, এরশাদ পারেনি। আপনিও পারবেন না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গতকাল প্রধান বিচারপতি বলেছেন, রাজনীতির বাইরে গিয়ে বিচার করবেন। রাজনীতির মধ্যে থাকা যাবে না। আজও রাজনৈতিক কারণে ১৫ জনকে ফরমায়েশি রায় দিয়ে নেতাদের জেল দেওয়া হয়েছে। সরকার আদালতকে দলীয়ভাবে ব্যবহার করছে।’

‘সব কিছু বন্ধ করে বসে থাকবো’ প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, কথা শুনলে মনে হয় আমরা একটা রাজতন্ত্রে বাস করেছি। এই দেশটার মালিক মনে হয় বর্তমান সরকারপ্রধান।

ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে আমিনুল হক ও লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, আজম খান, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক খান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

সরকারকে পরাজিত না করে কেউ ক্ষ্যান্ত হবে না : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৮:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সরকারকে পরাজিত না করে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে কেউ ক্ষ্যান্ত হবে না। সাজা দিয়ে আমাদের রুখে দেয়া যাবে না।

সোমবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দুুপুর ২টায় এ সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১১টা থেকেই মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন কর্মীরা। মির্জা ফখরুল যখন মঞ্চে আসেন তখন বিজয়নগর থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত লোকারণ্য হয়ে পড়ে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর সুযোগ নেই বলে প্রধানমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন, তা দেশের জনগণ বুঝে গেছে। জনগণ এত বোকা নয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ পরিষ্কার করে বলতে চায়, খালেদা জিয়ার কিছু হলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। খালেদা জিয়ার অপরাধ তিনি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন। বিরোধীদলের আন্দোলন মেনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিয়েছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার দেশের বাইরে সুচিকিৎসার জন্যে তার পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করেছিলেন। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার হাতে কিছু নেই! আদালতের কথা বলেন। বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে এ দেশের মানুষের এই ফ্যাসিস্টদের কাউকে ছাড়বে না। এই আওয়ামী লীগ এখন আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়, তারা ফ্যাসিস্ট। এরা সম্পূর্ণভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। এরা আর মানুষের দল নয়।

তিনি বলেন, সাজা দিয়ে আমাদের রুখে দেয়া যাবে না। একেকটা সাজায় একেকটা নেতা বের হয়ে আসছে। বিএনপি একটি ফিনিক্স পাখির মতো। এই সরকারকে পরাজিত না করে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে কেউ ক্ষান্ত হবে না।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা নিয়ে তার পরিবার সরকারের কাছে একাধিকবার আবেদনই করেননি, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথাও বলেছেন। দেশের মানুষ এত বোকা নয়। তারা বুঝেছে, তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী খালেদা জিয়া। তাকে যদি আটক রাখা যায় তাহলে তারা (সরকার) শাসন টিকিয়ে রাখতে পারবে। আজ তাই তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে চায়। দেশের মানুষ জানিয়ে দিতে চায়, খালেদার কিছু হলে জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজ সকালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত বোর্ডের চিকিৎসকরা পরিষ্কার করে বলেছেন, দেশে যা যা করার দরকার সবই করা হয়েছে, এখন তাকে সুস্থ করতে হলে বিদেশে না নেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া দেশে সহনশীল রাজনীতি সৃষ্টি করেছিলেন। সংসদীয় গণতন্ত্র কায়েম করেছেন। আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৬ দিন হরতাল দিয়েছে। আজ তারা তা মানছেন না। আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ জনবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়েছে।

ফখরুল বলেন, আজ মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায় দিয়ে বিএনপির ১৫ নেতাকে চার বছর করে সাজা দিয়েছে। গতকাল আরও ১৫ জন সাবেক ছাত্রনেতাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তারা মনে করছে এদের আটক রাখলে বিএনপিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। প্রতিটি সাজার বিরুদ্ধে হাজার হাজার কর্মী সৃষ্টি হচ্ছে। বিএনপি হচ্ছে ফিনিক্স পাখির মতো। অনেক সিনিয়র নেতাদের সাজা দিয়ে আটক রেখেছে। এগুলো করে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে পারবেন না।

তিনি বলেন, এবার ক্ষান্ত হোন। আর অত্যাচার করবেন না। আপনারা বুঝতে পারছেন না আপনাদের জন্য কী দাঁড়িয়ে আছে। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। আইয়ুব-ইয়াহিয়াও পারেনি, এরশাদ পারেনি। আপনিও পারবেন না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গতকাল প্রধান বিচারপতি বলেছেন, রাজনীতির বাইরে গিয়ে বিচার করবেন। রাজনীতির মধ্যে থাকা যাবে না। আজও রাজনৈতিক কারণে ১৫ জনকে ফরমায়েশি রায় দিয়ে নেতাদের জেল দেওয়া হয়েছে। সরকার আদালতকে দলীয়ভাবে ব্যবহার করছে।’

‘সব কিছু বন্ধ করে বসে থাকবো’ প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, কথা শুনলে মনে হয় আমরা একটা রাজতন্ত্রে বাস করেছি। এই দেশটার মালিক মনে হয় বর্তমান সরকারপ্রধান।

ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে আমিনুল হক ও লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, আজম খান, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক খান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান প্রমুখ।